1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মন্দার সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ কেলেঙ্কারি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি ঘটে গেল এই মন্দার সময়ে৷ একটি শিল্প গ্রুপ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক থেকে৷ শিল্প গ্রুপটি হলো বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপ৷

https://p.dw.com/p/4KPG4
ইসলামী ব্যাংকের মিরপুর শাখা
এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে৷ছবি: Mortuza Rashed/DW

এই গ্রুপের মালিক এবং পরিবারের সদস্যদের মোট আটটি ব্যাংকের মালিকানা আছে৷ তাদের আছে নানান কিসিমের ব্যবসা৷ কোনোটি জীবন্ত আবার কোনোটি অস্তিত্বহীন৷ তারা আবার মিডিয়ারও মালিক৷

ইসলামী ব্যাংক ২০১৭ সালে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়

প্রথম খবরটি ছিল ইসলামী ব্যাংক থেকে নভেম্বর মাসেই দুটি ভুয়া কোম্পানি খুলে দুই হাজার ৪৬০ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে৷ প্রতিষ্ঠান দুটি হলো নাবিল গ্রুপ ও মার্টস বিজনেস লাইন৷ এর বাইরে স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্ষ্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩২০ কোটি টাকা৷ সব মিলিয়ে নভেম্বরে নিয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা

এর পরপরই বুধবার এই সংক্রান্ত আরো একটি খবরে তোলাপাড়া শুরু হয় হলো৷ এস আলম গ্রুপ এককভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে৷ এর এই ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রনাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান৷ এস আলম গ্রুপ সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে৷ আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সন্দেহ করছে এস আলম গ্রুপ এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত পক্ষগুলো মোট এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক থেকে৷ এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিটি রিপোর্টের বরাতেই দেয়া হয়েছে৷ আর সেখানে অনিয়মের কথা বলা হয়েছে৷ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল আলম এখন সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন৷

ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এই ঋণকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি হিসেবে অভিহিত করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এক ব্যক্তির হাতে আটটি ব্যাংক দিলে যে এই পরিণতি হবে তা আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ফজলে কবিরকে প্রকাশ্যেই বলেছিলাম৷’’

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত এতে বিস্মিত হয়েছেন৷ তাই আদালত বুধবার ইসলামী ব্যাংক থেকে এই ঋণ নেয়ার ব্যাপারে রিট করতে বলেছেন৷ আর বৃহস্পতিবার আরেকটি আদালত এখন থেকে ঋণ গ্রহীতার নাম ও ঠিকানা ব্যাংকগুলোকে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে৷

বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য তদন্ত শুরুর কথা বললেও কোনো মন্তব্য করছে না৷ আর এস আলম গ্রুপও এখন মুখে কুলুপ এঁটেছে৷ সরকারও এই বিষয়ে এখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে৷ কিন্তু বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না চাইলে কিছু হয় না৷ তিনি চাইলে এদরকে ধরা এবং টাকা উদ্ধার সম্ভব, অন্যথায় নয়৷’’

বেসিক ব্যাংক লুটপাটের তদন্ত শেষ হয়নি সাত বছরে

বেসিক ব্যাংকে লুটপাট ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে গত ৯ নভেম্বর হাইকোর্ট বলেছেন, ‘‘যারা জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে তাদের ‘শ্যুট ডাউন’ করা উচিত৷’’ আর বুধবার আদালত তিন মাসের মধ্যে ব্যাংকটির অর্থ লোপাটের মামলার তদন্ত শেষ করতে বলেছেন৷ গত সাত বছর ধরে বেসিক ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ৫৬টি মামলার একটিরও তদন্ত শেষ করতে পারেনি দুদক৷ বেসিক ব্যাংকের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পল্টন থানার করা মামলার মোট আসামি ছয়জন৷ কিন্তু এই ঘটনার মূল হোতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে কখনো গ্রেপ্তার হতে হয়নি৷ তিনি ওই লোপাটের টাকা থেকে ১১০ কোটি টাকা দিয়ে ঢাকায় দেড় বিঘা জমির ওপর একটি বাড়ি কিনেছিলেন৷ আর লোপাট হওয়া টাকার কী পরিমাণ দেশে আছে, কতটা পাচার হয়েছে তাও এখানো জানা যায়নি৷

