1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবাইকে পাস করানোর পর ভর্তি নিয়ে চিন্তা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৮ অক্টোবর ২০২০

এবার করেনার কারণে উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) সবাই পাস৷ জেএসসি এবং এইচএসসির ফল মূল্যায়ন করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে৷ কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন কোন পদ্ধতিতে?

https://p.dw.com/p/3jdh8
ফাইল ছবিছবি: Abdullah Al Momin/bdnews24.com

এই ‘অটোপাস’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে৷ তবে তারাও বলতে পারছেন না এর বিকল্প কী হতে পারতো৷ তাই তারা এটাকে দেখছেন মন্দের ভালো হিসেবে৷

যাদের জেএসসি এবং এইচএসসিতে ফল ভালো তারা অনেকটা নির্ভার আছেন৷ তারা মনে করেন, তাদের ফলাফল তো নতুন এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ভালোই হবে৷ কিন্তু যারা ওই দুইটি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল করতে পারেননি, এইচএসসিতে ভালো করার আশায় ছিলেন, তারা অনেকটাই হতাশ৷ তাদের মনে এখন ভালো করার সুযোগ না পাওয়ার হতাশা৷

এরকমই একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক হুয়েরি ফারহানা মিমি৷ তার ছেলের রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল৷ এই অভিভাবক বলেন, ‘‘আমার এবং আমার ছেলে- দুজনেরই মন খারাপ৷ এসসসি পরীক্ষার সময় আমি নিজেই অসুস্থ ছিলাম ৷ ফলে আমার ছেলে এ পেয়েছে৷ কিন্তু এ প্লাস পায়নি৷ এবার সে ভালো করে পড়াশুনা করেছিল৷ আশা ছিল এ প্লাস পাবে, এসএসসি'র ঘটাতি কাটিয়ে উঠবে৷ কিন্তু সেই সুযোগটিই আর পেলো না৷’’

তার কথা, ‘‘যে কোনো উপায়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার কি কোনো উপায় ছিল না? সব কিছুই তো খুলে গেছে৷ আমার মনে হয় আন্তরিক হলে পরীক্ষা নেয়া যেতো৷ তারপরও মনে করি, এটাই কপালে লেখা ছিল৷’’

আমার মনে হয় আন্তরিক হলে পরীক্ষা নেয়া যেত: হুয়েরি ফারহানা মিমি, শিক্ষার্থীর অভিভাবক

এইচএসসির ফল নির্ধারণের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি একটা ধারণা দিয়েছেন৷ কিন্তু সেটা নিয়ে আরো কাজ করার আছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ৷ তিনি বলেন, ‘‘সবাই পাস, সেটা তো বুঝলাম৷ কিন্তু গ্রেডিং-এর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে৷ জেএসসি ও এইচএসসিকে সমান গুরুত্ব দেয়া হবে কিনা, আবার বিষয়ভিত্তিক করা হবে কিনা, তা নিয়ে এখনো কাজ করার আছে৷ মন্দের ভালো হিসেবে এটাকে কতটা পারফেক্ট করা যায় সেই চেষ্টা করা উচিত৷’’

মূল্যায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছে৷ এখন মোটা দাগে বলা হলেও এই কমিটিই চূড়ান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি ঠিক করবে৷

ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘‘এখনো অনেক সময় আছে৷ তাই কমিটির উচিত হবে শিক্ষার্থীরা যাতে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেভাবে মূল্যায়ন করা৷’’

তবে এখন যে প্রশ্নটি সামনে আসছে তা হলো এই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে কোন পদ্ধতিতে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ভুঁইয়া জানান, ‘‘ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি এবং এইচএসসির ফলাফল দুইভাবে বিবেচনা করা হয়৷ ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা এবং ভর্তি পরীক্ষার পর মেধা তালিকা তৈরি৷ আমার কথা হচ্ছে, মেধা তালিকা তৈরি করার ক্ষেত্রে এবার এসএসসি ও এইচএসরি ফলাফলকে বিচেনায় নেয়া ঠিক হবে না৷’’

মন্দের ভালো হিসেবে এটাকে কতটা পারফেক্ট করা যায় সেই চেষ্টা করা উচিত: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও একই কথা বলেন৷ তার মতে, ‘‘এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে৷ আর সেটা করার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের৷ পরীক্ষার ফলফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেয়ার কোনো নির্দেশনা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় সেটা মানতে বাধ্য নয়৷’’

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এরইমধ্যে সেশন জট তৈরি হয়েছে৷ প্রথম বর্ষে কবে ভর্তি নেয়া যাবে তা নিশ্চিত নয়৷ আর ভর্তি পরীক্ষা অনলাইনে, না সরাসরি হবে তা-ও ঠিক হয়নি৷ সবকিছু নির্ভর করছে পরবর্তী করোনা পরিস্থিতির ওপর৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান তাই বললেন সবকিছু জানতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে, ‘‘এবারের ভর্তি পরীক্ষা কী পদ্ধতিতে হবে তা জানতে আরো অপেক্ষা করতে হবে৷’’ এই ব্যাপারে জেনারেল অ্যাডমিশন কমিটি, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, ডিনস কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি৷