যেন ফিরে এসেছে সেই সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন
৯ আগস্ট ২০২১রোববার মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরজুড়ে দেখা যায় প্রতিবাদের দৃশ্য৷ ১৯৮৮ সালের মতো আবার সামরিক সরকারের বিরোধিতায় পথে নামছেন হাজার হাজার মানুষ৷ তেত্রিশ বছর আগে যেভাবে সামরিক বাহিনী কড়া হাতে দমন করেছিল জনগণের প্রতিবাদ, তা-ও স্মরণ করা হচ্ছে চলমান প্রতিবাদের মধ্যে৷
ইয়াঙ্গন, মান্দালায়, সাগায়িংসহ মিয়ানমারের বেশ কিছু শহরে দেখা যায় বিক্ষোভ সমাবেশ, জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম৷ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্ষমতার দখল নেয় সামরিক জান্তা৷ অং সান সু চি'র নেতৃত্বাধীন সরকারকে সরিয়ে সামরিক বাহিনী যেভাবে ক্ষমতায় আসে, তার প্রতিবাদে পথে নামতে শুরু করে জনতা৷
থেট নাইং নামের এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা ডিপিএকে বলেন, ‘‘তেত্রিশ বছর আগে আজকের দিনে সামরিক বাহিনীর হাতে বহু সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারান৷ তারা আজও মানুষ মেরে চলেছে৷''
নাইংসহ প্রতিবাদীরা আজও স্মরণ করেন সেই সব হাজার হাজার মানুষদের, বিশেষ করে সেই শিক্ষার্থীদের, যারা ১৯৮৮ সালে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল৷
বদলাচ্ছে বিক্ষোভের ধরন
তিন দশক আগের সময়ের মতো এখনও সামরিক বাহিনী সহিংস পদ্ধতিতে দমন করছে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, অভিযোগ স্থানীয়দের৷ প্রতিবাদীদের মতে, নয়শরও বেশি মানুষ মারা গেছেন সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ফলে৷
কিন্তু তারপরও থামানো যায়নি প্রতিবাদ৷ ফ্ল্যাশ মবের মতো নতুন পন্থার সাহায্য নিচ্ছে প্রতিবাদীরা, যাতে করে খুব দ্রুত নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করা যায়৷ এই পন্থায় প্রতিবাদ করে জনগণের ভিড়ে মিশে যাওয়া সহজ বলে কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়ছেন না অনেকে, জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম৷ এছাড়া নানা ধরনের অনলাইন প্রচারণা ও সাংকেতিক প্রতিবাদ চালাচ্ছেন তারা৷ বর্তমান প্রতিবাদের জনপ্রিয় চিহ্ন হয়ে উঠেছে ‘আট আঙুলের স্যালুট'৷ চলমান প্রতিবাদে দেখা যাচ্ছে জনগণের হাতে ধরা ব্যানার, সেখানে লেখা ‘১৯৮৮ সালে ঝরা রক্তের ঋণ শোধ হবে ২০২১ সালে'৷
নতুন প্রজন্মের পুরোনো লড়াই
তেত্রিশ বছর আগে বিক্ষোভরত জনতার উদ্দেশ্যে গুলি চালায় সামরিক বাহিনী, বন্দি করা হয় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে৷
সেই প্রতিবাদ থেকে উঠে আসেন অং সান সু চি, গ্রেপ্তারও করা হয় তাকে৷ গণতন্ত্রকামী জনতার বিক্ষোভ এখনো চলছে৷
মান্দালায় শহরে প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করা কো সাই উইন সংবাদসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘১৯৮৮ সালে আমাদের দেশ অনেক কিছু হারিয়েছে, ত্যাগ করেছে, অনেকে জীবন হারিয়েছেন৷ কিন্তু স্বৈরাচার এখানে এখনও জীবিত৷''
এসএস/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)