1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহুয়া বিতর্কে নতুন সংযোজন একটি কুকুর

২৩ অক্টোবর ২০২৩

অর্থের বিনিময়ে পার্লামেন্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ার মামলায় এবার ঢুকে পড়ল একটি কুকুর।

https://p.dw.com/p/4XtB9
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রছবি: Prabhakar Mani Tewari/DW

একটি রটওয়েলার কুকুর ঘিরে বিতর্কের শুরু। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে মহুয়া মৈত্র সম্পর্কিত তথ্য দিয়েছিলেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই। তার সেই তথ্যের ভিত্তিতেই পার্লামেন্টে নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেন, অর্থের বিনিময়ে পার্লামেন্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। পার্লামেন্টের কাছে সমস্ত তথ্য জমা দেন তিনি। অন্যদিকে, আদালতেও এবিষয়ে মামলা শুরু হয়েছে। যে মামলা লড়ছেন জয় অনন্ত দেহদ্রাই।

একসময় জয় এবং মহুয়া ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জয় জানিয়েছেন, ২০২১ সালে দিল্লি থেকে একটি রটওয়েলার কুকুর কিনেছিলেন তিনি। যার নাম হেনরি। দিল্লি নগর নিগমে কুকুরের রেজিস্ট্রেশনও করান তিনি। মহুয়া সেই কুকুর তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান। বস্তুত, তখনো তারা বন্ধু ছিলেন। এরপর জয় সেই কুকুর চাইলে মহুয়া তা দিতে অস্বীকার করেন। এই কুকুরের মালিকানা ঘিরেই দুই বন্ধুর মধ্য়ে দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, মহুয়া দুইবার থানায় অভিযোগ করেন জয়ের বিরুদ্ধে। মহুয়ার অভিযোগ, জয় জোর করে তার সরকারি বাংলোয় ঢুকে কুরুর চুরি করার চেষ্টা করেছেন। তাকে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছেন।

বস্তুত, মাঝে কুকুরটিকে জয় বাড়ি নিয়ে গেছিলেন। পরে তা আবার মহুয়ার কাছে পাঠিয়ে দেন। জয়ও থানায় মহুয়ার নামে কুকুর নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে তথ্যপ্রমাণ-সহ কুরুরের মালিকানা দাবি করেছেন জয়।

এই পরিস্থিতিতেই সাংসদ নিশিকান্ত দুবের হাতে আদানি সংক্রান্ত তথ্য তুলে দেন জয়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, কুকুর নিয়ে অশান্তির জেরেই এই কাজ করেছেন জয়। নিশিকান্ত সেই তথ্য পার্লামেন্টে জমা দিয়েছেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পার্লামেন্টে আদানির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মহুয়া। মহুয়া অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ কোনোভাবেই মানতে রাজি হননি। তিনি লিখেছেন, পার্লামেন্টের ভিতর প্রশ্ন তোলাও এখন অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

সম্প্রতি দর্শন এই অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আদানির বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য তিনি মহুয়ার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। মহুয়ার সরকারি বাসভবন মেরামতের খরচ তিনি দিয়েছেন। বিভিন্ন সময় মহুয়াকে বিলাসবহুল জিনিস কিনে দিয়েছেন তিনি। তবে মহুয়া তিনি ছাড়াও আরো অনেকের কাছ থেকে আদানির বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

দর্শনের এই বক্তব্যকে অবশ্য চ্যালেঞ্জ করেছেন মহুয়া। এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। দর্শনের উপর বিজেপি চাপ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

রোববার এবিষয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূলও। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''পার্লামেন্টের কমিটির কাছে বিষয়টি গেছে। তারাই এর সত্যতা প্রমাণ করবে। তাদের বক্তব্য শুনে তৃণমূল তাদের অবস্থান জানাবে।'' বস্তুত, ডেরেক জানিয়েছেন, মহুয়ার কাছে দল এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। মহুয়া দলের কাছে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জমা দিয়েছেন। এবার পার্লামেন্টের কমিটি এবিষয়ে কী বলে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করছে দল। অন্যদিকে, কলকাতার মেয়র তথা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''মহুয়া ষড়যন্ত্রের শিকার, তবে তিনি নিজেই এর থেকে বেরিয়ে আসবেন।''

আদালতেও এবিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে ৩১ অক্টোবর। এর আগে মামলাটির শুনানি হয়নি। জয় আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, মহুয়ার আইনজীবী ফোন করে মামলাটি তুলে নিয়ে আদালতের বাইরে সেটেলমেন্টের আবেদন জানিয়েছেন তাকে। মহুয়ার আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, জয়কে ফোন করেছিলেন তিনি। কিন্তু জয় তাকে কোনো প্রত্যত্তর দেননি। আদালত জানিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩১ অক্টোবর।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো