বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের হামলায় সহপাঠী খুন, আহত তিন
২৭ নভেম্বর ২০০৯ঘটনার বিবরণ
এর আগে আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে বিদ্যালয় ছাত্রের এলোপাথাড়ি গুলিতে শিক্ষক এবং সহপাঠীদের খুনের ঘটনা ঘটেছে৷ এমনকি জার্মানির বন শহরে সম্প্রতি ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরী তার বিদ্যালয়ে হামলার পরিকল্পনা করার সময় ধরা পড়ে৷ ফলে বিচারে মাত্র দু'দিন আগে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও হয়েছে৷ কিন্তু ইউরোপে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন হত্যাযজ্ঞের ঘটনা বিরল৷ বৃহস্পতিবার হাঙ্গেরিতে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের বেপরোয়া গুলির আঘাতে প্রাণ হারালো এক সহপাঠী৷ আহত হয়েছে আরো তিন জন৷
কর্তৃপক্ষের বিবৃতি
'সায়েন্টিফিক ইউনিভার্সিটি অব পেকস' এর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দক্ষিণ হাঙ্গেরির এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এক ছাত্রের এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রথম বর্ষের এক ছাত্র প্রাণ হারিয়েছে৷ আহত হয়েছে অপর দুই ছাত্র এবং এক পরিচারিকা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জোল্টান গায়োর্ফি জানিয়েছেন, ছাত্র-ছাত্রীরা যখন জৈবপদার্থ বিভাগের গবেষণাগারে ফার্মাসি ক্লাস করছিল, তখন তাদের এক সহপাঠী হঠাৎ করেই এলোপাথাড়ি গুলি করা শুরু করে৷
পুলিশের ভাষ্য
পুলিশ জানিয়েছে, ২৩ বছর বয়সি হামলাকারী ছাত্রটি কিছুক্ষণ পরেই পালিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী বেসরকারি হাসপাতালে আশ্রয় নেয়৷ সেখান থেকে সে পুলিশকে টেলিফোন করে জানায় যে, ''সে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজেকে উড়িয়ে দিতে যাচ্ছে৷'' তবে সৌভাগ্যবশত আর কোন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি৷ বরং ২০ মিনিট পর পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালের ৭ম তলা থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়৷ ঘটনার পরপরই শিক্ষা মন্ত্রী ইস্টভান হিলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী এবং হামলাকারীর সহপাঠীরা জানিয়েছে যে, সে খুব একটা কারো সাথে মিশতো না এবং অস্থির স্বভাবের ছিল৷ এছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে তার মধ্যে ভারসাম্যহীনতার সমস্যাও দেখা যেত৷
সরকারের বক্তব্য
হাঙ্গেরির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী টিবোর ড্রাসকোভিক্স বলেছেন, ''এটি কোন সন্ত্রাসী হামলা নয়৷'' তিনি আরো জানান যে, হামলাকারী ছাত্রটি একটি শ্যুটিং ক্লাবের সদস্য এবং সে চেক প্রজাতন্ত্রে তৈরি ৯ মিলিমিটার পিস্তল ব্যবহার করতো৷ পিস্তলটি ব্যবহারের জন্য তার বৈধ কাগজপত্রও রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী৷
দেশটির প্রধানমন্ত্রী গর্ডন বাজনাই এক বার্তায় এই দুঃখজনক ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের প্রতি শোক এবং সমবেদনা জানান৷ এছাড়া তিনি আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন৷ বাজনাই বলেন, ''এমন মর্মান্তিক ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি এবং এর জন্য কেউ আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে পারে না৷ তবে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে কখনও এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী