ম্যাডোনা-র রকমফের
অনেকের কাছে তিনি এখনও চূড়ান্ত পপ আইকন, কুইন অফ পপ৷
এক যে ছিল কন্যা
মাডোনা লুইজে চিকোনে-র গানের ক্যারিয়ার আজ ত্রিশ বছরের৷ তাঁর ১৯৮৪ সালে গাওয়া ‘লাইক এ ভার্জিন’ গানটি দুনিয়া মাতায়৷ এমটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে এই গানটি গাওয়ার সময় ম্যাডোনা একটি বিয়ের কেক থেকে কনের সাজে বেরিয়ে নাচেন ও পরে মাটিতে গড়াগড়ি খান৷
ফ্যাশন ডিজাইনারদের অনুপ্রেরণা
ম্যাডোনা কোনোকালেই কোনো সামাজিক কেতা-কায়দার ধার ধারেননি, ফ্যাশনের ক্ষেত্রে তো নয়ই৷ যৌন উদ্দীপনাময়ী গায়িকা হিসেবে তাঁর নাম কতোটা বাস্তব, আর কতোটা তাঁর ও জঁ পল গোটিয়ে-এর মতো ফ্যাশন ডিজাইনারদের সৃষ্টি, তা বলা শক্ত৷ বিশেষ করে ম্যাডোনার প্রখ্যাত বক্ষআবরণীর কথা উঠলে৷
অভিনেত্রী
অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডোনা-র বিশেষ সুনাম নেই৷ নিকৃষ্ট অভিনয়ের জন্য একাধিকবার ‘গোল্ডেন ব়্যাসপবেরি’ (ব্যঙ্গাত্মক) পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন৷ ১৯৯০ সালের ‘ডিক ট্রেসি’ ছবিতে ওয়ারেন বিটি-র বিপক্ষে অভিনয় করেন ম্যাডোনা৷ ফিল্মে তাঁর চরিত্রের নাম ছিল ব্রেথলেস মাহোনি – যা থেকে পরে ম্যাডোনার একটি গানের অ্যালবামের নাম হয় ‘ব্রেথলেস’৷ অ্যালবামটিতে ছিল ম্যাডোনার সুপারহিট গান ‘ভোগ’৷
সেক্স বম্ব
ম্যাডোনা-র সুপারস্টার হতে বেশি সময় লাগেনি৷ বিশ্বখ্যাত হবার পর তাঁর ডোন্ট কেয়ার মনোভাব যেন আরো বাড়ে৷ ‘‘ইন বেড উইথ ম্যাডোনো’’ তথ্যচিত্র বা শিল্পীর ‘‘সেক্স’’ ফটো অ্যালবামটি বিপুলভাবে জনপ্রিয় হয়েছে৷
যৌনতা থেকে রহস্য-রোমাঞ্চে
ম্যাডোনা ইচ্ছেমতো নিজের ইমেজ বদলে নেন৷ ‘‘ফ্রোজেন’’ গানটি ছিল তাঁর ১৯৯৮ সালের ‘‘রে অফ লাইট’’ অ্যালবাম থেকে প্রকাশিত প্রথম সিঙ্গল৷ গানটির ভিডিও-য় গোটিয়ে-র সাজ বা যৌন আবেদনপূর্ণ নৃত্যের পরিবর্তে ম্যাডোনা-কে দেখা গেছে মেহেদি পরে আলো-আঁধারিতে নাচতে৷ এর স্বল্প আগে ম্যাডোনা প্রথমবারের মতো মা হন৷
সেই চুম্বন
তা বলে যৌন আবেদন পুরোপুরি বিসর্জন দেননি ম্যাডোনা৷ ২০০৩ সালের এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে তিনি প্রথমে ক্রিস্টিনা অ্যাগিলেরা ও পরে (যেমন ছবিতে) ব্রিটনি স্পিয়ার্স-কে চুমু খান৷
পরিণীতা
প্রথম স্বামী ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা সন পেন, ম্যাডোনা-র ‘ট্রু ব্লু’ অ্যালবামটি যাকে উৎসর্গ করা হয়েছে৷ বিয়ে টিকেছিল চার বছর৷ পার্সোনাল ট্রেনার কার্লোস লিয়ন-এর সঙ্গে সম্পর্ক থেকে জন্ম নেয় কন্যা লুর্দ৷ ২০০০ সালে বিবাহ হয় চলচ্চিত্রনির্মাতা গাই রিচি-র সঙ্গে৷ উভয়ের পুত্র রকো-র জন্ম হয়৷ বিয়ের আট বছর পরে বিচ্ছেদ৷ ম্যাডোনা-র গাই রিচি-কে দিতে হয় পাঁচ কোটি ইউরো৷
মায়ের মন
২০০৬ সালে ম্যাডোনা আফ্রিকার মালাউয়ি-তে যান ও একটি অনাথাশ্রমে ১৩ মাস বয়সের ডেভিড-কে দেখেন৷ পরে শিশুটিকে দত্তক নেন ম্যাডোনা – অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে; নিন্দুকে বলে, ম্যাডোনা দত্তক নেবার অধিকার পেয়েছেন টাকার জোরে৷ বিপুল প্রতিরোধ সত্ত্বেও ম্যাডোনা ২০০৯ সালে মালাউয়ি-র আরো একটি শিশুকে দত্তক নেন৷ মেয়েটির নাম: মার্সি৷
কল্যাণী
মালাউয়ি বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির মধ্যে পড়ে৷ ২০০৬ সালে ম্যাডোনা তাঁর ‘রেইজিং মালাউয়ি’ নিধি প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন৷ মালাউয়ি-তে ম্যাডোনা-র প্রতিপত্তি এতোটাই বাড়ে যে, প্রেসিডেন্ট জয়েস বান্ডা ম্যাডোনা-র যাবতীয় বিশেষ সুযোগসুবিধা বাতিল করেন৷ ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট মুথারিকা-র সরকার ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্ক আবার কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে৷
কুইন অফ পপ
ম্যাডোনা-র শিল্পীজীবন গুজব-কেলেঙ্কারি, প্রতিরোধ-প্রতিকূলতা, ওঠা-নামায় ভরা৷ বার বার বলা হয়েছে, তাঁর সৃজনশীলতার অন্ত ঘটেছে৷ কিন্তু তার ঠিক পরেই আবার একটি হিট গান বাজারে নামিয়েছেন ম্যাডোনা৷ এবার তিনি তাঁর সর্বাধুনিক অ্যালবাম ‘রেবেল হার্ট’ নিয়ে ওয়ার্ল্ড টুরে বেরিয়েছেন৷ ইউরোপ টুরের সূচনা জার্মানিতে, কাছের কোলোন শহরে, একটি ডাবল কনসার্ট দিয়ে৷ সেখানে কুইন অফ হার্ট-কে চিরনবীনাই মনে হয়েছে৷