রাজনৈতিক সংকট তীব্রতর হচ্ছে আইভরি কোস্টে
১১ ডিসেম্বর ২০১০তবে নির্বাচনের ফলাফলে বিজয়ী প্রার্থী আলাসানে ওয়াতারার পক্ষেই রয়েছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সম্পূর্ণ সমর্থন৷
২৮ নভেম্বরের ফলাফলকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে প্রথমে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন লঁরা গবাগো৷ গঠন করেন নতুন মন্ত্রিসভা এবং সরকার৷ আবিদজানের প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে তাঁর অনুগত কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশ চালানোর চেষ্টা করছেন গবাগো৷ সাথে রয়েছে প্রধানত খ্রিষ্টান অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলের জনসমর্থন৷ অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে আলাসানে ওয়াতারার বিজয়৷ ফলে তিনিও প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন৷ ঘোষণা করেন পৃথক মন্ত্রিসভা৷
সাবেক বিদ্রোহী নেতা গুইলাওমে সোরোকে নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন ওয়াতারা৷ তাঁর পক্ষে রয়েছে মুসলমান জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চল৷ তবে ওয়াতারার পক্ষে রয়েছে জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব সম্প্রদায়৷ প্রথমত গবাগো এবং তাঁর সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ৷ গবাগোর প্রতি আহ্বান জানানো হয় অবিলম্বে ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত ওয়াতারার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের৷ এমনকি জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সেদেশ ছেড়ে আসারও নির্দেশ দেওয়া হয়৷ কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করায় গবাগোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় আফ্রিকান ইউনিয়ন৷
ওয়াতারার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত আইভরি কোস্টের সদস্যপদ স্থগিত করে এইউ৷ এছাড়া কেনিয়া এবং ফ্রান্সও গবাগোকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আইভরি কোস্টের পরিস্থিতির প্রতি নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রাখছে বলে ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি৷ এছাড়া গবাগোকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য অন্যান্য দেশের সাথে একযোগে তাঁর উপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে অ্যামেরিকা, বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ ক্রাউলি আরো জানান, ‘‘গবাগোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লিখেছেন, এটা সুস্পষ্ট যে, তিনি যদি ভুল পদক্ষেপ নেন তাহলে তাঁর এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের দিকে এগুতে হবে৷''
এই অবস্থায় কিছুটা নরম সুর শোনা গেছে গবাগোর কণ্ঠে৷ প্রতিপক্ষকে আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছেন গবাগো৷ কিন্তু এখন আলোচনার টেবিলে যেতে নারাজ ওয়াতারা পক্ষ৷ তাঁর মনোনীত প্রধানমন্ত্রী গুইলাওমে সোরো ঘোষণা দিয়েছেন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর দপ্তর বুঝে নেবেন তিনি৷ এমন সংকটপূর্ণ অবস্থায় প্রায় দুই হাজার মানুষ আইভরি কোস্ট থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রতিবেশী দেশ লাইবেরিয়া এবং গিনিতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক