1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশমরক্কো

মরক্কোয় ফলন বাড়াচ্ছে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি

১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

মরক্কোর কৃষিখাত বাঁচাতে আধুনিক সেচ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে৷ বিশ্বব্যাংক এই খাতে অনেক ঋণ দিচ্ছে৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট খরা থেকে এভাবে কতদিন বাঁচবে মরক্কো?

https://p.dw.com/p/4a7Yg
মরক্কোর একটি অঞ্চলের ছবি
মরক্কোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত কমে গেছেছবি: DW

মরক্কোতে পানির পরিমাণ দিন দিন কমছে৷ দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে কৃষি৷ সে কারণে মরক্কো এখন সেচ ব্যবস্থা আধুনিক করতে বিনিয়োগ করছে৷ বিশ্বব্যাংক মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে৷ কিন্তু এটিই কি সমাধান?

মরক্কোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ডুক্কালা অঞ্চলের মাটি আসলে উর্বর৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত কমে গেছে৷

কৃষক বুসাইব সোহেল বলছেন, ‘‘আগে আমরা খাল কেটে সেচ দিতাম৷ ওটাই আমাদের ঐতিহ্য ছিল৷ কিন্তু এখন এতে কাজ হচ্ছে না, কারণ, অনেক পানি অপচয় হয়৷''

ড্রিপ সেচের মতো আধুনিক সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করলে পানি অপচয় হয় না৷ ডুক্কালা অঞ্চলে ২০০৯ সালে একটি প্রকল্প শুরু করেছিল বিশ্বব্যাংক৷

কৃষি প্রকল্প ব্যবস্থাপক মুবারক আল-তায়ি জানান, ‘‘সেচ প্রক্রিয়ার উপর কৃষকদের পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকে৷ উৎপাদন বেড়েছে৷ শস্যের মানও বেড়েছে, ফলনও বেড়েছে৷ এটা দৃশ্যমান৷ ফলন বাড়ার বিষয়টি নিয়ে কৃষকেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেন৷ সব শস্যের উপর প্রভাব পড়েছে৷''

ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে যতটা সম্ভব গাছের মূলের কাছে পানি পৌঁছানো যায়৷ ডুক্কালায় ১৫৮ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ কৃষকদের কমসুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে৷

মরক্কোতে ড্রিপ পদ্ধতিতে সেচ

কৃষক বুসাইব সোহেল বলেন, ‘‘প্রযুক্তিটা ব্যয়বহুল৷ তবে তারপরও এটা ভালো, কারণ, এর ফলে আমাদের উৎপাদন বেড়েছে৷ সনাতন পদ্ধতিতে সেচ দিয়ে আমরা ৪০, ৫০ টন শস্য পেতাম৷ আর এখন ড্রিপ সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রতি হেক্টরে ১০০ থেকে ১২০ টন ফসল পাচ্ছি৷''

এই সেচ পদ্ধতির কারণে কৃষকেরা এখন এমন ফসলও ফলাচ্ছেন, যার জন্য অনেক পানির প্রয়োজন৷ কিন্তু এর সমালোচনা হচ্ছে৷ ইকোলজিক্যাল জাস্টিস অ্যাক্টিভিস্ট শেরিন তালাত বলছেন, ‘‘সার্বিকভাবে মরক্কোর পুরো কৃষিখাতের কথা ভাবতে হবে৷ আমরা অ্যাভোক্যাডো, তরমুজের মতো রপ্তানি করা যায় এমন শস্য ফলাতে আমাদের পানিসম্পদ ব্যবহার করতে পারি না, কারণ এগুলো আমাদের প্রধান খাদ্য নয়৷ আমাদের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখে এমন ফসল ফলাতে হতে৷ কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা ক্ষুধার হুমকিতে পড়েছে৷''

পারিবারিক জমিতে ফলন কমে যাওয়ায় বিদেশে চলে গিয়েছিলেন মুহাম্মদ আলদুবলানি৷ কিন্তু তিনি আবার দেশে ফিরে আরও কিছু জমি কিনে জলপাইয়ের চাষ শুরু করেছেন, যেটিতে পানি কম লাগে৷

কৃষক মুহাম্মদ আলদুবলানি জানান, ‘‘ড্রিপ সেচ পদ্ধতি চালুর আগে সনাতন পদ্ধতিতে চাষবাস করে ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ায় মানুষ আমার মতো এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিল৷ ড্রিপ সেচ পদ্ধতি চালুর কারণে গ্রামের অনেক মানুষ এলাকায় থাকতে উৎসাহিত হয়েছেন৷ অনেকে আবার ফিরে এসে জমি কিনে চাষবাস শুরু করেছেন৷ এখন আমাদের সন্তানেরাও কৃষিকাজে আগ্রহী হয়ে উঠছে৷''

ড্রিপ সেচ পদ্ধতি চালু হলেও মরক্কোতে এখনও কৃষিকাজে সবচেয়ে বেশি পানি ব্যবহৃত হয়৷ ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে৷ ফলে বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প আর আধুনিক সেচ ব্যবস্থা মরক্কোর কৃষিখাতের একটি অস্থায়ী সমাধান মাত্র৷

সেমেন কাতানিয়া, মিলটিয়াডেস শ্মিট/জেডএইচ

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য