মসজিদ পক্ষের আবেদন খারিজ, জ্ঞানবাপী নিয়ে শুনানি চলবে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২২জ্ঞানবাপী মসজিদ পক্ষের আবেদন খারিজ করে দিলেন বারাণসীর জেলা বিচারক বিশ্বেস। তিনি রায় দিয়েছেন, পাঁচ হিন্দু নারী যে আবেদন করেছিলেন, তা গ্রহণ করা হলো। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে এই মামলার শুনানি চলবে। পাঁচ হিন্দু নারী মসজিদে প্রতিদিন শৃঙ্গার গৌরীর পুজো করতে দেয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ এই রায় দেন বারাণসীর জেলা বিচারক। এরপর পাঁচ হিন্দু নারীর পক্ষের আইনজীবী জানান, আদালত তাদের যুক্তি গ্রহণ করেছেন। মসজিদ কমিটির পক্ষে যে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, তা খারিজ করা হয়েছে। মসজিদ কমিটির তরফ থেকে বলা হয়েছিল, ১৯৯২ সালের আইন অনুযায়ী, ধর্মস্থানগুলিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। কিন্তু বিচারপতি এই যুক্তি মানতে চাননি।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুনানি চালু হলেও, তা প্রতিদিন চলবে কি না. তা বিচারক জানাননি। কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই শুনানি শেষ করা হবে কি না, সে বিষয়েও তিনি কিছু বলেননি। তার রায়ের মূল কথা হলো, জ্ঞানবাপী মামলায় শুনানি চলবে। যে সব বিতর্কিত প্রশ্ন উঠেছে সে সব নিয়েই বিচার হবে। তার মধ্যে প্রতিদিন শৃঙ্গার গৌরীর পুজো করতে দেয়া, আরেকটি সমীক্ষা হবে কি না, যে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে বলে হিন্দু পক্ষের দাবি এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষ যাকে ফোয়ারা বলছেন, সে ব্যাপারেও শুনানি হবে ও আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে জেলা আদালত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরে তা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলেই মনে করছেন ভিশেষজ্ঞরা। এমনকী এদিন জেলা বিচারক যে রায় দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও সর্বোচ্চ আদালতে যেতে পারেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আদালত মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করেনি। যেমন নামাজ পড়া হচ্ছিল, তেমনই হবে। এই বিরোধের ফয়সালা আদালতেই হবে।
ঘটনার সূত্রপাত মাসকয়েক আগে। মাসকয়েক আগে পাঁচ নারী বারাণসী জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে বলা হয়, জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতর হিন্দু বিগ্রহ আছে। সেখানে তারা নিয়মিত পুজো করতে চান। আদালত এর ভিত্তিতে একটি ভিডিও সার্ভের নির্দেশ দেয়। দুইপক্ষের উপস্থিতিতে জ্ঞানবাপী মসজিদে সেই ভিডিও সার্ভে হয়। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয়, সার্ভে রিপোর্ট জনসমক্ষে চলে আসায়। যেখানে বলা হয়, মসজিদের ভিতর শিবলিঙ্গ আছে।
এরপরেই সুপ্রিমকোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। তারা নিম্ন আদালত থেকে বারাণসীর সবচেয়ে অভিজ্ঞ বিচারককে মামলাটি দেখতে বলে। এরপর সেই কোর্টেই শুনানি হয়। সোমবার তার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা।
মামলাটি আর এগোবে কি না, জ্ঞানবাপী মসজিদে পুজো করা যাবে কি না, এই সমস্ত প্রসঙ্গই এদিনের রায়ে উঠে আসতে পারে।
বস্তুত, কিছুদিন আগেই অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত মামলার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে এখন রামমন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। হিন্দুত্ববাদীদের বক্তব্য, এবার তাদের লক্ষ্য কাশী এবং মথুরার মসজিদ। তাদের স্লোগান ইয়ে তো স্রিফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জ্ঞানবাপীর মামলা বলে মনে করা হচ্ছে। মথুরার মসজিদ নিয়েও আদালতে মামলা চলছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এদিনের রায় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক থেকে। দেশের রাজনৈতিক হাওয়া কোন দিকে ঘুরবে, তা-ও অনেকটা নির্ভর করবে এদিনের রায়ের উপর।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)