রক্তের রং রংধনু!
মানুষের রক্তের রং লাল বলেই যে সব প্রাণীর রক্তের একই লাল হবে তা তো নয়৷ প্রাণী জগতে রক্তের রং কিন্তু রংধনুর মতোই বিচিত্র৷
নীল রক্ত
সম্ভ্রান্ত, প্রভাবশালী কিংবা উন্নাসিক বোঝাতে অনেক সময়ই ‘নীল রক্ত’ শব্দজোড়া ব্যবহার করি আমরা৷ কিন্তু অক্টোপাসের ক্ষেত্রে নীল রক্তের ব্যাপারটা জৈবিকভাবেই সত্যি৷ চিংড়ি ও স্কুইডের মতো অক্টোপাসের শরীরেও কপারের উপস্থিতি অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়ার কারণে তার ‘রক্ত নীল’ হয়েছে৷ মানুষের রক্তে লোহা এই বিক্রিয়ার কাজটি করে৷ ফলে মানুষের রক্ত বেশি লালচে দেখায়৷
সবুজ রক্ত
নিজের সবুজ রক্তের জন্য নিউ গিনির এই গিরগিটি তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে৷ আপেলের মতো তাদের চকচকে বর্ণময় সবুজাভ চামড়ার জন্যও এই রক্তের ভূমিকা রয়েছে৷ এদের সবুজ পিত্ত মূলত লোহিত রক্তকণিকাকে শাসন করে বলে রক্তই সবুজ হয়ে যায়!
সাদা রক্ত
অ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ মহাসাগরের মাছ ‘ক্রোকোডাইল আইসফিশ’-এর রক্তের রং সাদা৷ এই প্রাণীটির রক্তনালী দিয়ে যা প্রবাহিত হয়, সেগুলো আসলে স্বচ্ছ, কেননা, এগুলোতে লোহিত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন এবং নীল কণিকা হিমোসায়ানিন নেই৷ কেন নেই? কেননা, অ্যান্টার্কটিকের ঠান্ডা পানিতে উষ্ণ অঞ্চলের পানির চেয়ে অনেক বেশি অক্সিজেন ধরে৷ যার অর্থ দাঁড়ায় মাছটিকে শরীরে বাড়তি অক্সিজেনের জন্য প্রোটিন ভাঙতে হয় না৷
হলুদ রক্ত
এই সবুজ প্রাণীটির নাম ‘সি কিউকাম্বার’, বাংলায় ‘সবুজ শসা’৷ দেখতে সবুজ হলেও এর রক্ত কিন্তু হলুদ৷ এর রং কেন হলুদ তা সহজে বলা শক্ত৷ তবে সংক্ষেপে এটুকু বলা যায়, ভ্যানাডিয়াম নামের যে প্রোটিন রক্তে অক্সিজেন জমাটবদ্ধ করার কাজ করে, সেটাই এর পেছনে রয়েছে৷
বেগুনি
কিছু সংখ্যক সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণীর রক্তের রং বেগুনি দেখা যায়৷ উদাহরণ হিসেবে সিপানকুলিড বা পিনাট ওয়ার্মের কথা বলা যেতে পারে৷ অক্সিজেনের পরিণত হওয়ার জন্য যখন এদের প্রোটিন ভাঙতে শুরু করে তখন এদের রক্ত বেগুনি রং ধারণ করে৷ আবার কখনো গোলাপিও৷
লাল
লৌহ প্রোটিনের আধিক্য, মানে হিমোগ্লোবিন থাকায় মানুষের রক্ত লাল- এ কথা আমরা সবাই জানি৷ এটি যখন অক্সিজেন নেয়, তখন রক্ত লাল হয়ে যায়৷ সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্তই লাল৷