1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
দুর্যোগবাংলাদেশ

ভূমিকম্প ঝুঁকি ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট: প্রস্তুতি ও করণীয়

আলী আহমেদ খান
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে৷

https://p.dw.com/p/4NddV
ঢাকার ছবি৷
জাতিসংঘ বলছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম৷ছবি: Farjana K. GODHULY/AFP

ভূমিকম্পের পরে শতাধিক আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে৷ ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সোমবার ভোরবেলা যখন ঘড়িতে সময় প্রায় ৪টা, ঠিক তখনই এই ৭.৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ বেশির ভাগ মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন৷ বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের উপর৷ মোমের মতো ধসে পড়েছে একাধিক ভবন৷ সঙ্গে সঙ্গে লাশ৷ লাশ আর লাশ৷ চারদিকে শুধু লাশ৷ এত লাশের ভার নিয়ে দেশ দু'টির আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে৷ যারা বেঁচে আছেন, হতাশায় তাদের চোখ-মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে৷ বুঝে উঠতে পারছেন না যে, এখনো বেঁচে আছেন৷ ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে৷ কম্পন অনুভূত হয়েছে মিশর, নেবানন, সাইপ্রাস থেকেও৷

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে৷ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক শুধু তুরস্কেই নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪১৮ জন এবং সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি৷ ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়া৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ প্রতি দিনই শত শত নতুন মৃত্যু যুক্ত হচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত তুরস্কে ১১ হাজারের বেশি ভবন ধস ও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ভূমিকম্পের কারণে বহু মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে৷ তাদের থাকার কোন জায়গা নেই৷

তুষারপাতের কারণে তীব্র ঠান্ডায় তাদের জন্য বিপদ আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ দুই দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে৷ বারো তলা বিল্ডিংও মাটির সাথে মিশে গেছে, রাস্তা ধসে গেছে৷ চোখ যতদূর যায় ততদূর পর্যন্ত শুধু ধ্বংসস্তুপের পাহাড় দেখা যাচ্ছে৷ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকা পড়ে আছেন অসংখ্য মানুষ৷ তাদের কী অবস্থা তা অনিশ্চিত৷ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেরিয়ে আসছে মৃতদেহ৷ এ সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামে তা অজানা৷

ভূমিকম্প ঝুঁকি ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

প্রাকৃতিক যে সকল দুর্যোগ সংঘঠিত হয়ে থাকে সেগুলোর মধ্যে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, জলোচ্ছাস, নদীভাঙ্গন ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের অভিজ্ঞতা থাকলেও ভূমিকম্প সম্পর্কিত তিক্ত জ্ঞান নেই বললেই চলে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাতিসংঘ বলছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম৷ এছাড়া বাংলাদেশ পৃথিবীর ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল এ অবস্থিত বিধায় প্রাচীনকাল থেকে এই দেশে মাঝে মাঝে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷ উপরন্তু হিমালয় রেঞ্জ হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল৷ যদিও সৌভাগ্যক্রমে বাংলাদেশের জনগণকে শক্তিশালী ভূমিকম্পের তিক্ত স্বাধ গ্রহণ করতে হয়নি তথাপি গত দুই শতাব্দির ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে, দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে ভূমিকম্পের বড় ধরনের আশংকাআছে৷ উদাহরণ স্বরূপ ১৮৯৭ সালের ১২ই জুন মেঘালয়ের শিলং এর কাছে যে মারাত্বক ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছিল তার ফলে বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহসহ অনেক শহরের দালান কোঠা ভেঙ্গে পড়ে এবং অনেক লোক প্রাণ হারায়৷ বিগত ২১শে নভেম্বর ১৯৯৭ সালে চট্রগ্রাম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় এক প্রচন্ড ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং অনূরূপভাবে ১৯৯৯ সালের জুলাই-আগষ্ট মাসে মহেষখালি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় চার দফা ভূমিকম্প সংঘটিত হয় যার ফলে এই সব এলাকায় বেশ কিছু লোক মারা যায় এবং বাড়ি ঘর ধ্বংস প্রাপ্ত হয়৷ এছাড়া রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে ১০বার, ১৯৯৯ সালে ২১বার, ২০০০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত মোট ১৪বার ভূ কম্পন হয়েছে যা সুস্পষ্টভাবে ইহাই ইঙ্গিত করে যে ভূমিকম্প যে কোন মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য অভিশাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ ইতিহাস থেকে জানা যায় ভূমিকম্পের কারণে নদ নদীর গতি  পরিবর্তন হয়ে গেছে বা পাহাড় ও টিলার সৃষ্টি হয়েছে৷ ব্রহ্মপুত্র নদীর গতি পরিবর্তন, মধুপুরের গড় সৃষ্টি ভূমিকম্পের কারণেই হয়েছে বলে ভূ-তত্ত¡বিদরা ও ইতিহাসবিদরা মনে করেন৷ উপরন্তু মাত্র ৫৫ হাজার বর্গমাইল এলাকায় ১৬ কোটি লোকের বসবাস, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং ঝুঁকিপূর্ণ অননুমোদিত ভবন সম্ভাব্য ভুমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলবে৷ এহেন পরিস্থিতিতে ভূমিকম্প সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ তথা সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন৷

ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় গৃহিত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমসমূহ

ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় ইতমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়৷ এর মধ্যে রয়েছে,

· মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলস গঠন এবং সকল স্তরের জন্য (বিভাগীয় পর্যায় থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন৷

· প্রত্যেক দপ্তরের দায়িত্ব বন্টনপূর্বক সমন্বিত দুর্যোগ মোকাবেলায় Standing Order on Disaster বই প্রণয়ন ও আপডেটকরণ৷

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের আইন, নীতিমালা, নির্দেশনা (National Plan for Disaster Management, Disaster Management Act, SOD) জারীকরণ৷

· বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন ও ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট বরাদ্দ ও খরচের নির্দেশনা৷

· বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট ও এনজিও এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে স্টাডি রিপোর্ট প্রস্তুতকরণ ও সুপারিশমালা প্রণয়ন৷

· দুর্যোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থার (INSARAG, AMCDRR) কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং সমন্বয় সাধন৷

· ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক সার্চ এন্ড রেসকিউ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষিত প্রশিক্ষক ও উদ্ধারকারী জনবলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা৷

· ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের চেষ্টা চলমান৷

· সিপিপি প্রোগ্রামের আওতায় ৪২ হাজার জন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৫০,০০০ জন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা এবং এতদসংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রাখা৷

· ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক সকল স্তরের জনগণের জন্য ভূমিকম্প প্রতিরোধ ও সাড়া প্রদান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, মহড়া, গণসংযোগ, সার্ভে, পরিদর্শন ইত্যাদি পরিচালনা করা৷

· মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক উপজেলায় কমপক্ষে ১টি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা৷

· সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা যেমনঃ Comprehensive Disaster Management Program, Urban Resilience Project, Urban Building Safety Project, Strengthening Ability of Fire Emergency Response, FSCD Reform Project Paper Development, Accreditation of National USAR Team by INSARAG (TED) Project (উক্ত প্রকল্পের আওতায় ঢাকার মিরপুরে হেডকোয়ার্টার্স ভবন নির্মাণ, ৭টি ফায়ার স্টেশন পুনঃনির্মাণ, ২টি রেট্রোফিটিং, বিভিন্ন অপারেশনাল যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ১০টি ওয়্যারহাউজ নির্মাণ, মিরপুর ও সিলেটে ২টি ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার স্থাপন, Response Control Center (ERCC) স্থাপন, ল্যান্ড সয়েল এ্যাসেসমেন্ট, ডেবরিস অপসারণ সংক্রান্ত প্রস্তুতি ইত্যাদি বাস্তবায়নাধীন৷

আলী আহমেদ খান, ন্যাশনাল কনসালটেন্ট, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, ইউএনডিপি বাংলাদেশ
আলী আহমেদ খান, ন্যাশনাল কনসালটেন্ট, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, ইউএনডিপি বাংলাদেশছবি: Private

ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয়

 ভূমিকম্প সংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ চিহ্তিকরণ (কোথায় কোথায় ঝুঁকি, ভবন, ভূমি, অকুপেন্সী টাইপ ইত্যাদি), ঝুঁকি মূল্যায়ণ (কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে)

· জাতীয়ভাবে ভূমিকম্পে ঝুঁকি হ্রাসকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রয়োজনে আইন-বিধি প্রণয়ন ও স্থানীয় প্রতিনিধি এবং জনসাধারণকে সম্পৃক্তকরণ৷

