৫০ বছর পর বাড়িতে ফিরলেন তিনি!
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭১৯৬৩ সালে ওয়াং কি নামের ঐ চীনা সৈনিক পথ হারিয়ে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিলেন৷ কিন্তু তার কাছে কোনো কাগজ না থাকায় ভারতীয় সেনারা তাঁকে আটক করে৷ চীনের সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন রাস্তা তৈরির কাজ করছিলেন৷ কাজ করতে করতে এক সময় রাস্তা হারিয়ে ফেলেন তিনি, এমন সময় রেডক্রসের একটি ভ্যান দেখে সেখানে সাহায্য চাইলে তাঁরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন তাঁকে৷ এরপরের ৭ বছর বিভিন্ন জেলখানায় কেটেছে তাঁর৷ ১৯৬৯ সালে মুক্তি দেয়া হয়৷ পুলিশ মধ্য প্রদেশের একটি গ্রামে নিয়ে যায় তাঁকে৷ কিন্তু তাঁর ভারত ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে৷
এরপর গমের একটি কারখানায় কাজ শুরু করেন তিনি, বিয়ে করেন স্থানীয় এক নারীকে এবং নিজের পরিবার গড়ে তোলেন৷ প্রতিবেশীরা জানান, তাঁদের জীবনে সব সময় অভাব লেগেই ছিল৷
অবশেষে চীনা কূটনীতিকদের সহায়তায় ওয়াং ৫০ বছর পর মাতৃভূমিতে যাওয়ার সুযোগ পেলেন৷ বিমানটি যখন বেইজিং বিমানবন্দরে পৌঁছায়, তখন তিনি তাঁর স্বজনদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা করেন৷ সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়৷ এরপর তাঁর নিজের শহর সিয়ানইয়াং-এ নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার অধিবাসীরা তাঁকে ভালোবাসায় বরণ করে নেয়৷ ব্যানারে লেখা ছিল, ‘‘বাড়িতে স্বাগত সৈনিক, এক ভয়ঙ্কর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হলো তোমাকে৷''
শুক্রবার রাতে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে রওনা হন তিনি৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর সন্তানরা৷ চীনা কর্তৃপক্ষ বিমানে ওঠার আগে দিল্লিতে তাঁর সন্তানদের কেনাকাটা করিয়েছেন৷ তাঁর পুরো পরিবারকে ভারতীয় পাসপোর্ট দেয়া হয়েছে, যাতে তারা বাবা'কে সঙ্গ দিতে পারে৷ তবে ওয়াংয়ের স্ত্রী অসুস্থ থাকায় সঙ্গে যেতে পারেননি৷
এটা এখনো নিশ্চিত না যে ওয়াং ভারতে ফিরবেন কিনা৷ তাঁকে কখনো ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি৷ ২০১৩ সালে তাঁকে চাইনিজ পাসপোর্ট দেয়া হয়৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)