ভারতীয় ফুটবলে ফিফার নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া
২৪ জুন ২০২২গত মঙ্গলবার ফিফা ও এএফসি-র প্রতিনিধিরা ভারতে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার তারা ফিরে যান। তারা এআইএফএফ অফিসে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সঙ্গে কথা বলেন, রাজ্য ফুটবল ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেন, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন(এআইএফএএফ)-এর সাবেক প্রধান প্রফুল্ল প্যাটেলের সঙ্গেও আলোচনা হয়। এমনকী মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গেও তারা দেখা করেন।
তারপর তারা যে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তা হলো, ফিফার দেয়া সময়সূচি মেনেই এআইএফএফের নির্বাচন করাতে হবে। তার আগে গঠনতন্ত্র তৈরি করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট তা অনুমোদন করবে। নির্বাচন কোন তারিখের মধ্যে করতে হবে, সেটাও তারা জানিয়ে দিয়েছেন।
এই সময়সূচি না মানলে বিশ্ব ফুটবল থেকে ভারতকে নির্বাসিত করা হবে। ভারত থেকে মেয়েদের বিশ্বকাপ সরিয়ে দেয়া হবে। আগামী অক্টোবরে সেই বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ভারতের পুরুষ ও মেয়েদের ফুটবল দল কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না। সুনীল ছেত্রীও নতুন করে কোনো রেকর্ড করতে পারবেন না।
ফিফার সময়সীমা
ফিফা জানিয়েছে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এআইএফএফের গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করতে হবে। আর সেই গঠনতন্ত্র যেন ফিফার চার্টারের বিরোধী না হয়। এরপর ৫ অগাস্টের মধ্যে এআইএফএফের বিশেষ সাধারণ সভা ডাকতে হবে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট করে ফেলতে হবে। না হলে ভারতকে সাসপেন্ড করা হবে।
কেন এই নির্দেশ?
এর আগে গঠনতন্ত্র ও নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কাজটা করে উঠতে পারেনি এআইএফএফ। তারপর সুপ্রিম কোর্ট এআইএফএফের কমিটি বাতিল করে তাদের মাথায় তিন সদস্যের কমিটি অফ অ্যাডমিনিসট্রেটর(সিওএ) বসিয়ে দেয়। সেই কমিটিতে আছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার কুরেশি, সাবেক বিচারপতি অনিল দাভে এবং সাবেক ফুটবল অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়।
সিওএ আবার ১২ সদস্যের পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করেছিল। ফিফা প্রতিনিধিরা এআইএফএফ অফিসে পা দেয়ার আগে সেই কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। তাতে ফিফা ও এএফসি প্রতিনিধিরা খুশি।
কিন্তু ফিফার নিয়ম হলো, ফেডারেশনের নির্বাচিত সদস্যদের বাইরের মানুষদের দিয়ে সংগঠন চালানো যায় না। কিন্তু ফিফা ও এএফসি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য ফেডারেশন জানায় সিওএ যেভাবে কাজ করছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। সিওএ-ও জানায় তারা ফিফার সময়সীমা মেনেই সব কাজ করবেন। ফিফার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত গঠনতন্ত্রের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখবেন।
সুপ্রিম কোর্টে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২১ জুলাই। তার আগে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গঠণতন্ত্র অনুমোদনের জন্য দিতে হবে।
সমস্যাটা কোথায়?
সমস্যার শুরু এআইএফএফ সময়মতো সভাপতি নির্বাচন না করানোয়। তখন যুক্তি দেয়া হচ্ছিল, গঠনতন্ত্র ঠিক হয়নি বলে সভাপতি নির্বাচন করা যাচ্ছে না।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করে। প্রফুল্ল প্যাটেলকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। কমিটি নিয়োগ করা হয়। এবার সিওএ গঠনতন্ত্র ও নির্বাচন করাবে। সেই গঠনতন্ত্র আগে অনুমোদন করবে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের চার্টার মেনে সেই কাজ করতে হবে। ফিফা আরো বলেছে, যেহেতু এআইএফএফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাই ফরেনসিক অডিট করাতে হবে। সেই অডিট নতুন কমিটিকে করাতে হবে। এ সব না করলে শাস্তি পেতে হবে ভারতকে।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)