বিদেশি কর্মীদের রাজস্ব ফাঁকির প্রতিবেদন
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীরা ব্যাপক হারে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন৷ বিস্তারিত ছবিঘরে....
প্রতিবেদন কী বলছে?
টিআইবি বা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে কীভাবে বৈধভাবে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীরা বেতন কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে৷ এই প্রতিবেদনটি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাক্ষাৎকার এবং আইনি নথি-নীতিমালা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য, গবেষণা প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি৷
কারা এই কর্মীরা?
বুধবারে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, প্রায় ৪৪টির বেশি দেশ থেকে আগত কর্মীরা বিভিন্ন খাতে কর্মরত৷ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য উৎস দেশগুলি হচ্ছে ভারত, চীন, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, নরওয়ে ও নাইজেরিয়া৷
কোন কোন খাতে কর্মরত এই বিদেশিরা?
তৈরি পোশাক বা গার্মেন্টস ছাড়াও এই কর্মীরা কাজ করেন বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক এনজিও, মোবাইল কোম্পানি, তথ্যপ্রযুক্তি, চিকিৎসা পরিষেবা, ফ্যাশন ডিজাইনিং ও বিজ্ঞাপন সংস্থার মতো একাধিক খাতে৷
কীভাবে কাজে ঢুকছেন তারা?
সরকারস্বীকৃত বিদেশি কর্মী নিয়োগের নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে কাজে নিয়োগ করা হয় বহু বিদেশিদের৷ টুরিস্ট ভিসা বা ভিসা অন অ্যারাইভালের মাধ্যমে আসা এই বিদেশিরা কর্মানুমতি ছাড়াই কাজে যোগ দেন৷ প্রতিবেদনটি বলছে, নিয়মবহির্ভূত আর্থিক লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়৷ পাশাপাশি, স্থানীয় যোগ্য প্রার্থী না খুঁজে পূর্বনির্ধারিতভাবেই বিদেশি কর্মীকে নিযুক্ত করা হয়৷
রাজস্ব এড়াচ্ছেন কীভাবে?
বৈধভাবে কর্মরত কর্মীর বেতন প্রাতিষ্ঠানিক নথিপত্রে প্রকৃত বেতনের চেয়ে কম দেখানো হয়৷ বেতনের কিছু অংশ ব্যাংকে বৈধভাবে ও বাকি অংশ অবৈধভাবে নগদে পরিশোধ করা হয়৷ অনেক ক্ষেত্রে, অবৈধভাবে কর্মীর শতভাগ বেতন বিদেশের কোনো ব্যাংখ অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়৷ এভাবে, আয়ের ওপর রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া চলতে থাকে৷
কতটা ফাঁকি?
কোনো প্রতিষ্ঠানের সিইও পদে কর্মরত কোনো বিদেশি কর্মীর প্রকৃত বেতন ১০-১২ হাজার মার্কিন ডলার হলে তা কাগজে-কলমে দেখানো হয় ৩ হাজার বা ৩ হাজার ৬০০ ডলার৷ ২০১৮-১৯ সালে প্রদত্ত আয়ের মোট ৩০ শতাংশ রয়ে যায় অপ্রদর্শিত৷
কীভাবে ঠেকানো যাবে এই কারচুপি?
টিআইবির এই প্রতিবেদনে নয়টি সুপারিশের কথা বলা হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ভিসাপ্রদানের ক্ষেত্রে আরো কড়া বিধিনিষেধ প্রয়োগ করার কথা৷ এছাড়া, স্থানীয় কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীর দিকে মনোনিবেশ করার কথাও রয়েছে সেখানে৷