1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন, ৩৭ মরদেহ উদ্ধার

২৪ ডিসেম্বর ২০২১

ঝালকাঠিতে সুগন্ধা নদীর বুকে গভীর রাতে লঞ্চে আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/44nW6
ছবি: Str/REUTERS

লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। লঞ্চের নাম এমভি অভিযান-১০। রাত তিনটে নাগাদ লঞ্চে আগুন লাগে।  মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডিডাব্লিউর কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ২৪ডটকম জানাচ্ছে, ঝালকাঠির ডিসি জোহর আলি জানিয়েছেন, পোড়া ওই লঞ্চ থেকে এ পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৭২ জনকে আহত ও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঢাকার সদরঘাটে কর্মরত বিআইডাব্লিউটিএ এর পরিবহণ পরিদর্শক দীনেশ কুমার সাহা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় চারশ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। চাঁদপুর ও বরিশাল টার্মিনালে লঞ্চটি থামে এবং যাত্রীরা ওঠেন এবং নামেন।

Bangladesch - ausgebrannt Fähre
ছবি: picture alliance/AP

তবে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বলেছেন, তিন তলা ওই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের সময় হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার পর লঞ্চে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

লঞ্চটি প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। স্থানীয়রা ভিড় করেন নদীর তীরে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও সেখানে যান। ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮মিনিটে তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।

এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্ট গার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, যেখানে লঞ্চটিতে আগুন লেগেছে, ওই এলাকা ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। লঞ্চের ইঞ্জিনরুমের অংশটি বেশি পুড়েছে। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।

ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আব্দুর রহিম জানান, রাতে ডেক থেকে তিনি হঠাৎ বিকট শব্দ পান। তারপর লঞ্চের পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন পুরো লঞ্চ গ্রাস করে ফেলে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি ডেক থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন।

দিয়াকুল গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন। তারাই রহিমকে উদ্ধার করে গরম কাপড় দেন। পরে সকালে তাকে ট্রলারে করে ঝলাকাঠি শহরে নেওয়া হয়।

Bangladesch - ausgebrannte Fähre
ছবি: AFP

আহতদের মধ্যে ৭০ জনকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় জানিয়ে পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ''আমাদের এখানে বার্ন ইউনিট বন্ধ। যারা এসেছেন তাদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ৬৭ জনকে সার্জারি ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লঞ্চের কেরানি আনোয়ার রাত ৩টা ৫মিনিটে তাকে ফোন করে আগুন লাগার খবর দেন।

প্রধানমন্ত্রীর শোক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ 'এমভি অভিযান-১০' এ আগুনে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ বর্তমানে মালদ্বীপ সফররত শেখ হাসিনা আজ এক শোক বার্তায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন৷ শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান৷

জিএইচ/এসজি (বিডিনিউজ২৪ডটকম, ডেইলি স্টার)