ভিন্ন দেশের পরিচয়ে পরিচিত ৮ খাবার
জন্মদাতা এক, অথচ পরিচিত অন্য কারো নামে! সব কিছুর মতো খাবারের ক্ষেত্রেও এ রকম রয়েছে৷ এ সব খাবারের জন্ম বা উৎস এক দেশে, অথচ তা পরিচিত ও জনপ্রিয় অন্যদেশের খাবার হিসেবে৷ চলুন সেরকম জনপ্রিয় আটটি খাবার দেখে আসা যাক...
তুরস্ক থেকে আসা সুইডিশ মিটবল!
ইকেয়া রেস্তোরাঁ সারা দুনিয়ায় সুইডিশ মিটবলকে জনপ্রিয় করে তুলেছে৷ সুইডেন অবশ্য বলছে, এই খাবারের রেসিপি এসেছে তুরস্ক থেকে৷ অটোমান সাম্রাজ্যের সময়, অর্থাৎ ১৮ শতকে, রাজা দ্বাদশ চার্লস নাকি এটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে নিয়ে এসেছিলেন৷
ইংলিশ মাফিনের আবিষ্কারক অ্যামেরিকা
ইংলিশ মাফিন কিন্তু ইংল্যান্ড থেকে নয়, অ্যামেরিকা থেকে এসেছে৷ যদিও এই বিশেষ পিঠার প্রস্তুতকারী স্যামুয়েল বাথ থমাস ১৮৭৪ সালে ইংল্যান্ড থেকে অ্যামেরিকা পাড়ি জমিয়েছিলেন৷ থমাস অ্যামেরিকায় গিয়ে এই পিঠা আবিষ্কারের পর খুব জনপ্রিয় হয়৷ ওভেনে নয়, তাওয়ায় তৈরি এই পিঠা দীর্ঘদিন খোদ ব্রিটেনই অ্যামেরিকা থেকে আমদানি করেছে দীর্ঘদিন৷
ডোনার কাবাব
সারা পৃথিবীতেই এই কাবাব এখন প্রসিদ্ধ৷ বলা হয়, জার্মানিতে এটি প্রথম তৈরি ও চালু হয়৷ কাদির নুরমান নামের বার্লিনের এক তুর্কি বাবুর্চি এটি প্রথম তৈরি করেন৷ যদিও অনেকেই মনে করেন কাদির এটি প্রথম তৈরি করেননি৷ তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না৷ কেননা ১৯৭২ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জার্মানদের খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারের এটি৷
ক্রোয়াসঁ
ফ্রেঞ্চ বেকারিগুলোর প্রসিদ্ধ খাবার হলেও ফ্রান্সে এটি অস্ট্রিয়া থেকে নিয়ে এসেছিল সামরিক বাহিনির এক আর্টিলারি অফিসার৷ অস্ট্রিয়ায় এটি ‘কিপফার্ল’ নামে পরিচিত৷ যদিও মজার ব্যাপার হলো, এই কিপফার্ল নামটার সাথে জার্মানি অথবা তুরস্কের সংযোগ থাকতে পারে৷
ফাহিতাস এবং চিমিচাঙ্গাস
স্প্যানিশ শব্দ ‘ফাহা’-র অর্থ বেষ্টনি৷ ডিশে ব্যবহৃত টুকরো টুকরো গরুর মাংসের বেষ্টনিকেই বলে ফাহিতা৷ বর্তমানে ম্যাক্সিকোয় জনপ্রিয় এ খাবারটির সাথে পশ্চিম টেক্সাসের গবাদি পশুর খামার মালিকদের নাম জড়িয়ে আছে৷ এ রকম আরেকটি খাবার চিমিচাঙ্গাস আসলে কড়া মাংস ভাজি বা ‘বরিতো’, যেটি টেক্সাসের কিংবা মেক্সিকোর নয়, বরং অ্যারিজোনায় উদ্ভাবিত একটি খাবার৷
বেগেল
মাঝখানে ফুটো করে প্রথমে সিদ্ধ করা হয়, এবং তারপর সেঁকা হয় বেগেলকে৷ এটি অ্যামেরিকার খাবার হিসেবে পরিচিত হলেও এর মূল পোলান্ডে৷ পোলান্ডের ইহুদীরা অ্যামেরিকা পাড়ি দেওয়ার সময় এই খাবারটি সেখানে নিয়ে যান৷
ফর্চুন কুকিজ
মাঝখানে গর্তওয়ালা এই বিস্কুটগুলো সারা বিশ্বের চায়নিজ রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়৷ গর্তে নানা ধরনের উপদেশ বাণী আর ভবিষ্যত সংক্রান্ত দার্শনিক মন্তব্য থাকে৷ তবে মজার ব্যাপার হলো এটি চীনা খাবার হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিত হলেও, চীনে কিন্তু বিস্কুটে করে এই ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো ঐতিহ্য নেই৷ এর জন্মও চীনে নয়, বরং অ্যামেরিকায় জাপানি অভিবাসীরা এটি ১৯ শতকের প্রথমে বা ২০ শতকের শুরুতে চালু করেছিল৷
হুমুস
হুমুস রেসিপি খুব সহজ৷ ছোলা বা মটর ডানার মতো ডাল, জলপাই তেল, লেবু, আদা আর লবণ দিয়ে এটি তৈরি করা হয়৷ এর আবিষ্কারের মালিকানা নিয়ে লেবানন ও ইসরায়েলিদের মধ্যে তর্ক রয়েছে৷ তবে ভূমধ্যসাগর আর মধ্যপ্রাচ্যে এটি খুব জনপ্রিয় খাবার৷