1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশর ও গণতন্ত্র

১৫ জুন ২০১২

আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ মিশরে গণবিক্ষোভের জের ধরে স্বৈরাচারী শাসক হোসনি মুবারকের পতনের পর দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ নিয়ে যে আশার আলো দেখা দিয়েছিল, তা আপাতত সংকটের মুখে৷

https://p.dw.com/p/15Fhn
ছবি: Reuters

মুবারকের পতনের পর সামরিক বাহিনী এক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছিল৷ কথা ছিল, প্রথমে সংসদ নির্বাচন, তারপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ক্ষমতার রাশ চূড়ান্তভাবে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ তারপর সেনাবাহিনী পুরোপুরি ক্ষমতাকেন্দ্র থেকে সরে যাবে৷ সংসদ নির্বাচন আগেই হয়ে গেছে৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে মুবারকের আমলের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ শফিক ২৪.৮ ও মুসলিম ব্রাদারহুড দলের মহম্মদ মরসি ২৩.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বাকিদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন৷ সপ্তাহান্তে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে এঁদের দু'জনের মধ্যে একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন৷

কিন্তু বৃহস্পতিবার মিশরের সাংবিধানিক আদালতের দু'টি রায় এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ছন্দপতন ঘটিয়েছে৷ এপ্রিল মাসে ব্রাদারহুড'এর উদ্যোগে সংসদে একটি আইন অনুমোদন করানো হয়েছিল, যার আওতায় মুবারক জমানার কোনো কর্মকর্তা ক্ষমতাকেন্দ্রে ফিরতে পারবেন না৷ আদালত সেই রায়কে অসাংবিধানিক হিসেবে বাতিল করে দিয়েছে৷ মুসলিম ব্রাদারহুড দল আদালতের এই রায় মেনেও নিয়েছে৷ কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে দ্বিতীয় রায়টিকে নিয়ে৷ সংসদের এক তৃতীয়াংশ আসন নির্দল প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ করে যে আইন অনুমোদন করা হয়েছিল, আদালত সেটিকেও বাতিল করেছে৷ শুধু তাই নয়, আদালত বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়েছে৷ ফলে আবার নতুন করে সংসদ নির্বাচন করাতে হবে৷

Ägypten Mubarak Plakat
মুবারকের পতনের দাবিতেই গণতন্ত্র প্রথম রাস্তা খোলা পায় মিশরেছবি: Reuters

এমন এক সিদ্ধান্তের ফলে মুবারকের পতনের প্রায় ১৬ মাস পর এক রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে৷ কারণ সংসদের অংশগ্রহণ ছাড়াই প্রেসিডেন্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত করতে হবে৷ নতুন সংবিধানের অভাবে প্রেসিডেন্ট ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজনও স্পষ্ট নয়৷ এমন পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনী সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ক্ষমতা নাও ছাড়তে পারে – এই আশঙ্কাও করছে মুসলিম ব্রাদারহুড সহ অনেক মহল৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন অবশ্য জোর গলায় বলেছেন, মার্কিন প্রশাসন ঠিক সময়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতার হস্তান্তর আশা করছে৷

এমন এক রাজনৈতিক সংকটের ফলে অত্যন্ত বিচলিত মুসলিম ব্রাদারহুড দল৷ সংসদে তাদেরই সদস্যসংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷ অন্যান্য অনেক দলও আদালতের দু'টি রায়ের মধ্যে গণবিপ্লব বানচাল করার অভিসন্ধি খুঁজে পাচ্ছে৷ অনেক মহল ব্রাদারহুড প্রার্থী মহম্মদ মরসি'কে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ডাক দিয়েছে৷ সামরিক বাহিনী ঘুরপথে ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতেই এই ষড়যন্ত্র করেছে বলে সমালোচকরা মনে করছেন৷

এসবি / ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)