অবশেষে ক্ষমা চাইলেন ইবির অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩বুধবারের এ বক্তব্যের আগে তিনি এবং ছাত্রলীগের দুই নেত্রীসহ অভিযোগের মুখে থাকা পাঁচজন বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন৷
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল শাখার সহসভাপতি তাবাস্সুম ইসলাম মীমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত র্যাগিংয়ের নামে একটি কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ‘বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ' করার অভিযোগ করেন এক ছাত্রী৷
এরপর ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল কর্তৃপক্ষ দুটি কমিটি গঠন করে৷ এসব কমিটির কাজ চলমান রয়েছে৷
তার মধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়৷
ওই ঘটনার পর অভিযোগ করা ছাত্রী তার গ্রামের বাড়ি পাবনায় চলে যান৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকে তিনি দুইবার এসে তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের বিষয়ে বক্তব্য দেন৷ তৃতীয়বারের মতো এসেছিলেন বুধবার৷
বুধবার বিকাল ৩টায় তদন্ত কমিটির আহবায়কের কক্ষে ওই ছাত্রীসহ অভিযোগের মুখে থাকা পাঁচ ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানায় ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷ প্রায় এক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা কক্ষ ত্যাগ করেন৷ পরে প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িতে পৃথকভাবে তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়৷
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নির্যাতনের শিকার ছাত্রী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও ছাত্রলীগ নেত্রীরা কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি৷
ভুক্তভোগী ছাত্রী তদন্ত কমটির সামনে নির্যাতনকারীদের চিনিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়ে বলেন, ‘‘তারা আমার হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে৷ আমি বলেছি আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না৷ প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেবে তাই হবে৷ তাদের কান্না কান্না ভাব ছিল৷” ছাত্রলীগ নেত্রীদের দেখে ভয় পেয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনো ভয় পাইনি৷”
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাকে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও তিনি মুখ খোলেননি৷ ছাত্রলীগ নেত্রী তাবাসসুম বলেন, ‘‘আমি যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলে দিয়েছি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না৷” তদন্ত কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলও গণমাধ্যমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি৷
এর আগে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের ডাকে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ওই ছাত্রী৷ এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও জয়শ্রী সেন তাকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে হলে নিয়ে যান৷
এ সময় ওই ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে৷ আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে৷”
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন হাইকোর্টের নির্দেশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি৷ তারা প্রক্টর অফিসে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷
সাক্ষাৎ শেষে দুপুর ১টার দিকে তারা সেই হলে যান৷ সেখানে হল কমিটি ও হাইকোর্টের নির্দশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশিত তদন্ত কমিটির ডাকে তদন্ত কমিটির আহবায়কের কক্ষে যান৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)