সার্বিয়ার অদ্ভুত সমাধিস্থল
সার্বিয়ার তিনটি গ্রামের মানুষ তাঁদের মৃত আত্মীয়স্বজনদের কবরকে ঘিরে তার উপর এক বা দুই কক্ষের ঘর নির্মাণ করে থাকেন৷ এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও চলে৷
দেখতে আবাসিক এলাকার মতো
প্রথম দেখায় কি বসবাসের ঘরবাড়ির মতো মনে হচ্ছে? এগুলো কিন্তু আসলে একেকটি পারিবারিক কবরস্থান, যার উপর ঘরগুলো দাঁড়িয়ে আছে৷ সার্বিয়ার তিনটি গ্রাম টারনোভিচ, সাপিনে ও স্মলিয়েনাচে এরকম অদ্ভুত সমাধিস্থল দেখতে পাওয়া যায়৷
মৃতদের স্মরণ করার অন্যরকম উপায়
খেয়াল করে দেখুন ঐ ঘরে ক্রস, ফুল আর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার সময় ব্যবহৃত হয় এমন সব জিনিসপত্র দেখা যাচ্ছে৷ ব্যক্তিমালিকানাধীন এ সব চ্যাপেলে (খ্রিষ্টানদের উপাসনার স্থান) বড় জানালাবিশিষ্ট এক বা একাধিক ঘর ছাড়াও থাকে বারান্দা, ফুল রাখার জায়গা ইত্যাদি৷ আর চ্যাপেলের নীচেই আছে পারিবারিক কবরস্থান৷
আরামদায়ক পরিবেশ
চলুন এবার একটি চ্যাপেলের ভেতর ভেতর ঢুকি৷ দেখুন, কেমন টেবিলের উপর বিস্কুট আর পানি রাখা আছে৷ নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক নারী জানান, ‘‘আমরা যখন মৃতের সঙ্গে দেখা করতে আসি তখন আমাদের বসার জন্য মাথার উপর ছাদ আর কফি দরকার হয়৷’’
গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা প্রবীণ
ছবিটি স্মলিয়েনাচ গ্রামের৷ বেলগ্রেড থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামে প্রায় ১,৮০০ মানুষের বাস, যার মধ্যে অনেকেই প্রবীণ৷ এসব চ্যাপেল প্রবীণদের একটু আরামে তাঁদের চলে যাওয়া স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিয়েছে৷
চাহিদা ব্যাপক
নতুন সমাধি ঘর তৈরির কাজ চলছে৷ স্মলিয়েনাচ গ্রামের অনেক মানুষ বিদেশে থাকেন৷ সেখান থেকে তাঁরা গ্রামে টাকা পাঠান৷ ফলে গ্রামবাসীদের আর্থিক অবস্থা ভাল৷ তাই অনেকেই এমন ব্যক্তিগত চ্যাপেল নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছেন৷
গরিবদের জন্য অন্য ব্যবস্থা
যাঁদের চ্যাপেল তৈরির সামর্থ্য নেই তাঁদের পাথরখণ্ড দিয়ে সমাধি চিহ্নিত করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়৷ যেমন ছবিতে সাপিনে গ্রামের একটি কবর দেখা যাচ্ছে৷
কত খরচ হয়?
সাধারণ একটি পারিবারিক কবরস্থানের জন্য ৮০০ ইউরো খরচ করলেই হয়৷ তবে চ্যাপেল বানাতে চাইলে প্রায় চার হাজার ইউরোর মতো দাম দিতে হয়৷
প্রতিযোগিতা
গ্রামের তরুণরা যেহেতু দেশের বাইরে থেকে অনেক টাকা পাঠান, তাই কার চ্যাপেল কত বড় সেটি নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা যায়৷