শহিদদের স্মরণে পপি ফুল
পপি ফুলের বীজ থেকে আফিম তৈরি হয়৷ তাই আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে এর চাষ নিষিদ্ধ৷ অথচ ব্রিটেনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতীক হিসেবে এই ফুলটি লাগানো হয়েছিল রাজপ্রাসাদের পাশের বাগানে৷
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শহিদদের স্মরণ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন ৮ লাখ ৮৮,২৪৬ জন ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ সেনা৷ তাঁদের স্মরণে ঠিক ততগুলো হাতে তৈরি কৃত্রিম পপি লাগানো হয়েছিল ঐতিহাসিক লন্ডন টাওয়ারের পাশের বিশাল উদ্যানে৷ ১১ নভেম্বর শেষ হয় এই প্রদর্শনী৷
রক্ত সমুদ্র
প্রায় ১৬ একর জমিতে পপি লাগানোয় লন্ডন টাওয়ারের আশপাশ যেন রক্ত সমুদ্রে পরিণত হয়েছিল৷ ১৬টি ফুটবল মাঠ বা ২৫০টি টেনিস কোর্টের সমান জায়গায় লাগানো হয়েছিল ফুলগুলো৷
রাজ পরিবার
পপি বাগান পরিদর্শন করেছিলেন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷ সাথে ছিলেন প্রিন্স উইলিয়ামস ও হ্যারিসহ পুরো রাজ পরিবার৷
প্রধানমন্ত্রীর প্রদর্শনী দর্শন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও এই পুষ্প সমুদ্র দেখতে গিয়েছিলেন৷ এসময় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি করে ফুল লাগান তাঁরা৷
দীর্ঘ সময়ের কাজ
পুরোনো পদ্ধতিতে প্রতিটি গাছ লাগাতে স্বেচ্ছাসেবীদের দিনে তিন শিফটে ২৩ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷ মাটির তৈরি ফুল, ইস্পাতের ডাল আর কাঠামো তৈরি করতে এই বিপুল সময় ব্যয় হয় তাদের৷
যুদ্ধাহতদের তহবিলে
প্রায় ৪০ লাখ পর্যটক এই প্রদর্শনীতে এসেছিলেন৷ আর এদের বেশিরভাগই ফুল কিনেছেন, যা যুদ্ধে আহত সৈনিকদের ত্রাণ তহবিলে জমা দেয়া হবে৷
পপি কেন স্মারক?
১৮০৩ থেকে ১৮১৫ সালের মধ্যে ‘নেপোলিয়নিক যুদ্ধে’ নিহত সৈন্যদের কবরের (বর্তমানে বেলজিয়ামের অংশ ‘ফ্ল্যান্ডার্স’ এলাকায় অবস্থিত) চারপাশে লাল পপি জন্মেছিল৷ অনুর্বর হলেও যুদ্ধের কারণে সেখানকার মাটিতে লাইম এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়া পপি-র জন্মের কারণ৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় লিখিত একটি বিখ্যাত কবিতায় এই লাল পপি স্থান পায়৷ সেই থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে প্রতীক হিসেবে পপি-র ব্যবহার হয়ে আসছে ব্রিটেনে৷
প্রদর্শনীর প্রভাব
প্রদর্শনী শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু যারা এই রক্তাক্ত সমুদ্র দেখেছেন তাদের স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে এটি৷