বৈরুতে খ্রিস্টান এবং মুসলমান তরুণদের সম্প্রীতি
২৮ জুলাই ২০১০বৈরুতের এই সেমিনারে আরব বিশ্বসহ ইউরোপ, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার তরুণ প্রজন্মের ছেলেরা অংশগ্রহণ করছে৷ কোন উগ্রপন্থী মনোভাব নয় – বরং সহনশীলতা এবং সমবেদনার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তারা এসেছে৷ লক্ষ্য অন্য ধর্মকে জানা, ভক্তি এবং শ্রদ্ধা করা৷
জেক ডিলিবার্টো পেশায় একজন সৈন্য, ইউএস মেরিন৷ সে ইরাকে এবং আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছে মার্কিনদের পক্ষ হয়ে৷ দেশে ফিরে যাওয়ার পর জেক একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে, নাম ‘আফগানিস্তান সম্পর্কে পুনর্ভাবনা'৷ জেক বলল, অ্যামেরিকায় যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন, তিনি কোন অবস্থাতেই যুদ্ধ শেষ করতে চান না৷ ইরাকে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হচ্ছে৷ আমরা বুশ প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছি, এখন করছি ওবামা প্রশাসনের৷ আমাদের এই প্রজন্ম কোন ধরণের যুদ্ধ দেখতে চায় না৷ আমরা একটি সুস্থ, সুন্দর পৃথিবী দেখতে চাই৷ যীশু যুদ্ধের কথা বলেননি৷ সবসময়ই অন্যদের সাহায্যের কথা বলেছেন৷ আমি বাস্তববাদী৷ যীশু যা বলেছে, তার সবটাই হয়তো আমি করতে পারবো না, কিন্তু আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা আমি করে যাবো৷
২৮ বছরের জেক বৈরুতে এসেছে অন্যান্য মুসলমানদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনা করতে৷ তাদের মধ্যে একজন ২৫ বছরের বাশার লাক্কিস৷ বৈরুতের ছেলে বাশার৷ সে জানাল, সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, যারা ধর্ম মানে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ভাষাগত সমস্যা৷ ইসলাম ধর্ম যে সব মূল্যবোধের কথা বলেছে তার সবটা অনেকেই মেনে চলছে না৷ আমাদের জীবন হতে হবে অত্যন্ত সংযত৷ আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্মকে দেখে আসছি অনেক দিন ধরে৷ দেখা যাবে যে ভদ্রলোকের দাড়ি আছে তাকে ধার্মিক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়৷ তাহলে বাকিরা কী ? অন্য ধর্মতো দূরের কথা, আমরা আমাদের নিজেদের কথাও ঠিকমত শুনিনা৷ কার কী বলার আছে, তা জানতেও চাই না৷ অন্য ধর্মের লোকদের আমরা নির্দ্বিধায় কাফের বলে গালিগালাজ করি৷
বৈরুতের এই সেমিনারে আলোচনা করা হচ্ছে উগ্রপন্থী, ইসলামপন্থী, যুদ্ধ, ধর্ম এবং মানুষের প্রতি মানুষের দায়-দায়িত্ব নিয়ে৷ দুটি ধর্ম খোলাখুলিভাবেই কথা বলছে, কারণ সবাই শান্তি চায়৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন