1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যেমন আছেন ইটালির অনথিভুক্ত কৃষিকর্মীরা

২৪ জুলাই ২০২০

বিদেশ থেকে ইটালিতে এসে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশীই অ-নথিভুক্ত কৃষিকর্মী হিসাবে কাজ করেন৷ সরকার তাদের বৈধতা দেবার কাজে নামলেও তা সহজ হচ্ছে না৷

https://p.dw.com/p/3fsRz
Italien Umgang mit illegalen Migranten | Protest in Rom
ছবি: DW/E. Oddone

২০১২ সালে নাইজেরিয়া থেকে ইটালি এসে পৌঁছান ৪১ বছর বয়সি মোসের আইসাক ওসাজুয়া৷ ইটালির মাটেরা অঞ্চলে অনথিভুক্ত কৃষিকর্মী হিসাবে ২০১৭ পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি৷ মানবিক দিক বিবেচনা করে ও নাইজেরিয়ায় দাঙ্গার পরিবেশ থাকায় তাকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইটালিতে থাকতে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু এই কাগজের মেয়াদ ফুরোনোর পর থেকেই ওসাজুয়ার জীবনে বাড়তে শুরু করে জটিলতা৷

ওসাজুয়ার মতোই এমন আরো অনেক কৃষিকর্মী রয়েছেন ইটালিতে, যাদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করতে অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু গত জুন মাসের একটি প্রকল্প তাদের কিছুটা আশা দেখায়৷ বলা হয়, করোনা সংকটের মাঝে অন্তত দুই লাখ অ-নথিভুক্ত কৃষিকর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে৷ এই প্রকল্প ওসাজুয়ার মতো কর্মীদের নিয়োগ করবে সরকারি কৃষিখাতেই,, যা করোনা সংকটের কারণে এখন ধ্বসে যাওয়ার উপক্রম৷

টাকার বিনিময়ে বৈধতা

কিন্তু এই নিযুক্তি পেতে গেলেও মোটা অঙ্কের ঘুষ চান অনেক নিয়োগকর্তারা, বলেন ওসাজুয়া৷ তিনি বলেন, ‘‘একজন আমার কাছে দেড় হাজার ইউরো (প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি টাকা) চান, আরেকজন এক হাজার ২০০ ইউরো (প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার টাকা)  চান, আরেকজন ১ হাজার ইউরো (প্রায় এক লাখ টাকা) চান৷ কিন্তু এত টাকা আমার কাছে নেই৷ মিলান অঞ্চলে এই ঘুসের অঙ্ক পাঁচ হাজার ইউরো (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) পর্যন্ত হয়৷ ঘুস না দিলে বৈধতা পেতে যা কাগজপত্র লাগে, তা আমরা পাবো না৷''

কিন্তু সরকারের পক্ষে ইটালির কৃষিমন্ত্রী টেরেসা বেলানোভা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যারা এসব বলছে, তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এসব ছড়াচ্ছে৷ বা তারা হয়ত জানে না বাস্তব কেমন৷ সিস্টেমের বাইরে থাকার ফলে এই অ-নথিভুক্ত কর্মীরা যে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তা হয়ত অভিযোগকারীদের নজরে আসছে না৷ আমিও জানি যে, এই প্রকল্প নির্ভুল নয়৷'' টেরেসার মতে,  প্রতি দিন দুই হাজারের মতো অ-নথিভুক্ত কৃষিকর্মীদের আবেদন গৃহীত হচ্ছে৷

কীভাবে কাগজ পাবেন এই কর্মীরা?

বর্তমানে অ-নথিভুক্ত কর্মীদের বৈধ পারমিট পাবার দুটি পথ রয়েছে৷ এক, ৫০০ ইউরো দিয়ে একটি ফর্ম জমা দিয়ে নথিভুক্ত হওয়া৷ সেই ফর্মে নিয়োগকর্তাকে জানাতে হবে যে, এই কর্মীর সাথে তারা হয় আগে কাজ করেছেন বা ভবিষ্যতে কাজ করতে ইচ্ছুক৷

দুই, ৩১ অক্টোবর ২০১৯-এ যাদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে,  তারা সরাসরি নথিভুক্ত হবার জন্য আবেদন করতে পারেন৷ এর জন্য তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, এতদিন ধরে তারা বৈধ কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন৷ এই দ্বিতীয় পথটি অনেক অ-নথিভুক্ত কর্মীদের জন্য কার্যকর নয়৷

মানবাধিকার আইনজীবী আঙ্গেলা মারিয়া বিটন্টি প্রথম এই ব্যবস্থার সমালোচনা করেন৷ তাঁর মতে, বাস্তব অবস্থা খুব কষ্টকর হওয়ায় অনেক সময় এই কর্মীরা নথি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন৷ দেশের বাড়িতে জমিজমা বিক্রি করে হলেও ঘুস দিয়ে হাতে বৈধ কাগজ পেতে চান তারা৷

অন্যান্য আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যা এড়ানো যেতো যদি ইটালির সাড়ে পাঁচ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সেখানে থাকার অনুমতি দিতো সরকার৷ তাহলে এরকম অবৈধ উপায়ে কাগজ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠতেন না তারা৷

এলিসা ওডোনে/এসএস