৩০ সেপ্টেম্বর - জার্মান ইতিহাসের এক উজ্জ্বল দিন
৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯এর ফলে মোট ১৭০০০ মানুষ প্রাগ থেকে ট্রেনে পূর্ব জার্মানি হয়ে ফেডারেল জার্মানিতে পৌঁছতে সক্ষম হন৷
পূর্ব জার্মানির বেশ কিছু নাগরিক কুড়ি বছর আগে সাবেক চেকোশ্লোভারিয়ার রাজধানী প্রাগে তদানীন্তন পশ্চিম জার্মান দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন পশ্চিমে চলে আসার জন্য৷ এর আগে অনেকে সদ্য খুলে দেওয়া অস্ট্রীয়-হাঙ্গেরীয় সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমে চলে আসার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু তাঁদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় হাঙ্গেরীর ভিসা না পাওয়ার কারণে৷ তাই শেষ আশা হিসেবে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন তদানীন্তন পশ্চিম জার্মানির প্রাগ দূতাবাসে৷ এটা ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকের কথা৷ প্রায় সাড়ে সাত হাজার শরণার্থী প্রাগের জার্মান দূতাবাসের প্রাঙ্গনে আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ পশ্চিমের টিভি ও রেডিও সাংবাদিকরা সেখানকার পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত রিপোর্ট পাঠান তাঁদের টিভি ও পত্রপত্রিকার জন্য৷ যেগুলো দেখে ও পড়ে সকলেই বুঝতে পারেন কি ঘটছে প্রাগের জার্মান দূতাবাসে সাবেক পূর্ব জার্মান নাগরিকদের ব্যাপারে -যাঁরা অধীর আগ্রহের সঙ্গে ও উৎকন্ঠায় সময় কাটাচ্ছিলেন পশ্চিমে পাড়ি জমানোর আশায়৷
কূটনীতিকরা বলেছিলেন, পরিস্থিতি সত্যিই নাজুক৷ রেড ক্রস কর্মীরা জার্মান দূতাবাসে অবস্থানরত শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন৷ এমনকি অন্তঃসত্বা মহিলারা তাঁদের শিশুর জন্ম দেন দূতাবাস প্রাঙ্গনে ৷ ঠিক এই পরিস্থিতিতেই পশ্চিম জার্মানির তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-ডিট্রিশ গেনশার ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাগের জার্মান দূতাবাসে আসেন চেকোশ্লোভাকিয়া, পশ্চিম জার্মানি ও পূর্ব জার্মানির কর্মকর্তাদের মধ্যে পর্দার অন্তরালে কয়েক সপ্তাহব্যাপী আলাপ আলোচনার পর৷ শরণার্থীদের জন্য তিনি সাথে নিয়ে আসেন সুখবর৷ তিনি দূতাবাসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে মাইকে ঘোষণা করেন: ‘‘আমি এখানে এসেছি আপনাদের এটা জানাতে যে, আপনারা আজ পশ্চিমের পথে রওনা হতে পারেন৷''
গেনশার তাঁর বাক্য শেষ করার আগেই সমবেত সবাই তুমুল আনন্দ উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন৷ অনেকের চোখেই দেখা দেয় অশ্রু৷ এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরেই ১৯৮৯ সালের নয় নভেম্বর বার্লিন প্রাচীরের পতন ঘটে৷ প্রশস্ত হয় জার্মানির পুনরএকত্রীকরণের পথ৷
প্রতিবেদক: আবদুস সাত্তার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক