হারানো স্বজনের খোঁজে ইন্টারনেটে জাপানিদের ভিড়
১৩ মার্চ ২০১১শুক্রবার জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলে ৮ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং পরবর্তী সুনামির আঘাতে জর্জরিত এলাকার ছবিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ইন্টারেনেটে ভিড় জমাতে থাকে৷ এমনকি এসব ছবি হলিউডের যে কোন দুর্যোগ বিষয়ক ছবিকেও হার মানিয়েছে৷ এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভিজিট পেয়েছে সেন্ডাই বিমানবন্দরে বিশালাকারের পানির তোড়ের শক্তিশালী অনুপ্রবেশ৷ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট ছোট বিমান, গাড়ি এবং ট্রাকগুলোকে বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ি ও আবর্জনার স্তূপের সাথে এমনভাবে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সুনামির ঢল যে সেগুলোকে শিশুদের খেলনা ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি৷
এই ভয়াবহ দুর্যোগের নানা ছবি ও ঘটনার তথ্য পেতে শুধুমাত্র শনিবারই ইউটিউবে ভিড় করেছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ৷ এসব ছবি ও ভিডিও বার্তা দেখার পাশাপাশি সেগুলোর নিচে নিজেদের মতামত, খবর এবং স্বজনদের খোঁজে প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করে দিয়েছে দুর্যোগের কবলে পড়া শোকাহত জাপানিরা৷ এছাড়া বাবা, মা, ভাই, বোনসহ নিখোঁজ আত্মীয় স্বজনের খোঁজে ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারসহ স্থানীয় ভাষার সাইটগুলোর আশ্রয় নিয়েছে তারা৷
এমনকি গুগল এর পিপল ফাইন্ডার পরিষেবা পরিণত হয়েছে দুর্যোগ মুহূর্তের একমাত্র ভার্চুয়াল তথ্য কেন্দ্রে৷ রবিবার পর্যন্ত ৮১ হাজার মানুষ তাদের স্বজনদের খোঁজে তথ্য অনুসন্ধান করেছে গুগলের এই পরিষেবায়৷ সাইটটিতে প্রতি মিনিটে শত শত মানুষ ইংরেজি এবং জাপানি উভয় ভাষায় তাদের স্বজনদের খোঁজ নিচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা রেড ক্রসও এসব দুর্যোগ পীড়িত মানুষের অনুসন্ধানে ও তথ্য প্রদানে একটি নতুন সাইট চালু করেছে৷ প্রতি সেকেন্ডে টুইটারে যোগ হচ্ছে নতুন সন্ধান, শুভ কামনা, সমবেদনা কিংবা উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার খবর৷
টুইটার চালু করেছে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে রেড ক্রসের ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা৷ এছাড়া সংগীত তারকা লেডি গাগা জাপানের দুর্যোগ পীড়িত মানুষের সাহায্যের জন্য একটি ব্রেসলেট ছেড়েছেন ইন্টারনেটে৷ এটি কেনার মাধ্যমে যে কেউ অর্থ সাহায্য পাঠাতে পারেন জাপানের ত্রাণ হতবিলে৷ জাস্টিন বিবার এবং অ্যালিসিয়া কিজ এর মতো তারকারাও টুইট করেছেন জাপানিদের জন্য শুভ কামনা করে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার