সেনেগালে জঞ্জাল কুড়ায় যারা
বিশ্বের বৃহত্তম আস্তাকুড়ের একটি আফ্রিকার দেশ সেনেগালের রাজধানীতে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এই জায়গা থেকেই আসে বেশ কিছু মানুষের জীবনের খরচ। বিস্তারিত ছবিঘরে…
রাজধানীতে আস্তাকুড়
সেনেগালের রাজধানী ডাকার শহরের মধ্যেই রয়েছে বেউবেউস আস্তাকুড়। সেখানে প্রতিদিন দুই হাজার মানুষ জঞ্জাল কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। লোহার হুকের সাহায্যে জঞ্জাল থেকে প্লাস্টিক কুড়োন তারা। কেউ কেউ এই আবর্জনা পুড়িয়ে তার থেকে নানা ধরনের দামি ধাতুও খুঁজে পায়।
পুনর্ব্যবহারের ব্যবসা
জঞ্জাল থেকে যে সমস্ত প্লাস্টিক পাওয়া যায়, তার একটা অংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এই প্লাস্টিক বেচে কারো রোজগার হতে পারে মাসে দেড়শ ইউরোর সমান, জানাচ্ছে উইগো নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই আয় সেনেগালে একজন মানুষের জীবনযাপনের জন্য খুবই কম। কিন্তু অনেক মানুষের সেটুকুও জোটে না।
দুর্গন্ধেই জীবিকা
বিশাল পরিমাণ জঞ্জাল থেকে ছড়ায় অসহনীয় দুর্গন্ধ। কেউ কেউ এই দুর্গন্ধের মধ্যে গিয়ে আবর্জনা কুড়িয়ে থাকেন। সাথে থাকে সেনেগালের চরম গরম আবহাওয়াও। প্রতি দিন, বড় বড় ট্রাকে করে আবর্জনা এনে ফেলা হয় বেউবেউস আস্তাকুড়ে। সাথে সাথেই শুরু হয় সেই ময়লা থেকে বিক্রয়যোগ্য পণ্য খোঁজার কাজ।
আবর্জনায় প্রাণী জীবন
প্রতি দিন গড়ে ২৩০টি ট্রাকে করে এক হাজার ৩০০ টন আবর্জনা এনে ফেলা হয় এই আস্তাকুড়ে। ২৮০ একরের এই আস্তাকুড়ে এসে জোটে নানা ধরনের পাখি ও গরু-মহিষ প্রজাতির প্রাণী।
হেরে যাওয়ার দলে যারা
ডাকারে যারা আবর্জনা কুড়ায়, তাদের একটি সংস্থা রয়েছে, যার মুখপাত্র পাপে এনদিয়ায়ে। তার মতে, বেউবেউসের ওপর ভিত্তি করে জীবন চালানো আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে রয়েছে এই কাজে ব্যাপক প্রতিযোগিতা, অন্যদিকে আবর্জনা থেকে পাওয়া পণ্যের নিম্নমুখী দাম। যদিও এই কাজ করে প্রকৃতিকে কিছুটা জঞ্জালের হাত থেকে বাঁচাচ্ছেন পাপে ও তার সহকর্মীরা, আখেরে গিয়ে আর্থিক ক্ষতিই হচ্ছে তাদের, জানান পাপে।
পরিবেশের জন্য ঝুঁকি
বেউবেউস পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা সেনেগালে কারো অজানা নয়। ময়লা পোড়ানোর বিষাক্ত ধোঁয়া প্রায়ই এই আস্তাকুড় ছাড়িয়ে অন্যান্য বসতিতে পৌঁছায়। ময়লা জমার ফলে স্থানীয় জলাশয়ের পানি দূষিত হয়ে লাল রঙ ধারণ করেছে।
দীর্ঘমেয়াদী নয় আস্তাকুড়
বহু দশক ধরে অবহেলার পর অবশেষে সেনেগাল কর্তৃপক্ষ বেউবেউস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই আস্তাকুড় রূপ নেবে এক ওয়েস্ট সেপারেশেন সেন্টার বা আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের। তা হলে, পাপের মতো ময়লা-কুড়ানিদের জীবিকা প্রশ্নের মুখে পড়বে।