অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ
৭ জুন ২০২৩মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে জাবির মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কতিপয় ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী প্রত্যয়ের অনশনস্থলে গিয়ে হামলা করে। সেই সময় প্রত্যয়ের বিছানা-বালিশ তছনছ এবং স্যালাইন রাখার স্ট্যান্ড ভাঙচুর করা হয়। তখন তাদের বাধা দিতে গেলে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচিসহ কয়েকজনকে তারা মারধর করে। এক পর্যায়ে প্রত্যয়কে জোরপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান জাবি শিক্ষার্থী গৌতম কুমার দাস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, প্রত্যয়ের সঙ্গে যে শিক্ষার্থীরা ছিলেন, তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর প্রত্যয়কে দেখতে চিকিৎসক আসেন। তখন তারা অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করে সেটা ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
এই ঘটনার সময়ে প্রক্টরকে ফোন করা হলেও তিনি আসেননি বলে অভিযোগ ওই শিক্ষার্থীদের।
রাত সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে যান জাবি প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "ঘটনা শুনে আমরা এসেছি। এখানে যেসব শিক্ষার্থী হামলা করেছে, তাদেরকে আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। তারা ছাত্রলীগ করে কিনা, এটাও জানি না। কারা হামলা করেছে আমরা তদন্ত করে বের করে ব্যবস্থা নেবো।"
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মীর মশাররফ হোসেন হলে একজন অসুস্থ বলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে তাদের কাছে কল আসে। কে কল দিয়েছিল, সেটা তারা জানেন না।
মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আনিস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "একটা ছেলেকে নিয়ে আসা হয়েছে, যার নাম প্রত্যয়। যখন তাকে নিয়ে আসা হয়, তখন সে বার বার বলছিল, "আমাকে জোর করে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি আসতে চাইনি। ওরা আমাকে মারধর করে জোর করে নিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে তাকে আমরা চিকিৎসা দিতে চাইলে সে নেয়নি।"
অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল ডেইলি স্টারকে বলেন, "ছাত্রলীগ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। যদি কোনোভাবে কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, প্রত্যয় গত ৩১ মে রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে অনশনে বসেন। তিনি জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
তার দাবিগুলো হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করা ও হলের মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন নিশ্চিত করা এবং গণরুম বিলুপ্ত করা।
জেকে/এসিবি (দ্য ডেইলি স্টার)