বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা কার, কতখানি?
খেলাধুলার তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা স্ট্যাটস পারফর্ম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিশ্বকাপে কোন দলের জেতার সম্ভাবনা কতখানি তা জানিয়েছে৷ ভবিষ্যদ্বাণী করতে বাজির দর ও দলগুলোর অতীত ও বর্তমান পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়েছে৷
‘স্ট্যাটস পারফর্ম’ কারা?
এটি খেলাধুলার তথ্য বিশ্লেষণকারী একটি সংস্থা৷ স্প্যানিশ ফুটবল লিগ লা লিগা, প্রচারমাধ্যম ইএসপিএন, সংবাদ সংস্থা রয়টার্সসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যম খেলার পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ তুলে ধরতে স্ট্যাটস পারফর্মের তথ্য ব্যবহার করে৷
বিশ্বকাপ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কয়েকটি বেটিং কোম্পানির বাজির দর ও স্ট্যাটস পারফর্মের নিজস্ব টিম ব়্যাংকিংয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে কাতার বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা কার কতখানি, তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে৷ এছাড়া প্রতি ম্যাচের সম্ভাব্য ফলাফল বিবেচনা করে কে, কোন স্থান অর্জন করে নকআউট পর্যায়ে যেতে পারে এবং সেখানে কে, কার বিরুদ্ধে খেলতে পারে সেই সব বিবেচনা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে৷
ভবিষ্যদ্বাণী বলছে জিতবে ব্রাজিল
পাঁচবারের (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ ও ২০০২) বিশ্ব সেরা ব্রাজিল এবার ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছে বলে স্ট্যাটস পারফর্মের ভবিষ্যদ্বাণী বলছে৷ ফিফা ব়্যাংকিংয়েও এক নম্বরে আছে নেইমাররা৷ স্ট্যাটস পারফর্ম বলছে, সেলেসাওদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা ১৫.৮ শতাংশ৷
এরপরেই আছে আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনার সমর্থক ছাড়াও এবার আরও অনেকে ফুটবলের বিস্ময় মেসির হাতে শিরোপা দেখতে চাইছেন৷ ভবিষ্যদ্বাণী বলছে তাদের সেই সম্ভাবনা ১২.৬ শতাংশ, সে হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনার তালিকায় ব্রাজিলের পরেই আছে দুবারের (১৯৭৮ ও ১৯৮৬) জয়ী আর্জেন্টিনা৷ ফিফা ব়্যাংকিংয়ে দলটি আছে তিন নম্বরে৷ এছাড়া টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত আছে আলবিসেলেস্তেরা৷
তিনে ফ্রান্স
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সে এবারও তারকার অভাব নেই৷ এমবাপ্পে ছাড়াও আছেন সদ্য ব্যালন ডি আর জয়ী বেনজেমা৷ লিওনেল মেসিও ফ্রান্সকে বিশ্বকাপের ফেভারিট বলেছেন৷ তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশ্লেষণ জানাচ্ছে, ফিফা ব়্যাংকিংয়ে চার নম্বরে থাকা ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা ১২.২ শতাংশ৷ ১৯৯৮ সালেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স৷
স্পেন চারে
২০১০ সালে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন৷ স্ট্যাটস পারফর্ম বলছে, এবার তাদের সেরা হওয়ার সম্ভাবনা ৯.১ শতাংশ৷ কারণ কোচ লুইস এনরিকে ও অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটসের দলে আছে গাভি, তোরেস, মোরাতা, কারভাহালের মতো ফুটবলার৷
পাঁচে ইংল্যান্ড
১৯৬৬ সালের পর থেকে ‘ফুটবলের ঘরে ফেরার’ অপেক্ষায় আছেন ইংলিশ সমর্থকরা৷ গত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল থ্রি লায়নসরা৷ এবার দলে আছেন হ্যারি কেন, রহিম স্টারলিং, ফিল ফোডেনের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বড় দলে খেলা সব ফুটবলার৷ তাই আবারও আশায় বুক বাঁধছেন সমর্থকরা৷
জার্মানি ছয়ে
ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবার (১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০ ও ২০১৪) বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জার্মানি৷ তবে এবার ফেভারিটের তালিকায় নেই হানসি ফ্লিকের দল৷ গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড পেরোতে পারেনি জার্মানি৷ ইউরো ২০২০-এ শেষ ষোলোতে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল ‘ডি মানশাফট’৷ ফিফা ব়্যাংকিংয়েও দশের মধ্যে নেই জার্মানি৷
সাতে নেদারল্যান্ডস
১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ২০১০ সালে ফাইনালে উঠেছিল নেদারল্যান্ডস৷ তবে একবারও কাপ হাতে নিতে পারেনি৷ এবার কি সেই স্বপ্ন পূরণ হবে লুই ফান খালের দলের?
পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক
স্ট্যাটস পারফর্মের ভবিষ্যদ্বাণীর তালিকায় আট, নয় ও দশ নম্বরে আছে পর্তুগাল, বেলজিয়াম ও ডেনমার্ক৷ তারা একবারও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি৷ রাশিয়া বিশ্বকাপে ‘গোল্ডেন জেনারেশন’ নিয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠতে পেরেছিল বেলজিয়াম৷ তবে তাদের সামর্থ্য ক্রমশ কমে যাওয়ায় ফিফা ব়্যাংকিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন এবারও অধরা থেকে যেতে পারে ক্যাভিন ডি ব্রোইনেদের৷