আরো লুটপাট

বেসিক ব্যাংক ছাড়াও ২০১১ সালে হলমার্কসহ ৫টি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (হোটেল শেরাটন) শাখা থেকে ঋণের নামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়৷ ওই ঘটনায় হলমার্কের মালিকসহ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে আটক করা হলেও মামলা শেষ হয়নি৷ টাকাও পাওয়া যায়নি৷

২০১২-১৩ সালে বিসমিল্লাহ গ্রুপ কয়েকটি ব্যাংক থেকে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়৷ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলায়মান, পরিচালক আনোয়ার চৌধুরী, নওরীন হাসিবসহ আরো কয়েকজন৷ ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ক্ষতিতে পড়ে জনতা, প্রাইম, যমুনা, প্রিমিয়ার ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক৷

২০১৮ সালে জনতা ব্যাংক অ্যাননটেক্স গ্রুপের মালিক ইউনুস বাদলকে পাঁচ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ দেয়৷ সেই টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না৷

জনতা ব্যাংক থেকে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে একইভাবে দুই হাজার ৭৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ক্রিসেন্ট গ্রুপ৷

অনুমোদন পাওয়ার পরই অনিয়মে জড়িয়ে ঋণ দিয়ে ফারমার্স ব্যাংক বিলিন হয়ে যায়৷ ফারমার্স ব্যাংক নাম পরিবর্তন করে হয়েছে পদ্মা ব্যাংক৷ তবে ঋণের টাকা আদায় করতে পারছে না তারা৷

আর সর্বশেষ পিকে হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন৷

সিএজি অডিট রিপোর্ট যা বলছে

সরকারি অর্থের অনিয়মের অর্ধেকই হচ্ছে ব্যাংকিং খাত ঘিরে৷ বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি)- বিগত অডিট রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন তথ্য৷

২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সিএজি-এর রিপোর্টে মোট ৫৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়৷এর মধ্যে ৩১ হাজার কোটি টাকাই রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের৷ অর্থাৎ আর্থিক অনিয়মের ৫২. ১৮ শতাংশ হচ্ছে ব্যাংকিং খাতে৷ পাশাপাশি বিগত ৯ বছরে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের পরিমাণ বেড়েছে ১৬ গুণ৷

এর আগে  ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মোট ২৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়৷ এর মধ্যে ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা৷

লুটপাটের খেলাপি ঋণ

ব্যাংকের টাকা মূলত ঋণের নামেই লুটপাট হয়৷ খেলাপি ঋণের সর্বশেষ যে পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া গেছে তাতে তা সোয়া লাখ কোটি টাকা ছড়িয়ে গেছে৷ গত ডিসেম্বরে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিলো এক লাখ তিন হাজার কোটি টাকা৷ সর্বশেষ হিসেবে জুন মাসে তার পরিমাণ হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা৷

২০২২ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা৷ মোট বিতরণ করা ঋণের ৮. ৯৬ শতাংশ খেলাপি৷ যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণ৷

তারপরও বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুলাই মাসে ঋণ খেলাপিদের জন্য বড় ধরনের ছাড় দেয়৷ ঋণের শতকরা আড়াই থেকে চার শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেয়া হয়৷ এর আগে এটা ছিলো শতকরা ১০ শতাংশ৷

ব্যাংকে টাকা কারা লুট করে, কীভাবে করে

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘‘ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের এই ঋণের ঘটনা মহাকাব্যিক৷ এত বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা আগে আর ঘটেনি৷ অটিটি ব্যাংক তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নরকে বলেছিলাম এস আলম সাহবের সাথে সব সময় একটি করে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েন ৷ কারণ, তিনি যদি কোনো কারণে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান. তাহলে গ্রাহকদের সর্বনাশ হয়ে যাবে৷ সেরকমই হলো৷’’

সরকারের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের কারণে তারা আটটি ব্যাংক পেয়েছে: ড. আহসান এইচ মনসুর

