মানুষ যখন মূর্তি
নেদারল্যান্ডসের আরহেম শহরে জমেছিল মানুষের মূর্তির ভীড়৷ ওয়ার্ল্ড স্ট্যাচুজ ফেস্টিভ্যালের নবম আয়োজনে মূর্তি হতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এসেছিলেন শত শত মানুষ৷ দেখুন কিছু জীবন্ত মূর্তির নমুনা৷
নড়বে না!
বয়স ৬১ হলে কী হবে, জন হুগেনবুম কিন্তু এখনো তরুণ৷ আরহেম শহরে তিনিও চলে এসেছিলেন পলক না ফেলে, শরীরের কোনো অংশ না নেড়ে মূর্তি হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে৷ ছবিতে জন হুগেনবুমকে মূর্তি বানানোর শুরুর দৃশ্য৷
স্প্যানিশ ভদ্রলোক
স্পেনের বিখ্যাত লেখক ডন মিগুয়েল ডি সারভান্তেস সাভেদ্রার অমর সৃষ্টি ডন কিখোতে হতে চলেছেন ইয়ান আইসেন্স৷ ডন কিখতের মতো হতে গিয়ে শুধু পোশাক পড়তেই এক ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছিল৷
পাথরের মানুষ
সাঞ্চো পানজা ছাড়া তো ডন কিখোতের কথা ভাবাই যায় না৷ আরহেমে সাঞ্চো পানজা হয়েছিলেন ফ্রিটস এহকেলকাম্প৷ আইসেন্স আর এহকেলকাম্পকে মূর্তিরূপে এত নিখুঁত দেখাচ্ছিল যে দর্শক এসে ঝুড়িতে পয়সাও দিয়ে গেছে৷ এবার ‘প্রফেশনালস অ্যাট ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটুজ ফেস্টিভ্যাল’ ক্যাটাগরিতে আইসেন্স আর এহককেলকাম্পই পেয়েছেন অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড৷ পুরস্কার হিসেবে নগদ ৫০০ ইউরো পেয়েছেন তাঁরা৷
পালোয়ান দেখে হাসি!
একটা সময় পর্যন্ত অ্যারন জিওব্রাওস্কিকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনিই বুঝি আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ৷ কাপ থেকে একটা করে মুদ্রা তুলে বাইসেপ দেখাচ্ছিলেন আর নিজের পেশিতে চুমু খাচ্ছিলেন৷ কিন্তু বার্বেল তুলতে গিয়েই সব জারিজুরি শেষ৷ এমন হাস্যকরভাবে ব্যর্থ হলেন যে দর্শকরা হাসতে হাসতেই হয়রান৷
ডোন্ট ওরি, বি হ্যাপি
ক্রিস্ট ডু নেদারল্যান্ডসের পেশাদার স্ট্রিট পারফর্মার৷ রাস্তায় মূর্তি হয়ে মানুষকে আনন্দ দেয়াই তাঁর পেশা৷ ওয়ার্ল্ড স্ট্যাচুজ ফেস্টিভ্যালে তিনি ছিলেন ‘দ্য কনটেন্ট ম্যান’ হয়ে৷ এভাবে ক্রিস্ট ডু সবাইকে বেশি দুশ্চিন্তা না করে জীবনের আনন্দ খুঁজে নেয়ার পরামর্শই দিতে চেয়েছেন৷
শিশুর চোখে বিস্ময়
‘দ্য কনটেন্টম্যান’ হঠাৎ জীবন্ত হয়ে পাইপ টানতে শুরু করলেন৷ তা দেখে ছোট্ট সোনামনিরা অবাক৷ ওয়ার্ল্ড স্ট্যাচুজ ফেস্টিভ্যাল শিশুদের খুব প্রিয়৷ তাদের জন্য আলাদা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাও আছে ফেস্টিভ্যালে৷ এ বছর ৬০ জন প্রতিযোগী ছিল সেখানে৷
শৈল্পিক জুটি
পর্তুগালের হেলেনা রেইস মূর্তি হয়ে আসছেন ১৯৯৯ সাল থেকে৷ তাঁর সঙ্গী স্যামুয়েল বাটনের অভিজ্ঞতা মাত্র ছয় মাসের৷ অথচ ফরাসি তরুণ বাটন যখন অ্যাকর্ডিয়ান বাদক হলেন আর হেলেনা পাশে দাঁড়ালেন নারীমূর্তি হয়ে, অভিজ্ঞতার আকাশ-পাতাল তারতম্যটা একটুও ধরা পড়েনি৷
স্থিরতা
পর্তোর হেলেনা রেইস স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অনেকক্ষণ৷ হাতে ধরা পাত্রে হঠাৎ এক দর্শক মুদ্রা ছুড়ে না মারলে হয়ত নড়তেনই না৷ মূর্তি হওয়ায় ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা, হেলেনাকে টলানো কি সহজ কথা!
বিজয়ী
বার্লিনের জন এইকেও পেশাদার স্ট্রিট পারফর্মার৷ এবার ‘ব্লাঙ্কো, জন ম্যান’ হয়ে আসর সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি৷ দিনের শুরুতে গায়ে ছিল সাদা পোশাক৷ দিন শেষে তা আর সাদা থাকেনি৷ ছবির এই দর্শকের মতো অনেকেই নিজের পছন্দের রং লাগিয়ে গেছেন জনের গায়ে৷ এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ওয়ার্ল্ড স্ট্যাচুজ ফেস্টিভ্যাল মাতালেন জন৷ ২০১০ সালেও সেরার মুকুট উঠেছিল তাঁর মাথায়৷