সেন্সরশিপের কবলে মিয়ানমারের ব্যঙ্গাত্মক কবিতা
১৫ এপ্রিল ২০১৯মিয়ানমারের কয়েকশত বছরের পুরনো প্রথা, যা শাসকদের বিদ্রুপ করতে ব্যবহার করা হতো, থাংগিয়াট বা বার্মী ভাষায় থ্যান্চা'র মহড়া দিচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা৷ দেশটিতে নতুন বছর উদযাপনের অনুষ্ঠানে দলগতভাবে থ্যান্চা পরিবেশন করাই তাদের উদ্দেশ্য৷
থ্যান্চায় সাধারণত ঢোলের তালে তাল মিলিয়ে নাচ ও ব্যঙ্গাত্মক কবিতা আবৃত্তি করা হয়৷ চলতি বছর এই আয়োজন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কেননা, দেশটির গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার থ্যান্চার কবিতা এক সেন্সর প্যানেলে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে৷
বিশ বছর বয়সি শিক্ষার্থী থ্যান্ট জিন এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা জনগণের বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে থ্যান্চা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম৷''
‘‘তারা কেন দেশের জনগণ, শিক্ষার্থীদের কথা শোনার সাহস পাচ্ছে না?'' প্রশ্ন করেন দলের আরেক সদস্য ২৩ বছর বয়সি অং মিন থ্যু৷
থ্যান্চা নিয়ন্ত্রণের এই চেষ্টার বিরোধিতা করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরব হয়েছেন৷ তাঁদের মতে, মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সূ চি'র সরকারের আমলে বাকস্বাধীনতা সীমাবদ্ধ পর্যায়ে রয়েছে৷ আগামী বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে৷
সূ চি'র ক্ষমতাসীন দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি'র এক মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন, থ্যান্চার উপর এই কড়াকড়ি সাময়িক, কেননা, মিয়ানমার গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হচ্ছে৷ ড. মিয়ো নিউন্ট বলেন, ‘‘আমাদের দেশ এখনো গণতন্ত্র অর্জন করেনি৷ আমরা উদ্বিগ্ন যে থ্যান্চাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটতে পারে৷ তাই কর্তৃপক্ষ সাময়িক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে৷''
উল্লেখ্য, সামরিক জান্তা মিয়ানমারকে কয়েক দশক শাসন করেছে৷ তখন থ্যান্চা পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল৷ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে দেশটিতে আধাবেসামরিক শাসন শুরু হলে থ্যান্চা চর্চা ফিরে আসে৷ তবে চলতি বছর নববর্ষ শুরুর আগে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এই চর্চায় সরকারবিরোধী কোনো কিছু না বলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স)