1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হিজাব পরতে চান না মেয়েরা!

৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

হিজাব পরা বা না-পরা ব্যক্তিগত বিষয়, সরকারের সেখানে হস্তক্ষেপের অধিকার নয়৷ মত ইরানের অধিকাংশ মহিলার৷ সরকারের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/2sBII
Iranerinnen legen aus Protest Kopftuch ab
ছবি: picture alliance/abaca

ইরানের অধিকাংশ মহিলা আর হিজাবের আড়ালে থাকতে চান না৷ তাঁদের বক্তব্য, হিজাব পরা বা না-পরা একেবারেই ব্যক্তিগত পছন্দ৷ সরকার বা রাষ্ট্র তা কখনোই ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দিতে পারে না৷ সম্প্রতি ইরান সরকারের প্রকাশিত এক রিপোর্টেই এই তথ্য স্পষ্ট হয়েছে৷ সূত্রের খবর, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সবুজ সংকেত পাওয়ার পড়েই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে৷

বিষয়টি আরো বেশি গুরুত্ব পেয়েছে কারণ, গত কয়েকমাস ধরে ইরানের মহিলারা এক নতুন আন্দোলন শুরু করেছেন৷ প্রকাশ্য রাস্তায় হিজাব খুলে প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন তাঁরা৷ শুধু তাই নয়, তাঁদের সেই প্রতিবাদ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আপলোডও করে দিচ্ছেন৷ কয়েকদিন আগে এই কারণেই অসংখ্য মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল ইরান পুলিশ৷ কারণ ইরানের ইসলামিক আইন অনুযায়ী, মহিলাদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক৷ আইনে স্পষ্ট বলা আছে, মেয়েদের চুল ঢাকতে হবে এবং শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে রাখতে হবে৷ প্রতিবাদ শুরু হয়েছে এর বিরুদ্ধেই৷

যে রিপোর্টটি ইরান সরকার প্রকাশ করেছে, সেটা তিন বছর আগের৷ যেখানে বলা হচ্ছে প্রায় ৩৪ শতাংশ মহিলা সরাসরি বলছেন, পোশাকবিধি সরকার চাপিয়ে দিতে পারে না৷ এটা ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়৷ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে তো অধিকাংশ মহিলা হিজাবের পক্ষে!

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ধর্মীয় অনুশাসন যেখানে প্রবল সেখানে হিজাবের বিরুদ্ধে ৩৪ শতাংশ মহিলা প্রকাশ্যে কথা বলেছেন, এটাই অনেক৷ শুধু তাই নয়, তাঁদের বক্তব্য, এখন নতুন করে সমীক্ষা চালালে ৫০ শতাংশেরও বেশি মহিলা একই কথা বলবেন৷

যে সমীক্ষা ইরান সরকার প্রকাশ করেছে, সেখানে ২০০৬, ২০০৭ এবং ২০১৪ সালের তুল্যমূল্য বিচার করা হয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, এক দশক আগে সে দেশের মহিলারা হিজাবের পক্ষে ছিলেন৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদেরও মত বদলেছে৷ বলা হচ্ছে, ২০০৬ সালে ৫৪ শতাংশ মানুষ মনে করতেন মহিলাদের সবসময় গায়ে ও মাথায় চাদর জড়িয়ে রাখা উচিত, কিন্তু ২০১৪ সালে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে৷

প্রশ্ন হলো, ইসলামিক আইনকে মান্যতা দিয়ে দেশ চালাচ্ছে যে সরকার, সেই সরকারের প্রধান কেন এই রিপোর্ট প্রকাশ করলেন? উত্তর জটিল৷ গত কয়েকমাস ধরে রুহানি বারে বারেই প্রমাণ করতে চাইছেন যে, তাঁর সরকার স্বচ্ছ৷ কোনো কিছুই সরকার গোপন করে না৷ এর আগে বাজেটের সম্পূর্ণ কপি প্রকাশ করে দিয়েছিলেন তিনি৷ যার ফল ভালো হয়নি৷ দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্যের দিকে নির্দেশ করে জনগণ আন্দোলনে নেমেছিলেন৷ যার পরিণামে ২১ জনের মৃত্যুও হয়েছিল৷ সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, দেশের শত্রুরাই জনগণকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ করেছে৷ রুহানির নতুন পদক্ষেপও আন্দোলনকারীদের আরো উৎসাহ দেবে না তো? ইতিমধ্যেই আন্দোলনকারীরা বিষয়টিকে তাঁদের জয় হিসেবেই দেখছেন৷

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলছেন, মহিলাদের এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন যাতে বৃদ্ধি না পায়, তার জন্য ব্যবস্থা নেবে সরকার৷ হয়ত মেয়েদের দাবি আংশিক মান্যতাও পাবে৷ রুহানিও কিছুদিন আগে বলেছেন, জনগণের মতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় তাঁর সরকার৷ তবে মেয়েদের হিজাব পরা বন্ধ হলে অন্যান্য ইসলামিক রাষ্ট্রগুলি তা কীভাবে দেখবে, সে প্রশ্নও একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ৷

এলিজাবেথ শুমাখার/এসজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য