তার কথা, ‘‘এটা তো একবারে হয়নি৷ সরকার জানে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানে, তারপরও ব্যবস্থা নেয়নি৷ এর আগেও ঋণের নামে লুটপাট হয়েছে৷ এটা নতুন কিছু নয়৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এই টাকা আর ফেরত আসবে না৷ অতীতেও আসেনি৷ তিন-চারদিন আগেই তো এস আলম সাহেব পৌনে দুইশ’ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সিঙ্গাপুরে হোটেল কিনলো৷ এটা তার তিন নাম্বার হোটেল৷ এরপর শপিং মল আছে৷ সিঙ্গাপুরের বাইরেও আছে৷ তাহলে টাকা কীভাবে আসবে!’’ বাংলাদেশে যোগাযোগ ও ক্ষমতা থাকলে ব্যাংক থেকে ঋণের নামে টাকা লুটপাট এখন সবচেয়ে সহজ বলে মন্তব্য করেন তিনি৷

তার মতে, ‘‘সরকারের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের কারণে তারা আটটি ব্যাংক পেয়েছে৷ হাইকোর্ট যে দুই-একটি ব্যাপারে কথা বলছে তাতে আসলে কোনো কাজ হবে না৷ সরকার না ধরলে তাদের কেউ ধরতে পারবে না৷ আর এভাবে চলতে থাকলে অর্থনীতি আরো ক্ষতির মুখে পড়বে৷ ব্যাংক খাতে সাধারণ মানুষের আস্থা আরো কমবে৷’’

ব্যাংক থেকে ঋণের নামে এভাবে টাকা নিয়ে যাওয়া ক্ষমতা না থাকলে সম্ভব নয়, সেটা রাজনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের ক্ষমতা হতে পারে বলে মনে করেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয় (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক আছে, যে ব্যাংক ঋণ দেয় তারা আছে, সরকার আছে তারা কীভাবে না দেখে পারে! তাদের কোনো পক্ষের সহযোগিতায় এটা হয়েছে৷ কেউ না কেউ লাভবান হয়ে এটা করতে দিয়েছে৷ এর আগেও হলমার্ক, জনতা ব্যাংকের ঘটনা আমরা দেখেছি, কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ এই যে টাকা নেয়া হচ্ছে এটা সাধারণ মানুষের টাকা৷ এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না৷’’

এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না: ড. সেলিম রায়হান

আর অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘একটা লোকের হাতে সাত-আটটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে এটা কি বাংলাদেশের সরকার জানে না? সবই জানে৷ এস আলম গ্রুপের সাথে সরকারের একটি অংশের যোগসাজশ আছে৷ আর সেই কারণেই তারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যেতে পেরেছে৷ আর ব্যাংকগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে৷ তাদের অর্থমন্ত্রীও কিছু বলতে পারে না৷’’

তার কথা, ‘‘এদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না বললে কিছু হয় না৷ তিনি চাইলে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব৷ এই টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে৷ তা না হলে অর্থনীতি আরো বড় ঝুঁকির মুখে পড়বে৷ দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷’’

লুটপাটের টাকা কোথায় যায়

বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জানিয়েছে, গত অর্থ বছরে (২০২১-২২) শতকরা ২০ থেকে ২০০ ভাগ অতিরিক্ত আমদানি মূল্য দেখিয়ে অর্থ পাচারের ঘটনা তারা শনাক্ত করেছেন৷ এই ধরনের সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা গত অর্থ বছরে আট হাজার ৫৭১টি৷ এই লেনদেনের সংখ্যা তার আগের অর্থ বছরের চেয়ে ৬২.৩৩ শতাংশ বেশি৷ তখন এমন লেনদেন হয়েছে পাঁচ হাজার ২০৮টি৷

২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এমন সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ৬৭৫টি৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তিন হাজার ৫৭৩টি৷ এতে স্পষ্ট যে, ব্যাংকিং চ্যানেলে অব্যাহতভাবে অর্থ পাচার বাড়ছে৷ গত অর্থ বছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে৷

বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি রপ্তানির আড়ালে গত অর্থ বছরে পাচার হওয়া অর্থের হিসাব না দিলেও ওয়াশিংটনভিত্তিক গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় সোয়া চার লাখ কোটি টাকা৷