মে দিবস উদযাপন : ফিলিপাইন্সে বিক্ষোভ, ফ্রান্স ও তুরস্কে সংঘর্ষ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে মে দিবসে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। অনেক দেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকটি দেশের মে দিবসের ছবি দেখুন এই ছবিঘরে।
বাংলাদেশ
বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন দেশজুড়ে মে দিবস উপলক্ষে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। পোশাক শ্রমিকদের নানা সংগঠনের মূল দাবিগুলোর মধ্যে ছিল মজুরি বাড়ানো, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করা।
তুরস্ক
তুরস্কের ইস্তানবুলে মে দিবসের মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বাধা অতিক্রম করে এগোতে চাইলে এক পর্যায়ে কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুঁড়ে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহতও হন।
তাকসিম স্কোয়্যারে যেতে বাধা
সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, ঐতিহাসিক তাকসিম চত্তরে কোনো ধরনের সমাবেশ করা যাবে না। কিন্তু মে দিবসে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা সে নির্দেশ অমান্য করে এগিয়ে যেতে চাইলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ব্যারিকেড ভাঙায় অনেক বিক্ষোভকারীকে আটকও করেছে তুর্কি পুলিশ।
জার্মানি
রাজধানী বার্লিনে নারীবাদী এবং এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মীরা 'টেক ব্যাক দ্য নাইট' নামে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করেন। সমান অধিকার ও সমাজে বৈষম্য দূর করার দাবিতে শোভাযাত্রায় অংশ নেন শত শত বিক্ষোভকারী।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী একটি সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের রক্ষণশীল সরকারের শ্রমবিরোধী নীতিগুলোর সমালোচনা করে স্লোগান দেয়া হয়।
'শ্রমিকবান্ধব সরকার চাই'
কোরিয়ার ট্রেড ইউনিয়নগুলোর জোট- কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউনের কড়া সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়নের ধর্মঘটের ফলে হওয়া ক্ষতি পোষাতে কোম্পানিগুলোর ক্ষতিপূরণ দাবির পরিমাণ কমাতে আনা একটি বিলে ভেটো দেন প্রেসিডেন্ট। ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের দাবি, ইউনের সরকারের ক্ষমতায় থাকার দুই বছরে শ্রমিকদের ভোগান্তি বাড়ছে।
ফিলিপাইন্স
খাদ্য এবং জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় দেশটিতে চাকরির নিরাপত্তা এবং বেতন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিক্ষোভ রয়েছে। বেতন বাড়ানোর দাবি নিয়েই মে দিবসে রাজধানী ম্যানিলার রাজপথে নেমেছিল শত শত শ্রমিক এবং বামপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট। এক পর্যায়ে ম্যানিলায় মার্কিন দূতাবাসের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয়।
মার্কোসবিরোধী বিক্ষোভ
মার্কিন দূতাবাসের দিকে যেতে না পেরে দূতাবাসের পাশেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিন্যান্ড মার্কোসের একটি কুশপুতুলকে প্রতীকী আক্রমণ করেন বিক্ষোভকারীরা। মার্কোসের কুশপুতুলে প্রতীকী কাস্তে-হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালানো হয়।
ইন্দোনেশিয়া
মে দিবসে জাকার্তার রাজপথে একদিকে ছিল শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের স্লোগান, অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী সাজে সেজেও হাজির হয়েছিলেন অনেকে। শোভাযাত্রার জন্য বন্ধ করে দেয়া এক সড়কে দেখা যাচ্ছে এমনই কয়েকজন নৃত্যশিল্পীকে। তারা সেজে এসেছেন দেশটির ঐতিহ্যবাহী রেওগ নৃত্যের সাজে।
ফ্রান্স
ইউরোপের এই দেশটিতে শ্রমিক বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠার নজির অনেকদিনের। ফলে এবারের মে দিবসের আয়োজনকে ঘিরেও নেয়া হয়েছিল কড়া নিরাপত্তা। সাধারণ পুলিশের পাশাপাশি প্যারিসের রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছিল সহিংস ঘটনা ঠেকাতে বিশেষ পুলিশ ফোর্স বিআরএভি-এম।
তারপরও সংঘর্ষ
আগে থেকেই ব্যবস্থা নেয়া সত্ত্বেও প্যারিসের বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে পুলিশের টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচতে ছাতা দিয়ে রক্ষাব্যূহ তৈরি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।