1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘকেও জবাবাদিহি করতে হবে: টিআইবি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ ডিসেম্বর ২০১৯

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের ঘটনায় জাতিসংঘকেও জবাবদিহি করতে হবে, কারণ তারা এই নিধনযজ্ঞের প্রস্তুতির বিষয়ে জেনেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়নি৷

https://p.dw.com/p/3UHJx
Schweiz UN-Geberkonferenz Rohingya Flüchtlinge
ছবি: Reuters/D. Balibouse

টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের ঘটনায় জাতিসংঘকেও জবাবদিহি করতে হবে, কারণ তারা এই নিধনযজ্ঞের প্রস্তুতির বিষয়ে জেনেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়নি৷

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ‘মিয়ানমার থেকে নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) বলপূর্বক বিতাড়ন, বাংলাদেশে অবস্থান, সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরনের উপায়' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি৷ ঢাকায় টিআইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেই অনুষ্ঠানে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘এই ধরনের সংকটে জাতিসংঘের স্বার্থ আছে৷ প্রমান আছে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাসংকাট প্রতিরোধে তার ভূমিকা পালন করেনি৷'' পরে এর ব্যাখ্যায় ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমারে যে জাতিগত নিধন হচ্ছে এটা  একদিনের বিষয় নয়৷ আর এই জাতিগত নিধনের তথ্য যে জাতিসংঘের কাছে ছিল না, তা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য নয়৷ এবং এটা এখন জানা যাচ্ছে যে, জাতিসংঘের কাছে তথ্য ছিল৷ মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা যে জাতিগত নিধন শুরু করবে তার সুনির্দিষ্ট তথ্যও জাতিসংঘের কাছে ছিল৷ এসব তথ্য থাকার পরও জাতিসংঘ কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি৷''

ড. ইফতেখারুজ্জামান

তিনি মনে করেন, ‘‘মিয়ানমারের বিষয়টি যেহেতু আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েছে তাই জাতিগত নিধনের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিচারই যথেষ্ট নয়৷ জাতিগত নিধনের প্রস্তুতির বিষয়ে যারা জানার পরও ব্যবস্থা নেয়নি, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে৷ কারণ, জাতিসংঘের দায়িত্ব শুধু মানবিক সহায়তা করা নয়৷ বিভিন্ন দেশে সহিংসতা প্রতিরোধ করাও তাদের কাজ৷ জেনোসাইডের আগাম তথ্য থাকার পরও তারা তা প্রতিরোধে কাজ করেনি৷''

সকালের অনুষ্ঠানে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের এখনকার মানবিক সহায়তার ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জাতিসংঘ নিজেদের ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা মেনে চলে না৷'' এর ব্যাখ্যায় তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জাতিসংঘের যে সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে, তাদের পরিচালন ব্যয় ৩ থেকে ৩২ শতাংশ৷ কিন্তু তারা তো আর সরাসরি কাজ করে না৷ যাদের কাজ দেয় তাদেরও পরিচালন ব্যয় আছে৷ সুতরাং পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি৷ আর এটা তারা প্রকাশ করে না৷ আমরা কয়েকবার চেয়ে পেয়েছি৷''

এ বিষয়ে টিআইবি'র গবেষক দলের প্রধান মো. শাহানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জাতিসংঘ অপারেশন কস্ট এবং প্রোগ্রাম কস্ট স্বপ্রনোদিতভাবে উন্মূক্ত করে না৷ এইসব ক্ষেত্রে তাদের স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে৷ এটা প্রশাসনিক এবং আর্থিক দুই দিকেই৷ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তারা মানবিক সহায়তা এবং প্রশাসনিক কাজে যে খরচ করে তা উন্মূক্ত নয়৷ কেউ চাইলেও সেটা তাদের পাবলিক ডোমেইনে পায় না৷ এটা তারা দেয় না৷  আমরা তাদের কাছে চেয়ে অবশ্য পেয়েছি৷ আর তা থেকে দেখতে পেয়েছি  জাতিসংঘের যে সাতটি অঙ্গসংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে, তাদের স্বচ্ছতা নেই৷ ইউএনএইচসিআর,  ডাব্লিউএইচও, ইউএন ওমেন, ইউনিসেফসহ আরো যারা কাজ করে তারা কিন্তু সরসরি কাজ করে না৷ তারা আবার অন্য সংগঠনকে ফান্ড দেয়৷ আর যাদের ফান্ড দেয় তারা কতটা আবার প্রশাসনিক এবং মানবিক সহায়তায় খরচ করে তার কোনো ধরনের হিসাবই আমরা পাইনি৷''

মো. শাহানুর রহমান

তিনি বলেন, ‘‘একটা অভিযোগ আছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক যে সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে, তাদের একটা অংশের পরিচালন ব্যয় কর্মসূচি ব্যয়ের চেয়ে বেশি৷ অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের ৮২ ভাগই অপারেশনাল কস্ট৷ আর মাত্র ১৮ ভাগ তারা মানবিক সহায়তায় ব্যয় করে৷ আমরা জাতিসংঘের ওই সাতটি অঙ্গসংস্থা নিয়ে তাদের দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী গবেষণা করেছি৷ তাতে দেখা যায়, ইউএন উইমেনের পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি৷ ৩২ দশমিক ৬ ভাগ৷ জাতিসংঘ শিশু তহবিলের ৩ শতাংশ৷ কিন্তু তারা তো সরাসরি কাজ করে না৷ তারা আবার অন্য সংগঠনকে কাজ দেয়৷ তাদেরও তো পরিচালন ব্যয় আছে৷ ফলে পরিচালন ব্যয়ই বেশি৷''

টিআইবি তাই স্বচ্ছতার জন্য জাতিসংঘ  রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা খাতে যে খরচ করছে, তা কোন খাতে কত, কর্মসূচির জন্য কত আর পরিচালনার জন্য কত ব্যয় করে সেসব তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত করার সুপারিশ করেছে৷

গত বছরের ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান