1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তিতে ভাঙছে পারিবারিক বন্ধন

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩০ আগস্ট ২০১৯

কোনো কিছু না জেনে, না বুঝে কেন আমরা মতামত দেই৷ হুট করেই কেন কাউকে বানিয়ে ফেলি আক্রমণের বিষয়বস্তুতে৷ সোশাল মিডিয়ায় আমাদের এই আচরণ ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে কতটুকু সম্পৃক্ত?

https://p.dw.com/p/3Ojdh
ছবি: picture-alliance/dpa

এসব নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দীন কাউসার বিল্পব৷

ডয়চে ভেলে : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি মানুষের কেন এত আসক্তি?

 অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দীন কাউসার বিল্পব: এই আসক্তির অনেক রকম কারণ৷ মানুষ বিভিন্নভাবে কমিউনিকেশনকে একটা গুরুত্বপূর্ণ টুল হিসেবে ব্যবহার করে৷ এক জায়গায় বসে বহু পুরনো বা অনেক মানুষের সঙ্গে একসাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়৷ অল্প খরচে, অল্প পরিশ্রমে এটা সম্ভব হয়৷ আমাদের দেশে এটার উপযোগিতা, আপনি যদি ফাস্ট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে তুলনা করেন তাহলে দেখবেন তাদের থেকে আমরা অনেক আলাদা৷ আমরা ব্যক্তিগত জীবনের সবকিছু এখানে দেই৷ এটা কিন্তু বাইরের পৃথিবীতে পাবেন না৷ 

‘‘আইন করে সব করা সম্ভব নয়’’

সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তি আক্রমণের এত প্রবণতা কেন?

এটা আমাদের দেশে বিতর্কিত বিষয়৷ আমাদের দেশে সুখ দুঃখে একজন অন্যজনের পাশে দাঁড়াই৷ ব্যক্তি জীবনেও আমরা এটা করি৷ একইভাবে আমরা একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে দ্রুত ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেলি৷ এটা আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক বা পারিবারিক যে বিশ্বাস তার প্রতিফলন৷ শুধু সামাজিক মাধ্যমে যে এই আক্রমণ তা নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও এটা করা হচ্ছে৷

 যে কোনো বিষয় সঠিকভাবে বিশ্লেষণ না করেই মত দেয়া হচ্ছেএর প্রভাব কী?

এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা৷ দেখেন, কেউ যদি একটা স্ট্যাটাস দেয় তাহলে অনেকেই সেটা পুরো না পড়ে মন্তব্য করছেন৷ ভেতরের গল্পটা হয়ত অন্য৷ আসলে এখন পড়ার বা বিশ্লেষণ করার ধৈর্য আমাদের নেই৷ এখন কোনো কিছুর ভেতরে ঢুকে তার যৌক্তিকতা না বুঝেই তারা বলে দিচ্ছেন৷ এটার ইমপ্যাক্ট তো খারাপ৷ অনেক সময়ই উল্টোটা ঘটে৷ আসলে কিছু একটা বলার আগে যৌক্তিকতা বুঝে বলা উচিৎ৷

কোনো ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই বিচার' করে ফেলা হচ্ছে?এতে করে মূল ঘটনা ভিন্নখাতে প্রভাবিত হয় কি-না?

কখনও কখনও হয়৷ সবসময় যে হয় তা না৷ তবে সম্প্রতি এমন ঘটনা তো আমরা দেখেছি৷ আবার অনেক সময় প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েও মূল ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়া হয়৷ এতে অনেক সময় না বুঝেই অনেকে ঝাপিয়ে পড়ে, তারা তখন ভিকটিম হয়ে যায়৷ 

সামাজিক মাধ্যমে আসার পর আবার অনেক ঘটনার তো বিচারও হচ্ছে?

অবশ্যই৷ সামাজিক মাধ্যমে যেমন আগে কোনো ঘটনার বিচার করে ফেলে একটা ভীতিকর অবস্থার তৈরি করা হচ্ছে, তেমনি এর পজিটিভ দিকও আমরা দেখি৷ যে ঘটনাগুলো একটু জাস্টিফাই করে সামাজিক মাধ্যমে আসে সেগুলোর কিন্তু ভালো মূল্যায়ন হয়৷ সেই ঘটনাগুলোর বিচারও কিন্তু হচ্ছে৷

সামাজিক মাধ্যমে আগেই বিচার করে ফেলার এই প্রবণতা থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায়?

 এটা অত্যন্ত কঠিন বিষয়৷ আইন করে সব করা সম্ভব নয়৷ ব্যক্তি সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ উন্নত দেশে আমাদের যেসব বন্ধু থাকে তারা মাঝেমধ্যেই বলেন, ব্যক্তি জীবনের এত কথা সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ার দরকার কি? ওরা কিন্তু অনেক চিন্তা করেই কাজটা করে৷ তারা এখানে কতটা সময় দিচ্ছে তা খেয়াল করে৷ কিন্তু আমরা এটা খেয়াল করি না৷ এখানে আসলে আমরা কি করছি, নিজেরাও জানি না৷

 সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম কতটা বা কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে?

বাইরের বিশ্বের কথা আমি অতটা বলতে পারব না৷ তবে অবশ্যই আমাদের দেশে তরুণরা খুবই প্রভাবিত৷ এখানে সকাল বিকেল বা রাত নেই হাজার হাজার মানুষ সবসময় একটিভ থাকেন৷ অনেকে রাতের পর রাত ফেসবুক চালায়৷ এর ফলে সকালে তারা স্কুলে বা অফিসে হয়ত ঠিকমতো যেতেই পারছেন না৷ একজন মা আমার কাছে এসেছিলেন৷ তিনি বলছিলেন, তার তিন সন্তানের সবাই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত৷ পারিবারিক যে আলোচনা বা বন্ধন সেটা থাকছে না৷ প্রতিটি পরিবারেই এখন এই সমস্যা৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য