‘বিদায় দিবসে' মুবারকের বিদায়ের ডাক
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১দিনটাকে বলা হচ্ছে ‘ডে অফ ডিপার্চার' বা বিদায়ের দিন৷ অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের বিদায়ের দিন৷ এমন এক প্রতীকি নাম দিয়ে প্রায় লক্ষ লক্ষ বিক্ষোভকারী বর্তমান শাসনকেন্দ্রের উপর মোক্ষম আঘাত দিতে চাইছে৷ টানা ১১ দিন ধরে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের পর তাদের ধৈর্য ভেঙে পড়ার মুখে৷ জুম্মার নামাজের পর উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে৷ শুধু কায়রোর তাহরির স্ক্যোয়ার নয় – দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বিক্ষোভ৷ মার্কিন প্রশাসনের চাপ বাড়ার ফলেও মুবারকের প্রস্থান আসন্ন – এমনটাই আশা করছে বিক্ষোভকারীরা৷ মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি'র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মুবারক অবশ্য বলেছেন, তিনি ‘দেশের স্বার্থে' এখনই ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন না৷ কারণ সেক্ষেত্রে অরাজকতা দেখা দিতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা৷
হিংসা বন্ধে পদক্ষেপ
আজ পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত৷ মুবারকের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে সেনাবাহিনী তাহরির স্ক্যোয়ারের আশেপাশে কাঁটাতারের বেড়া বসিয়েছে৷ দেহ তল্লাশির পর ছোট এক প্রবেশপথ দিয়ে বিক্ষোভকারীরা সেখানে যেতে পারছে৷ আকাশে হেলিকপ্টার, রাস্তায় ট্যাঙ্ক, চারিদিকে অ্যাম্বুলেন্স গাড়ি – সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত সেনাবাহিনী৷ মুবারকের সমর্থকদের অবশ্য কোথাও দেখা যাচ্ছে না৷
সরকারের মরিয়া প্রচেষ্টা
এদিকে সাধারণ মানুষের সমর্থন পেতে মরিয়া মুবারক প্রশাসন এক ক্ষতিপূরণ তহবিলের ঘোষণা করেছে৷ রাজনৈতিক বিক্ষোভের ফলে দেশে যেসব বিষয় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, প্রায় ৮৫ কোটি ডলার মূল্যের এই তহবিল তা পুনর্গঠনে সাহায্য করবে, বলেছেন অর্থমন্ত্রী সামির রাদওয়ান৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
প্রথমে টিউনিশিয়া, তারপর মিশরের এই বিক্ষোভের ফলে গোটা আরব বিশ্বের বাকি নেতাদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ইরান শুক্রবার এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়েছে৷ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই এই বিক্ষোভকে ‘ইসলামি মুক্তিযুদ্ধ' হিসেবে বর্ণনা করে ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ বার্লিনে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন মিশরে শান্তিপূ্র্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, জাতিসংঘ বহু বছর ধরে আরব বিশ্বে গণতন্ত্রের অভাবের বিষয়ে সাবধানবাণী শুনিয়ে আসছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক