স্বস্তি পেতে ইউটিউবে এএসএমআর ভিডিও দেখা যায়
১৪ অক্টোবর ২০২১সান্ড্রা জার্মানির দক্ষিণে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন৷ বহুকাল ধরেই এএসএমআর ভিডিও তাকে মুগ্ধ করছে৷ ফলে তিনি নিজেই এমন ক্রাফট ভিডিও নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন৷ কাউকে এমন হাতের কাজ করতে দেখলে নাকি মন হালকা হয়৷ সেটা কীভাবে সম্ভব?
সান্ড্রা বলেন, ‘‘পিংক পেপার এএসএমআর নামে আমার একটা ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে৷ সেখানে আমি এএসএমআর ভিডিও পোস্ট করি৷ প্রথমদিকে কাটাকুটি করে অনেক ভিডিও বানিয়েছিলাম, যেখানে শিল্প সম্পর্কে আমার জ্ঞান বিতরণ করেছি৷ তবে এখন আমি নিজেকে আরও বেশি তুলে ধরতে চাই৷''
আর এএসএমআর মানে কী? বিশেষ শব্দ শুনে শরীরে স্বস্তির অনুভূতিকে অটোনোমাস সেন্সরি মেরিডিয়ান রেসপন্স বা এএসএমআর বলা হয়৷ লুনা টালমান নিজের থিসিসে সেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন৷ তিনি বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘এই প্রতিক্রিয়া অনেকটা মাথা ঝিমঝিম করার মতো৷ সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে যে ফিসফিস করে বলা কথা, কর্কশ অথবা মর্মরধ্বনির মতো শব্দ শুনলে এমন প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে৷ বিশেষ করে যে পরিস্থিতিতে নিজস্ব মনোযোগ জোরালো থাকে, সে অবস্থায় এমনটা বেশি ঘটে৷''
ভিডিওর মাধ্যমে ঠিক সেই নৈকট্যই তুলে ধরা হচ্ছে৷
কী ধরনের এএসএমআর ভিডিও রয়েছে? গোটা বিশ্বের এএসএমআর প্রস্তুতকারীরা ক্যামেরার সামনে নানা ধরনের শব্দ করেন৷ খাবার খাওয়া, পরিষ্কার করা অথবা মাইক্রোফোনের উপর তুলি বোলানোর মতো শব্দও করা হয়৷ সান্ড্রা আঁকেন, জিনিসপত্র প্যাকিং করেন অথবা ফিসফিস করে কোনো বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন৷ তাঁর ভিডিওগুলিতে দৈনন্দিন জীবনের নানা মুহূর্ত উঠে আসে, যা তাঁকে হালকা, স্নায়ু শিথিল করার মতো অনুভূতি দেয়৷
এএসএমআর প্রডিউসার হিসেবে সান্ড্রা বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমি পার্সেল পাঠাতে এক দোকানে গিয়েছিলাম৷ সেখানকার কর্মচারী যেভাবে পার্সেল নাড়াচাড়া করছিলেন, উপরে স্টিকার লাগাচ্ছিলেন, সেটা দেখে বুঝতে পারলাম আমি সেই মুহূর্ত সত্যি উপভোগ করছি৷ তারপর আমি সত্যি এমন প্যাকেজিং ভিডিও তৈরি করলাম, যাতে আমাকে স্ট্যাম্প লাগাতে দেখা যাচ্ছে৷ আমি চাই আমার দর্শকদেরও একই বিষয়ে আগ্রহ থাকুক৷ কারও যদি আগ্রহ না থাকে, বা এমন ভিডিও পছন্দ না হয়, তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই৷''
অনেক মানুষ জিরিয়ে নিতে অথবা ঘুমিয়ে পড়তে এমন ভিডিও কাজে লাগান৷ অনেকের কাছে আবার এএসএমআর নির্ভেজাল স্বস্তির উৎস৷
এএসএমআর কী কাজে লাগে? এই প্রশ্নের উত্তরে লুনা টালমান বলেন, ‘‘অস্থিরতা, ভয়, মনোযোগের সমস্যা, ঘুমে ব্যাঘাতের মতো নানা রকম সমস্যা কাটাতে এএসএমআর-এর কার্যকারিতার প্রমাণ রয়েছে৷ আমার মতে, বিষাদ ও মানসিক চাপের লক্ষণ দূর করে৷''
এমন সব ভিডিও দেখার পর স্বস্তির অনুভূতি হয়৷ সান্ড্রা এমনকি ভিডিও তৈরির সময়েও সেই অনুভূতি টের পান৷ তাঁর মতে, ‘‘স্বীকার করতেই হবে, যে এই এএসএমআর চর্চা আমার নিজস্ব বিকাশের জন্য জরুরি ছিল৷ আমি নিজেকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চেয়েছিলাম৷ মানুষ আমার ভিডিও লাইক বা সে বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করলে আমার খুব আনন্দ হয়৷''
এমন স্বস্তিদায়ক এএসএমআর ভিডিও প্রডিউসারের তালিকায় আরও একটি নাম যোগ হলো৷
টেরেসা ক্রাম্ফল/এসবি