1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেশান্তরী মানুষ

১৪ এপ্রিল ২০১২

গৃহযুদ্ধের ফলে গত এক বছরে সিরিয়া থেকে দেশান্তরী হয়েছে অগণন মানুষ৷ বিশেষ করে, গুলি, শেল আর ট্যাংক থেকে ছোঁড়া গোলায় আহত মানুষ চিকিৎসার আশায় দলে দলে ছুটে গেছে প্রতিবেশী দেশ লেবাননে৷

https://p.dw.com/p/14dta
ছবি: Reuters

মোহাম্মেদ মাজেন৷ ২৫ বছর বয়সী এই সিরীয় তরুণ পেশায় দাঁতের ডাক্তার৷ সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের উপকূল ঘেঁষে তার বাড়ি৷ কিন্তু গৃহযুদ্ধ যখন ছড়িয়ে পড়ে দেশময়, তখন নিজের ঠিকানা ছেড়ে মাজেন-ও নাম লেখায় উদ্বাস্তুর খাতায়৷

মাজেনের মতই আরো অজস্র মানুষ নিজের ভিটে ছেড়ে দেশান্তরী হয়েছে৷ জাতিসংঘ বলছে, লেবানন, জর্ডান ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে উদ্বাস্তু হয়ে আছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার সিরীয় নাগরিক৷

তবে, বলতে হবে, মাজেনের ভাগ্য ভাল৷ কারণ সে সুস্থ আছে৷ গুলি বা শেল বা ট্যাংক থেকে ছোঁড়া গোলায় উড়ে যায় নি তার হাত বা পা বা শরীরের অন্য কোনো অংশ৷

আব্দেল আহমেদ রামেন এর বাস্তবতাটা তো আরো কঠিন৷ গুলি লাগার পর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়ায় তার পায়ে ভয়ানক ঘা হয়ে গেছে৷ সে এখন শুয়ে আছে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার এক হাসপাতালের বিছানায়৷

আহত রামেন এর মতো আরো হাজারও মানুষ একটুখানি চিকিৎসার আশায় ছুটে আসছে লেবাননে৷ গুলিতে যার শরীরের কোনো অংশ অকেজো হয়ে গেছে, শেল লেগে যার উড়ে গেছে কোমর থেকে শরীরের বাকি অংশ, আহত হবার পর ইনফেকশন হয়ে যার শরীরে পচন ধরেছে; যে ব্যথায় গোঙাচ্ছে অহর্নিশ – এমন মানুষেই ভরে আছে হাসপাতালের বিছানা, মেঝে ও বারান্দা৷

অবশ্য আহতরা যেখানে আছে, সেগুলোকে প্রচলিত অর্থে হাসপাতাল বলা ভুল হবে৷ আর তিল ধারণের ঠাঁই নেই লেবাননের উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে৷ তাই, সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা মাজেনের মতো কিছু উদ্বাস্তু ডাক্তার ও অন্য পেশার মানুষ মিলে গড়ে তুলেছে কিছু অস্থায়ী হাসপাতাল৷

অপর্যাপ্ত ওষুধ, ডাক্তারি জিনিষপত্রের অভাব, স্থান সংকুলান, অর্থাভাবের মধ্যেই চলছে চিকিৎসা কেন্দ্রের কাজ৷

মানুষের দানের টাকা ও ত্রাণের সাহায্যই এসব কেন্দ্রের মূল ভরসা৷

ডয়চে ভেলের লেবানন প্রতিনিধি ডন ডানকান-কে ডাক্তার মোহাম্মেদ মাজেন বলেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে আহত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে৷''

লেবাননে থাকা সিরীয় উদ্বাস্তুদের সংস্থার প্রধান আহমেদ মুসা বলেছেন, ‘‘আমরা অন্তত ১০ হাজার উদ্বাস্তু লেবাননে রয়েছি৷ খাদ্য, ওষুধ কিছুই আমাদের নেই৷ আন্তর্জাতিক সাহায্য ছাড়া আমাদের টিকে থাকা অসম্ভব৷''

প্রতিবেদন: ডন ডানকান/আফরোজা সোমা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন