অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মরিয়া নেতানিয়াহু
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বেনইয়ামিন ‘বিবি' নেতানিয়াহু৷ এই সময়কালে ইসরায়েলের মানুষকে নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় নি৷ আত্মঘাতী হামলা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ করে দেয় নি৷ কিন্তু অন্যদিকে চরম বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন এই নেতা৷ তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও প্রতারণাসহ একাধিক মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে, সেগুলির ভিত্তিতে তদন্তও চলছে৷ ক্ষমতা হারালে ও সংসদ সদস্য হিসেবে রক্ষাকবচ উঠে গেলে বিবির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে৷
এই অবস্থায় নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনকেই হাতিয়ার করেছিলেন বিবি৷ গত এপ্রিল মাসে নির্বাচনে কোনোরকমে জিতে জোট সরকার গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি৷ কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আবার নির্বাচন আয়োজন করতে হয়েছে৷ মঙ্গলবার ইসরায়েলের মানুষ আবার ভোট দিয়েছেন৷ এখনো ফলাফল জানা না গেলেও বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী এবারও নেতানিয়াহুর পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন হবে৷ সরকারি ফলাফল জানতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে৷ তবে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের এক দিন আগেই স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যেতে পারে৷
এবারের নির্বাচনে বিবির প্রধান প্রতিপক্ষ সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান ও মধ্যপন্থি ‘নীল ও সাদা' দলের নেতা বেনি গানৎস৷ দুজনের মধ্যে কেউই জয়ের দাবি করতে পারছেন না৷ মঙ্গলবার রাতে লিকুদ দলের সদর দপ্তরে বিবি নেতানিয়াহুকে কিছুটা বিমর্ষ দেখাচ্ছিল৷ অন্যদিকে গানৎস আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত যে দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাক না কেন, জোট গড়তে অন্যান্য দলের সমর্থনের প্রয়োজন হবে৷ ধর্মীয় ভবাদর্শে উদ্বুদ্ধ ও ধর্মনিরপক্ষ দলগুলির মতিগতির উপর সেই জোটগঠন অনেকটাই নির্ভর করবে৷ ধর্মভিত্তিক দলগুলি নেতানিয়াহু ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি গানৎস-এর প্রতি সমর্থন জানাতে পারে৷ তবে সরকার গড়ার উদ্যোগ আবার বিফল হলে জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের সম্ভাবনাও রয়েছে৷ তবে সে ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
নেতানিয়াহু যুগের অবসান ঘটলে ইসরায়েলের রাজনীতি জগতে আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন অনেক পর্যবেক্ষক৷ নানা অভ্যন্তরীণ বিষয় ছাড়াও ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তির উদ্যোগের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করা যেতে পারে৷ ইরানের প্রতি চরম বৈরি মনোভাবের বদলে বাস্তববাদী নীতি গ্রহণ করতে পারেন বেনি গানৎস বা অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য নেতা৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)