· ঝুঁকি হ্রাসকরণে আন্তর্জাতিক নতুন নতুন ধারণা ও গবেষণার সাথে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন৷

· ঝুঁকি হ্রাসকরণে সরকারি-বেসরকারি যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সরকারি, বেসরকারি সকল ভবন, শিল্প কারখানাসহ সকল ক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাসকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ৷

· দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় কার্যকর সাড়া প্রদানের লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরী সাড়া প্রদানকারী বাহিনীসমূহকে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে প্রস্তুতকরণ এবং যন্ত্রপাতি বিকেন্দ্রীয়করণ৷

· দুর্যোগ-দুর্ঘটনা পরবর্তী পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে "Build Back Better" অর্থ্যাৎ আরো দুর্যোগ সহনীয়ভাবে পুনর্গঠন কার্যক্রম সম্পন্ন করণ৷

· প্রত্যেকটি সাড়াদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য "Contingency Plan" প্রস্তুতকরণ ও এতদসংক্রান্ত মহড়া পরিচালনা করা৷

· শিল্প-কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য "Business Continuity Plan" প্রস্তুতকরণ ও এতদসংক্রান্ত মহড়া পরিচালনা করা৷

· সকল প্রতিষ্ঠানে আপদকালীন সময়ের জন্য মহড়া পরিচালনা করা এবং এতদসংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালা/আইন প্রণয়ন করা৷

· বড় ধরনের দুর্যোগে সকল বিভাগের মধ্যে সমন্বিত কার্যক্রমের জন্য "Incident Command System" চালু করা৷

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে লজিস্টিক মালামালসমূহের যথাযথ সমন্বয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ডাটাবেজসহ "Emergency Operation Center" চালু করা৷

· নিরাপদ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে Bangladesh Natiional Building Code (BNBC) বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং এতদলক্ষ্যে ভবন নির্মাণ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন করা যেতে পারে৷

· বিদ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা চিহ্নিতকরণ এবং স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রয়োজনে ভবন অপসারণ অথবা ব্যাংক হতে ঝৃণ প্রদানের মাধ্যমে রেট্রোফিটিং বা নতুন ভবন নির্মাণ করা৷

· সিসমিক জোনেসন ম্যাপ প্রণয়ন ও তদনুযায়ী ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা৷

· দুর্যোগের পূর্বেই আশ্রয়স্থলের জন্য পার্ক বা খোলা জায়গা জোন অনুযায়ী চিহ্নিতকরণ এবং এতদসংক্রান্ত মহড়া পরিচালনা করা৷

· বড় ধরনের দুর্যোগের জন্য পূর্বেই খাবার, প্রয়োজনীয় মালামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদির মজুদ রাখা এবং বিকেন্দ্রীকরণ করা৷

· সিভিল মিলিটারি কোঅপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন-নীতিমালা প্রণয়ন ও মহড়া পরিচালনা করা৷

· সকল ক্ষেত্রে আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ৷

· সরু রাস্তা ও সরু ভবনের জন্য স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রয়োজনে এ বিষয়ে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক লোন প্রদান করা৷

· দুর্যোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা৷

· দুর্যোগ প্রকৌশল সম্পর্কে উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে এক্ষেত্রে পেশাজীবি প্রস্তুত করা৷

· প্রকৌশলী, রাজমিস্ত্রী ও ভবন সংক্রান্ত পেশাজীবীদের ভূমিকম্প প্রতিরোধমূলক ডিজাইন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান৷

· দুর্যোগের পর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রস্তুতি গ্রহণ৷

· আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আইন-বিধিমালা প্রণয়ন ও আপডেট করা৷

· আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণের জন্য বিমানবন্দর প্রস্তুত করা এবং বিকল্প বিমানবন্দর চিহ্নিত ও প্রস্তুত রাখা৷

· মোবাইল হসপিটাল এবং ব্লাড ব্যাংকের প্রস্ততি গ্রহণ করা৷

· গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনের জন্য অটো শাট ডাউন সিস্টেম স্থাপন করা যেন আকস্মিক ভূমিকম্পে লাইন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়৷

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন তাই ভূমিকম্প মোকাবেলায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও সচেতনতার বিকল্প নেই৷  একমাত্র প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিই পারে ভূমিকম্প এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে ভূমিকম্প সহনশীল দেশ গড়তে৷