মমির গল্প
নতুন কোনো মমি আবিষ্কার হলেই তা নিয়ে নানা আলোচনা এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে৷ কখনো কখনো বলা হয় মমিটি সম্ভবত কোনো এলিয়েনের৷ বিশ্বের ঐতিহাসিক কিছু মমির গল্প জেনে নেওয়া যাক ছবিঘরে৷
আটা
২০০৩ সালে চিলির আটাকামা মরুভূমিতে আবিষ্কার হয় এই মমিটি৷ অনেকেই মনে করেছিলেন, এটি কোনো এলিয়েনের মমি৷ এমনকি তৈরি হয়ে গিয়েছিল একটি তথ্যচিত্রও৷ তবে পরবর্তীকালে দেখা যায়, মমিটি মানুষের৷ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ১৫ সেন্টিমিটারের কঙ্কালটি আসলে একটি প্রিম্যাচিওর সন্তানের, জন্মের পরেই যার মৃত্যু হয়েছিল৷
তুতেনখামেন
১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হোয়ার্ড কার্টার ফারাও তুতেনখামেনের মমি আবিষ্কার করেন৷ মিশরের ভ্যালি অফ দ্য কিংসের একটি পিরামিড থেকে আবিষ্কার হয় তুতেনখামেনের মমি৷ এরপর বালক ফারাও তুতেনখামেনের মৃত্যু নিয়ে বহু গবেষণা হয়৷ অনেকেই ভেবেছিলেন তাঁকে খুন করা হয়েছিল৷ ২০০৫ সালে জানা যায়, তাঁর দেহে বহু আঘাত ছিল৷ সম্ভবত শিকারে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর৷
রোসালিয়া লোম্বার্ডো
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মমি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রোসালিয়া লোম্বার্ডো৷ প্রায় একশ’ বছর ধরে ইটালির একটি ক্যাথলিক সৌধে রাখা আছে এই মমিটি৷ দু’বছরের জন্মদিনের কিছুদিন আগে স্প্যানিশ ফ্লু’তে মৃত্যু হয়েছিল রোসালিয়া লোম্বার্ডোর৷ সম্ভবত ঘুমের মধ্যে৷ এতদিন আগে কীভাবে এত সুন্দর করে তার দেহটি রক্ষা করা হয়েছিল, সেটাই একটা মস্ত বিস্ময়৷ শোনা যায়, আলফ্রেডো সালাফিয়া দেহটি রক্ষা করেছিলেন নানা রাসায়নিকের সাহায্যে৷
বিত্তবান কঙ্কাল
ইটালির সিসিলি দ্বীপে বিখ্যাত মিউজিয়াম কাপুচিন ক্লয়েস্টার ক্যাটাকম্ব অফ প্যালেরমো৷ সেখানে ষোলো শতকের বিভিন্ন ধনী মানুষের কঙ্কাল এবং মমি রক্ষিত আছে৷ যে সমস্ত কঙ্কালের শরীরে দামী পোশাকও পরানো আছে৷ কাচের বাক্সের মধ্যে সে সমস্ত মমি সাজানো আছে সাধারণ মানুষের জন্যও৷
ওটজি
১৯৯১ সালে নুরেমবার্গের এক দম্পতি আল্পসে ট্রেকিং করতে গিয়ে ওটজের কাছে একটি গ্লেসিয়ার থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করেন৷ এবং সে কারণেই সেই অজ্ঞাত পরিচয়ব্যক্তির নাম হয়ে যায় ওটজি৷ নিওলিথিক আমলের সেই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ জানার জন্য বহু গবেষণা হয়েছে৷ ২০০০ সালে বিজ্ঞানীরা জানান, ৩৩৫৯ থেকে ৩১০৫ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের মধ্যে তিরের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির৷
স্কাইথিয়ান যোদ্ধা
২০০৩ সালে মঙ্গোলিয়া থেকে এক স্কাইথিয়ান যোদ্ধার মমি উদ্ধার করে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা৷ ওটজির সময়ের না হলেও তার কাছাকাছি সময়ের মমি ওই যোদ্ধার৷ ইউরেশিয়া অঞ্চলে বাস করতেন ওই বিখ্যাত যোদ্ধারা৷ বরফের মধ্যে থাকা ওই মমির পরনে ছিল কোমরবন্ধ এবং ফেল্ট বুট৷ শরীর ঢাকা ছিল পশুর চামড়ার পোশাকে৷
লাল ফ্রাঞ্জ
১৯০০ সালে পিট খুঁড়তে গিয়ে এই মমিটি উদ্ধার করেন এক ব্যক্তি৷ লোয়ার স্যাক্সনি অঞ্চলে৷ ১৭০০ বছর আগের সেই মমিটির চুল লাল৷ সে কারণেই তার নাম দেওয়া হয় রেড ফ্রাঞ্জ বা লাল ফ্রাঞ্জ৷ পিটের মাটির অ্যাসিডেই সুরক্ষিত ছিল ওই ব্যক্তির দেহ৷