শিশু এমাদের ভাগ্য বদলে দিল একটি ছবি
জুনের ৭ তারিখ ইরানের সংসদে হামলা চালিয়েছিল চার বন্দুকধারী ও আত্মঘাতী হামলাকারী৷ সেই সময়কার একটি ছবি বদলে দিয়েছে এক শিশুর ভাগ্য৷
এই সেই ছবি
হামলা থেকে বাঁচাতে এক নিরাপত্তা কর্মী এক শিশুকে উঁচু জায়গা থেকে নীচে আরেকজনের কাছে দিচ্ছেন৷ দুই বছর বয়সি এই শিশুর নাম এমাদ৷ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছবিটি বহুল ব্যবহৃত৷
মায়ের সঙ্গে সংসদে
মিউকোপলিসেকারিডোসিস (এমপিএস) নামে বিরল এক রোগে আক্রান্ত শিশু এমাদ৷ ফলে তার শরীর প্রয়োজনীয় এনজাইম উৎপাদন করতে অক্ষম৷ চিকিৎসার জন্য সহায়তা পেতে হামলার দিন মায়ের সঙ্গে সংসদে গিয়েছিল এমাদ৷
শেষ চেষ্টা
এমাদের মা জাহরা খোরাসানি রয়টার্সকে জানান, ছেলের চিকিৎসায় ইতিমধ্যে তাঁরা সব সঞ্চয় শেষ করে ফেলেছেন৷ পরিচিত সম্ভাব্য সবার কাছে অর্থ ধার নিয়েছেন৷ এখন আর কেউ তাঁদের ধার দিতে চান না৷ তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে সাহায্যের আশায় সেদিন ছেলেকে নিয়ে সংসদে গিয়েছিলেন৷
হামলার দিনের বর্ণনা
এমাদের মা জানান, হামলা শুরুর সময় তিনি ছেলেকে নিয়ে সংসদের অভ্যর্থনা কক্ষে বসে ছিলেন৷ হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ পেয়ে ছেলেকে নিয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন৷ এক পর্যায়ে এক নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে দেন৷ এরপর তাঁদের বের হয়ে যেতে সহায়তা করেন৷ রোগের কারণে এমাদ কানে কম শোনায় গোলাগুলির শব্দ ছেলেকে আতংকিত করে তোলেনি বলে জানান তিনি৷
বাবা বেকার
এমাদের বাবার নাম মোহাম্মদ হোসেইন এসমাইলনেজাদ৷ দুই মাস ধরে তিনি বেকার৷ এক পায়ে পঙ্গুত্বের কারণে তাঁর চাকরি পেতেও সমস্যা হচ্ছে৷
এমাদের পরিবার
মা-বাবা ছাড়াও এমাদের আরও দুই ভাই-বোন আছে৷ ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর গোরগানের বাসিন্দা এই পরিবার৷
প্রেসিডেন্টের সাহায্য কামনা
ছেলে এমাদকে নিয়ে মা যখন সংসদে গিয়েছিলেন, সেদিন বাবা গিয়েছিলেন ডাকঘরে৷ ছেলের চিকিৎসায় সহায়তা চেয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট বরাবর একটি চিঠি পাঠাতে গিয়েছিলেন তিনি৷ ‘‘সেইদিন আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম৷ তুমি যদি সমাধান দাও, ভালো৷ না হলে আমি আর কারও সহায়তা চাইব না,’’ রয়টার্সকে বলেন এসমাইলনেজাদ৷
সুযোগ এসেছে
এমাদকে উদ্ধারের ছবি ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার পর ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সরকারি খরচে তার চিকিৎসা করানোর অঙ্গীকার করেছেন৷ প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হবে বলেও এমাদের পরিবারকে জানিয়েছেন ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
সমস্যার অর্ধ সমাধান
এমাদের বাবা বলেন, ছবির কারণে তাঁর সমস্যার অর্ধেক সমাধান হয়েছে৷ এখন হয়ত তাঁর ছেলের চিকিৎসা হবে৷ কিন্তু বড় সমস্যা হচ্ছে, তিনি নিজে এখন বেকার৷ আর থাকার মতো জায়গাও নেই তাঁদের৷