1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো সংকট

১৮ এপ্রিল ২০১২

জরুরি সংকট কাটিয়ে ইউরো এলাকা যখনই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখনই কোনো না কোনো নতুন জটিলতা সেই প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে৷ আপাতত চিন্তার কারণ স্পেন ও ইটালিকে ঘিরে৷

https://p.dw.com/p/14fQC
ছবি: picture alliance/APA/picturedesk.com

স্পেনের বহুমুখী সংকট

সোমবার পুঁজিবাজার খোলার পর স্পেন ও ইটালিকে ঘিরে দুশ্চিন্তা দেখা গিয়েছিল৷ দুই দেশের সরকারই ব্যয় সংকোচ, বাজেট ঘাটতি কমানো ও গোটা ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করছে বটে৷ সেটা করতে গিয়ে যে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে, বাজারে বন্ড ছেড়ে তার কিছুটা তুলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ কিন্তু সমস্যা দেখা দিচ্ছে বন্ডের মূল্য নিয়ে৷ যেমন সোমবার স্পেনের ১০ বছর মেয়াদের বন্ডের মূল্য ৬ শতাংশের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়৷

ফলে আশঙ্কা দেখা দেয় যে স্পেন তার ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না৷ সেদেশের সরকার জানিয়েছে, ২০০৯ সালের পর দেশ আবার মন্দার কবলে পড়ছে৷ মাদ্রিদে কেন্দ্রীয় সরকার অনেক উদ্যোগ নিলেও অনেক প্রাদেশিক সরকার বকেয়া বিল মেটাতে পারছে না৷ ফলে তাদের প্রাপ্য অর্থও আটকে রাখতে হচ্ছে৷ তার উপর বেকারত্বের হার প্রায় ২৩ শতাংশ৷ ইউরো এলাকার চতুর্থ অর্থনৈতিক শক্তির এই বেহাল অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাজার৷ বেরেন্সবার্গ ব্যাংকের প্রতিনিধি ক্রিস্টিয়ান শুলৎস এবিষয়ে বললেন, ‘‘এসব ছাড়াও স্পেন কিন্তু অন্য একটা সংকটে ভুগছে৷ ঘরবাড়ি ও জমিজমার দাম প্রথমে অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল৷ তারপর তাতে ধস নেমেছে৷ নির্মাণের ক্ষেত্রে এই চরম অবস্থার ফলেও বেকারত্বের হার এত বেড়ে গেছে৷''

ইটালির সামনে দীর্ঘ পথ

ইটালির পরিস্থিতিও ভাল নয়৷ সরকারি ব্যয় কমছে, বিদেশ থেকে আরও অর্ডার আসতে শুরু করেছে বটে, কিন্তু আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য এখনো বিপদের মাত্রা কাটিয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় আসে নি৷ চলতি বছরে প্রবৃদ্ধির তো কোন সম্ভাবনাই নেই, উল্টে সংকোচনের আশঙ্কা রয়েছে৷ তবে ২০১৩ সালের মধ্যে বাজেট ঘাটতি পুরোপুরি দূর করার আশা করছে প্রধানমন্ত্রী মারিও মন্টির সরকার৷

Christine Lagarde IWF Internationaler Währungfonds Merkel
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল’এর সঙ্গে আইএমএফ'এর প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ...ছবি: picture-alliance/dpa

আইএমএফ'এর ভূমিকা

মঙ্গলবার অবশ্য পরিস্থিতির আবার কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷ কারণ জাপান আইএমএফ'কে ৬,০০০ কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে৷ অর্থাৎ স্পেনের যদি বেল-আউট'এর প্রয়োজন পড়ে, তাহলেও বাজারের দুশ্চিন্তার কারণ নেই৷

এদিকে আইএমএফ'এর প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ জার্মানির এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি সদস্য দেশগুলির উদ্দেশ্যে ৪০,০০০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছেন৷ তাঁর আশা, চলতি সপ্তাহেই এর একটা বড় অংশের অঙ্গীকার পাওয়া যাবে৷ আগামী ২০শে এপ্রিল ওয়াশিংটনে এক বৈঠক শুরু হচ্ছে, যেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷

ইউরোজোন আইএমএফ'কে এই বাড়তি অর্থের সংস্থান করার অনুরোধ জানিয়েছিল, যাতে ভবিষ্যতে বেল-আউট নিয়ে কোনো সমস্যা না দেখা যায়৷ তবে লাগার্দ বলেন, ইউরোজোন ও আইএমএফ'এর পাশাপাশি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি'ও ব্যাংকগুলিকে অত্যন্ত সহজ শর্তে ১ লক্ষ কোটি ইউরো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ কিন্তু স্পেনের ব্যাংকগুলির অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন লাগার্দ৷

ইউরোপে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি

এরই মধ্যে ইউরো এলাকার মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে নতুন তথ্য জানা গেল মঙ্গলবার৷ গত বছরের তুলনায় এবছর মার্চ মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার ২.৭ শতাংশ বেড়েছে৷ এর মধ্যে ০.৬ শতাংশই জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ঘটেছে৷ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব হলো মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নীচে রাখা৷ ফলে এই অবস্থায় বাজারকে চাঙ্গা করতে ইসিবি যে পদক্ষেপের কথা ভাবছিল, তাতে আপাতত রাশ টানতে হবে৷ ইউরো এলাকাকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে ফিরিয়ে আনতে যত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বার বার তা ধাক্কা খাচ্ছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, (রয়টার্স, এপি, এএফপি)

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য