1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

মারিউপলের কারখানা থেকে উদ্ধার ইউক্রেনের সেনা

১৭ মে ২০২২

অবশেষে মারিউপলের স্টিল কারখানা থেকে ইউক্রেনের আহত সেনাদের উদ্ধারকাজ শুরু হলো। তাদের রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

https://p.dw.com/p/4BO8H
ইউক্রেন
ছবি: Alexei Alexandrov/dpa/AP/picture alliance

গত সপ্তাহে মারিউপলের অ্যাজবস্টল স্টিল প্লান্ট থেকে বেসামরিক ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়েছিল। রেডক্রস এবং জাতিসংঘের উপস্থিতিতে সেই কাজ হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছিল, ওই কারখানার ভিতর আহত অবস্থায় আটকে আছে বেশ কিছু ইউক্রেনীয় সেনা। যারা দীর্ঘদিন ধরে ওই কারখানাকে বেস বানিয়ে রাশিয়ার সেনার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে মা-মেয়ে

ইউক্রেন আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে ওই সেনাদের উদ্ধারের আবেদন করে। রাশিয়ার কাছেও যে কোনো শর্তে ওই সেনাদের উদ্ধারের আবেদন জানানো হয়। প্রাথমিকভাবে রাশিয়া তাতে রাজি না হলেও, শেষপর্যন্ত ইউক্রেনের দাবিতে সায় দেয়। সোমবার প্রথম ওই কারখানা থেকে বেশ কিছু ইউক্রেনের সেনাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে।

সামরিক প্রধান জানিয়েছেন, অ্যাজবস্টলের কারখানা থেকে সোমবার ২৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে বেশ কিছু সেনার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের সকলকেই রাশিয়ার দখলে থাকা পার্শ্ববর্তী শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে। এখনো বেশকিছু সেনা কারখানায় আটকে আছেন বলে জানা গেছে।রাশিয়া জানিয়েছে, মঙ্গলবার তাদেরও উদ্ধার করা হবে।

সোমবার রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ''ওই সেনারা আমাদের হিরো। তাদের যেন কোনো রকম ক্ষতি না হয়। আমরা একজন সেনাকেও হারাতে চাই না।'' প্রশ্ন উঠছে, উদ্ধার করা হলেও রাশিয়া ওই সেনাদের ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে কি! হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও পরবর্তী সময়ে ওই সেনাদের রাশিয়া যুদ্ধবন্দি করতে পারে বলেও কোনো কোনো মহল মনে করছে। তবে রাশিয়া এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি। ইউক্রেনও এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুইডেনের ঘোষণা

ফিনল্যান্ডের পরে সোমবার সুইডেনও ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে সরকারি ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার সুইডেনের পার্লামেন্টে এবিষয়ে প্রস্তাব দেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। বস্তুত, রোববারই ফিনল্যান্ড সরকারিভাবে ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার প্রস্তাব জানিয়েছিল। সুইডেন জানিয়েছে, ২০০ বছর ধরে যে ভারসাম্য তারা রক্ষা করে এসেছে, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। এতদিন ইউরোপ এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করেছে তারা। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করায় আর তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।

জাপান এবং তুরস্কের বক্তব্য

সুইডেনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে জাপান। জাপান বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনে যেভাবে আগ্রাসন দেখাচ্ছে তাতে এছাড়া সুইডেনের আর কোনো উপায় ছিল না। নর্ডিক দেশগুলির নিরাপত্তা প্রয়োজন বলে মনে করে জাপান।

তুরস্ক অবশ্য ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে খুশি নয়। তুরস্ক জানিয়েছে, ন্যাটোয় যোগ দিতে হলে ওই দুই দেশকে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত মানতে হবে। বস্তুত, এবিষয়ে সোমবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ন্যাটোপ্রধানের বৈঠক হয়েছে। ন্যাটোপ্রধান জানিয়েছেন, তুরস্কের বক্তব্যের মধ্যে যুক্তি আছে। বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং বিবেচনা করা হবে। তুরস্কের মূল আপত্তি-- কুর্দ যোদ্ধাদের সংগঠন পিকেকে-কে জঙ্গি সংগঠন বলে মনে করে না সুইডেন। যদিও ন্যাটোর তালিকায় পিকেকে জঙ্গি সংগঠন। তুরস্ক চায়, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আগে সরকারিভাবে পিকেকে-কে জঙ্গি সংগঠন বলে চিহ্নিত করবে।

ন্যাটো প্রধান বলেছেন, তুরস্ক ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ফলে তাদের ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া দেয়া হবে।

রাশিয়ার হুমকি

এদিকে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের পদক্ষেপ তারা ভালো চোখে দেখছে না। রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটো সেনাঘাঁটি তৈরির চেষ্টা করলে তার ফল ভালো হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দিলে তেমনটাই হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)