সীমান্তে সেনা পাঠানোর হুমকি দিলেন লুকাশেঙ্কো
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০দেশের পশ্চিম সীমান্তে সেনা পাঠানোর হুমকি দিলেন বেলারুশের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়ার সীমান্তে সেনা পাঠিয়ে সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হবে। যদিও দু'টি দেশই জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সীমান্তে কোনওরকম পরিবর্তন তাঁদের সীমান্তরক্ষীরা দেখতে পাননি। লুকাশেঙ্কোর বক্তব্য, উস্কানিমূলক এবং নতুন প্রোপাগ্যান্ডা।
বেলারুশের রাস্তা এখন সেনা জওয়ানে ভর্তি। যেখানেই প্রতিবাদ প্রতিরোধ হচ্ছে, সেখানেই সেনা পাঠিয়ে দিচ্ছে সরকার। যে ভাবে লুকাশেঙ্কো নির্বাচন করেছেন, এবং ভোটের আগে থেকেই যে ভাবে বিরোধীদের উপর আঘাত করছেন তিনি, তা নিয়ে সরব হয়েছে প্রায় গোটা ইউরোপ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেলারুশের সাম্প্রতিক ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ লুকাশেঙ্কোর কাজকর্মের তীব্র নিন্দা করেছে। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন লুকাশেঙ্কোর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ চলছে বেলারুশে। হাজার হাজার বিরোধী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে যিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই শ্বেতলানা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ আন্দোলন বন্ধ করতে বলছেন। ঘরে ফিরে যেতে বলছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্টকেই পদ ছেড়ে ফিরে যেতে হবে। তা না ঘটা পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ হবে না।'' সম্প্রতি বেলারুশের আর এক নারী বিক্ষোভকারীকে ইউক্রেন সীমান্তে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকেও দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সীমান্তে পৌঁছে তিনি নিজের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন। ফলে তাঁকে ইউক্রেনে পাঠানো যায়নি। গ্রেফতার করা হয়।
ইউরোপ যে ক্রমশ তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছে, তা ভালোই বুঝতে পারছেন লুকাশেঙ্কো। সে কারণেই বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ইউরোপের সঙ্গে দেশের সীমান্ত সিল করে দেওয়া হবে। রাজধানীর রাস্তা থেকে সেনা সরিয়ে তাঁদের সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সীমান্ত সেনা যেতে শুরু করে দিয়েছে বলেও বৃহস্পতিবার দাবি করেন লুকাশেঙ্কো। কিন্তু পোল্যান্ড আর লিথুয়ানিয়ার প্রশাসন জানিয়েছে, সীমান্ত এখনও স্বাভাবিকই আছে। সেনার তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। তা হলে কি মিথ্যে বলছেন লুকাশেঙ্কো? সেনার কথা বলে কি তিনি যুদ্ধের ভয় দেখাচ্ছেন?
বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। পোল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছে, লুকাশেঙ্কো আসলে মিথ্যা ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। এও তাঁর এক ধরনের প্রোপাগ্যান্ডা। যা তিনি করেই থাকেন। ফলে তাঁর বক্তব্যকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কোনো কারণ নেই।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)