সরকারকে নাকচ করেনি, দাবি হাসিনার
২৬ জুলাই ২০১৪বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে এসে বৃটেনের কাছ থেকে তার সরকারের বৈধতার সার্টিফিকেট আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন৷''
প্রথমবারের মতো আয়োজিত গার্ল সামিটে অংশ নিতে ২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেন৷ সেসময় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে৷ ঢাকায় ফিরে শনিবার (২৬.০৭.১৪) গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর এই সফর নিয়ে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে৷
সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের অস্বস্তির কথা৷ জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আমার সরকারকে নাকচ করেননি৷ বলেননি আমি প্রধানমন্ত্রী নই৷''
তিনি বলেন, ‘‘ইলেকশন নিয়ে আলোচনা হবেই৷ পার্টিসিপেটরি ইলেকশন, আনকনটেস্টেড... এসব নিয়ে আলোচনা থাকতেই পারে৷ কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ফরোয়ার্ড লুকিং৷''
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তাঁকে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে নিজে ‘রিসিভ' করেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাজ্য সরকারের যদি বাংলাদেশ সরকার সম্পর্কে কোনো দ্বিধা থাকত, তাহলে তাঁকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বারবার ফোন করে দাওয়াত দিতেন না৷''
যুক্তরাজ্য সফরের বাইরেও প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা, ঈদের পর বিএনপির আন্দোলন, জামায়াতের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়৷ সংলাপের সম্ভাবনা শেখ হাসিনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলকে যথাসময়ে যথাযথ ভূমিকা নিতে হয়৷ সেটি তারা (বিএনপি) করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ তাদের ভুলের খেসারত কেন আমাকে দিতে হবে?''
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ধীরগতির যে অভিযোগ উঠেছে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো ধরে ফাঁসি দিতে পারি না৷ দায়িত্ব বিচার বিভাগের৷ জুডিশিয়ারি রায় দিলে রায় কার্যকর করব৷''
এদিকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে এসে বৃটেনের কাছ থেকে তাঁর সরকারের বৈধতার সার্টিফিকেট আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন৷ শেখ হাসিনা ২২ জুলাই বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি (ক্যামেরন) বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচন সম্পর্কে বৃটিশ সরকারের অসন্তোষের কথা স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘ক্যামেরন বলেছেন, কথিত ওই নির্বাচনে জনগণের ভোট ছাড়াই অর্ধেকেরও বেশি আসনে প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে৷ গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে এই ধরনের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়৷''
মাহিদুর বলেন, ‘‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণকে ধোঁকা দেয়ার জন্য বলার চেষ্টা করেছেন যে, এই সাক্ষাত তার অবৈধ সরকারের প্রতি স্বীকৃতি৷ তবে শেখ হাসিনার এই মিথ্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে অফিসিয়ালি একটি প্রেস রিলিজ ইস্যু করা হয়৷ এতে শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার সম্পর্কে ব্রিটেনের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷''