1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিমিয়ানমার

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আমরা যা জানি

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে৷ এর মধ্যে ৫ আগস্ট রাখাইনের মংডুতে হামলায় নারী ও শিশুসহ অনেকে মারা গেছেন৷ নিহতের সংখ্যা ৫০ থেকে ২০০-র মধ্যে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/4kSeu
রাখাইনে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর
৪ আগস্ট হামলা শুরুর আগে আরাকান আর্মি মংডুর সাধারণ নাগরিকদের ঐ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল, মংডুতে মূলত রোহিঙ্গারা বাস করেনছবি: Mohammad Jihad/AP/picture alliance

এথনিক রাখাইন বৌদ্ধদের সংগঠন ‘আরাকান আর্মি' ৪ আগস্ট মংডুতে হামলা শুরু করে৷ ঐ এলাকায় আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জান্তা সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ‘রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গ্যানাইজেশন' বা আরএসও এবং ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি' বা আরসা৷

৪ আগস্ট হামলা শুরুর আগে আরাকান আর্মি মংডুর সাধারণ নাগরিকদের ঐ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল৷ মংডুতে মূলত রোহিঙ্গারা বাস করেন৷

তবে জান্তা বাহিনী, আরএসও ও আরসা নাগরিকদের থেকে যেতে বলেছিল৷ অনেকে জায়গার মালিকানা হারানোর আশঙ্কায় ঐ এলাকায় থেকে গিয়েছিলেন৷

এরপর আরাকান আর্মি হামলা শুরু করলে জান্তা বাহিনী তাদের ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ে৷ আর আরএসও ও আরসার কিছু সদস্য ও সাধারণ নাগরিকেরা পালিয়ে যান৷

মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস ও আরাকান প্রজেক্টের ক্রিস লেওয়া নিশ্চিত করেছেন, পালিয়ে যাওয়া সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কিছু আরএসও ও আরসার সদস্য ছিলেন৷

মংডু থেকে পালাবার একমাত্র পথ নাফ নদীর দিকে যাওয়া, যেটি পার হলেই বাংলাদেশ৷ বিভ্রান্তি ও আতঙ্কের কারণে ৫ ও ৬ আগস্ট বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটে৷

অস্পষ্ট বিবরণ

এই প্রতিবেদনের জন্য ডিডাব্লিউ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে, যার মধ্যে আছেন রোহিঙ্গা জয়নুল মুস্তফা, মুহামাদ হুসেইন ও উমর ফারুক৷ আরো আছেন ইতিহাসবিদ জ্যাক লাইডার, এনজিও আরাকান প্রজেক্টের ক্রিস লেওয়া ও আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থু খা৷

এছাড়া আরাকান আর্মির রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড লিগ অফ আরাকান, বৈশ্বিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ ও মানবাধিকার সংগঠন ফর্টিফাই রাইটসের বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়েছে৷

তা করতে গিয়ে, সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য মাঝেমধ্যে একে অপরের বিপরীত হতে দেখা গেছে৷ সবসময় এলাকা বা সময় দিয়ে ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি, এবং অনেক বিবৃতি সাধারণীকরণ করা হয়েছে৷

৫ আগস্টের হামলা সম্পর্কে আমরা কী জানি?

সেদিন রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াই ওয়াই নু এক্স-এ এক পোস্টে মংডুতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কথা লিখেছিলেন৷ এতে ৫০ জনের বেশি রোহিঙ্গা মারা যাওয়ার কথা বলেন তিনি৷ পোস্টের সঙ্গে একটি ছোট ভিডিও দিয়েছিলেন, যেটিতে হামলায় হতাহতদের দেখা গেছে৷

ডিডাব্লিউ এই ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখেছে এটি সঠিক৷ এছাড়া একই ঘটনা আরো দুই দিক থেকে ধারণ করার ভিডিও-ও প্রকাশিত হয়েছে৷

ভিডিওতে ২২টি মরদেহ দেখা গেছে৷ এছাড়া মারাত্মকভাবে আহত অন্তত চারজনকে দেখা গেছে৷ নাফ নদীর কাছে টি-জংশন এলাকায় ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে৷

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মার্কুস রটশিল্ড জানান, ফুটেজের মান ভালো না হওয়ায় বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়৷ তবে এটি স্পষ্ট যে, মরদেহগুলোতে তখন পর্যন্ত পচন ধরেনি৷ তার মানে হচ্ছে, হত্যাকাণ্ড ৫ আগস্ট ঘটেছে৷

সম্ভবত প্রোজেক্টাইল বা শ্রাপনেল কারণে মৃত্যু হতে পারে৷ তবে হামলা কে করেছে বা কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তা এই ভিডিও দেখে বোঝা যায়নি৷

এমন অনিশ্চয়তা শুধু ৫ আগস্টের টি-জংশন এলাকার ভিডিও নিয়ে নয়, আগস্টের শুরুতে মংডুর সব ঘটনার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য৷

এখন পর্যন্ত দায়ীদের বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷ এগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়৷

ভুল করে নিজ গোষ্ঠীর সদস্যদের উপর হামলা কিংবা অন্যকে দোষ দেওয়ার জন্য ইচ্ছে করে নিজ দলের সদস্যদের হত্যা করার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷

তবে একটি বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই যে, সব পক্ষই সাধারণ নাগরিকদের কথা খুব অল্পই ভেবেছে৷

বিদেশে বাস করা রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট ও মিলিশিয়াদের অভিযোগ, জান্তা বাহিনীর চেয়ে আরাকান আর্মি বেশি গণহত্যা সংঘটিত করছে৷

তবে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থু খা ডিডাব্লিউকে বলেন, এই অ্যাক্টিভিস্টরা আসলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন নন, তারা ‘তাদের স্বার্থ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন'৷

‘‘তারা রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক দাতা ও সংস্থা থেকে প্রচুর লাভবান হচ্ছেন,'' বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

রোডিওন এবিগহাউজেন/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান