মিশরে চলছে সিসি বিরোধী বিক্ষোভ
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯মিশরের বন্দর নগরী সুয়েজে দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে অন্য শহরগুলোতেও৷ কায়রোর বিখ্যাত তাহরির চত্বরে যাতে কেউ জড়ো হতে না পারে সেজন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সদস্যকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে৷
মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির পতনের পর ২০১৩ সালে বিশেষ আইন করে যেকোন বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ক্ষমতাসীন সরকার৷ এরপর এবারই প্রথম কোন সরকার বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হল৷
আন্দোলনের শুরু যেভাবে
জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মিশরের ক্ষমতাসীন সরকারের উপর জনগণের অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে৷ তার উপর ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ১২০০ কোটি ডলারের ঋণের বিনিময়ে খরচ কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে আসছে সিসি সরকার৷ বর্তমানে প্রতি তিনজনের একজন মিশরীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে৷
এমন অবস্থায় মোহাম্মদ আলী নামের সিসি বিরোধী একজন নির্বাসিত ব্যবসায়ী অনলাইনে প্রতিবাদের ডাক দেন ৷ শুক্রবার সব গুরুত্বপূর্ণ চত্বরে মিশরীয়রা যাতে লাখে লাখে সিসির বিরুদ্ধে র্যালিতে যোগ দেন সেই আহবান জানিয়ে তিনি গত সপ্তাহে এক ভিডিও পোস্ট করেন৷ ফেইসবুকে এই আবেদনে তিনি বলেন, ‘‘এটা জনগণের বিক্ষোভ... আমাদের সবাইকে এক হয়ে যেতে হবে... এবং সংগঠিতভাবে প্রধান চত্ত্বরগুলোতে জড়ো হতে হবে৷‘‘ সিসি এবং সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন তিনি৷ তার এই ভিডিও দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়৷
তার আহবানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার স্থানীয় দুই শক্তিশালী ক্লাবের ফুটবল ম্যাচ শেষে কয়েকশো মিশরীয় রাজধানীর কায়রোতে জড়ো হন৷ সিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকেন৷ এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে৷ এসময় ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী৷
শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীদের একটি দল সুয়েজের শহরতলীতে জড়ো হয়৷ নিরাপত্তাবাহিনী সড়কে ব্যারিকেড এবং সাঁজোয়া যান দিয়ে তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে৷ পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসে অনেকেই আহত হয়েছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছেন এক আন্দোলনকারী৷
সরকার যা বলছে
প্রেসিডেন্ট সিসি তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ জনগণের প্রতি তিনি নিজেকে ‘সৎ আর বিশ্বস্ত‘ হিসেবেও দাবি করেছেন৷ এই মুহূর্তে তিনি নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন৷ আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তাঁর ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে৷
এফএস/এআই (এএফপি, রয়টার্স)