যুক্তরাষ্ট্রে জেল্যান্ড ওয়াকার হত্যা: পুলিশের দায়মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জেল্যান্ড ওয়াকার পুলিশের গুলিতে মারা যান গত বছরের ২৭ জুলাই। প্রায় এক বছর তদন্তের পর গ্র্যান্ড জুরি পুলিশকে সব অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি দেয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ওহায়োর আক্রোন শহরের মানুষ।
যেভাবে শুরু
আক্রোন শহরে গভীর রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন জেল্যান্ড। গাড়ির পেছনের একটি লাইট ছিল ভাঙা, লাইসেন্স প্লেটও দেখা যাচ্ছিল না। সংকেত দেয়া সত্ত্বেও না থামায় পুলিশ তাকে তাড়া করতে শুরু করে।
থামানোর চেষ্টা
পুলিশের তাড়ায় পালানোর এক পর্যায়ে জেল্যান্ড গাড়ি থামিয়ে পালাতে শুরু করেন। তখন পুলিশ স্টান গান ব্যবহার করে তাকে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়।
গুলিতে মৃত্যু
এক পর্যায়ে আট জন পুলিশ কর্মকর্তা তাড়া করেন জেল্যান্ডকে। গাড়ি থেকে নেমে তিনি পালানোর চেষ্টা করার ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই সব পুলিশ কর্মকর্তা গুলি করতে শুরু করেন। টানা ৬-৭ সেকেন্ড গুলি চালান তারা। প্রায় ৯০ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তে জেল্যান্ডের শরীরে ৪৬টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
কারণ হাত দিয়ে গুলি করার ভাণ!
পুলিশের দাবি, গাড়ি তাড়া করা অবস্থায় জেল্যান্ড তাদের দিকে গুলি ছুঁড়েছিলেন। পরবর্তীতে মহাসড়কের সেই জায়গা থেকে গুলির খোসা এবং জেল্যান্ডের গাড়ি থেকে একটি হ্যান্ডগানও উদ্ধার করা হয়। পালানোর সময় জেল্যান্ডের সঙ্গে কোনো বন্দুক ছিল না। কিন্তু পুলিশের দাবি, জেল্যান্ড পালানোর সময় হাত দিয়ে গুলি করার ভাণ করেছিলেন বলেই গুলি চালায় পুলিশ।
বিক্ষোভের মুখে কারফিউ
জেল্যান্ডের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই আক্রোন শহরবাসী প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। পুলিশ দপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। টানা কয়েকদিন ধরে চলার পর আন্দোলন এক পর্যায়ে সহিংস হয়ে উঠতে শুরু করলে ৬ জুলাই কারফিউ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় শহর কর্তৃপক্ষ। ১৭ জুলাই পর্যন্ত ছিল এই কারফিউ।
পুলিশকে অব্যাহতি
জেল্যান্ডের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে কিনা, বিশেষ এক গ্র্যান্ড জুরির সামনে রাখা হয় এই প্রশ্ন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর জুরি সিদ্ধান্ত জানায়, তারা পুলিশের বিরুদ্ধে বেআইনি কিছু করার আলামত পায়নি।
আবার বিক্ষোভ
জুরির এই সিদ্ধান্ত জানার পরপরই আবার প্রচণ্ড বিক্ষোভ শুরু হয় আক্রোন শহর জুড়ে। নানা বয়সের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন জেল্যান্ড হত্যা এবং পরবর্তীতে পুলিশকে দায়মুক্তি দেয়ার প্রতিবাদে। আন্দোলন যাতে সহিংস না হয়ে ওঠে, সেজন্য পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পাবলিক স্কুল বন্ধ
জুরির সিদ্ধান্তে আক্রোন শহরের সব পাবলিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে, আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে সেজন্য নগর ভবন এবং পুলিশ দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভের জন্য স্থানও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।