আবারো জ্বলছে টিউনিসিয়া
১১ জানুয়ারি ২০১৮বুধবার পর্যন্ত ২০০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ বিক্ষোভে ৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন৷
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ সরকারের কঠিন সব সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ চলছে৷
আরব বসন্তের সূতিকাগার টিউনিসিয়ায় গেলো সপ্তাহে শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভকারীরা মিছিল শুরু করেন৷ কিন্তু সোম ও মঙ্গলবার রাজধানী টিউনিসসহ অন্তত ২০টি শহরে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে৷ বুধবারও অনেক শহরে রাতভর সংঘর্ষ হয়৷
আন্তর্জাতিক ঋণের চাপ কমাতে এ বছরের শুরুতে টিউনিসিয়ায় ভ্যাট ও সামাজিক সুরক্ষা কর বাড়ানো হয়৷ এতেই ফুঁসে ওঠে জনগণ৷ সেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে যখন সরকারের পক্ষ থেকে পেট্রোল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, গাড়ি, ফোনকল, ইন্টারনেট, হোটেল ও আরো অনেক আইটেমের ওপর কর বাড়ানোর কথা বলা হয়৷
২০১১ সালে রাস্তায় নেমে স্বৈরাচারী শাসক প্রেসিডেন্ট বেন আলিকে হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন টিউনিসিয়ার মানুষ এবং গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় আরব বসন্তের সূচনা করেছিলেন, যাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছিল সারা বিশ্ব৷
এরপর থেকে গত ছয় বছরে নয়বার সরকার বদল হয়েছে৷ কিন্তু ব্যাপক বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক সংকট যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারেনি কেউই৷
বিক্ষোভকারীরা পণ্যের দাম ও কর বাড়ানোর সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন৷ শুক্রবার একটি বিরাট সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তারা৷
সরকারের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের সহিংস বিক্ষোভ, লুটপাট ও ভবনে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা কঠোর হাতে দমনের কথা বলা হয়েছে৷
মঙ্গলবার সন্দেহভাজন ‘মুসলিম জঙ্গিরা' একটি ইহুদি স্কুলে পেট্রোল বোমা মেরেছে৷
এখন পর্যন্ত কতজন বিক্ষোভকারী হতাহত হয়েছেন তা জানা যায়নি৷ তবে সোমবার একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যদিও পুলিশ বলছে যে এই মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী নয়৷
প্রতিবছর জানুয়ারিতে বিক্ষোভ একরকম নিয়মেই পরিণত হয়েছে টিউনিসিয়ায়৷ কারণ, এই সময় বেন আলিকে উৎখাত করা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার বর্ষপূর্তি পালন করেন তারা৷ অর্থনৈতিক সংকট সমাধান করতে না পারায় সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)