1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
প্যানোরামাজার্মানি

বিচ্ছিন্ন শিশুদের মন ভালো করছে খামারের পশু

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুদের মানসিক অবস্থা সামাল দেওয়া সহজ নয়৷ জার্মানির একটি খামারে পশুদের সান্নিধ্যে এসে এমন শিশুরা উষ্ণতা ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ পাচ্ছে৷ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করছে তারা৷

https://p.dw.com/p/4l546
পশু নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এক ব্যক্তি
পশুর সান্নিধ্য শিশুর মনে প্রশান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিতে পারে।ছবি: SWR

বিশেষ এই খামার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুদের সাহায্য করার লক্ষ্যে ডিজাইন করা হয়েছে৷ সেখানকার পশুপাখি শিশুদের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা ও অনুভূতি জাগিয়ে তোলে৷ রেমেনহোফ খামারের বির্গিট ম্যোলার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘পশুদের মাঝে থাকলে অবশ্যই শিশুরা তাদের প্রয়োজনীয় উষ্ণতা পায়৷ পশুগুলি উষ্ণতা, নৈকট্য ফিরিয়ে দেয়৷ পরিবার থেকে সরিয়ে নেওয়ার কারণে শিশুদের মনে মানুষের উপর আস্থা কমে যায়৷ তাদের মনে কিছুটা ক্রোধও জন্মায়৷''

এমন এক সকালে শিশুদের দেখে বোঝার উপায় নেই, যে তাদের কতটা খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ ম্যোলার জানালেন, ‘‘এখানে পশুদের মাঝে থাকলে তাদের মন শান্ত হয়৷ তারা নিজের অনুভূতি দেখাতে পারে৷ আমরা এক পা পিছিয়ে এসে তাদের পশুদের সঙ্গে একা থাকতে দেই৷''

কিম ছয় বছর ধরে রেমেনহোফে রয়েছে৷ এখন তার বয়স ১৯৷ এই সময়কালে সে অনেক সাফল্য পেয়েছে৷ এখন সে কমবয়সিদের সাহায্য করে এবং ঘোড়ার সঙ্গে অনেক সময় কাটায়৷ কিমের জীবনের সূচনা মোটেই সহজ ছিল না৷ কিন্তু গত এক বছর ধরে সে এক সুপারমার্কেটে সেলস অ্যাসিস্টেন্টের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ সে আরো দূর এগোতে চায়৷ কিম বলেন, ‘‘আসলে ট্রাম ড্রাইভার আমার স্বপ্নের চাকুরি৷ এই ব্রাউনশোয়াইগ শহরেই সেটা করতে চাই৷ সেটাই আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা৷ কোনো এক দিন তা পূরণ করতে চাই৷''

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুদের মানসিক পরিচর্যায় খামারের পশু

বর্তমানে ১৭০ জন শিশু-কিশোর রেমেনহোফে আশ্রয় পেয়েছে৷ বির্গিট ম্যোলার বলছেন, চাহিদা বেড়ে চলেছে৷ অনেক পরিবার চাপের মুখে রয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের খবর, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, বেড়ে চলা বাসার ভাড়া ও যুদ্ধ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভয়ভীতি বাড়িয়ে তুলছে৷ তাঁর মতে, অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়া বাবা-মায়েদের অবিলম্বে সাহায্যের প্রয়োজন, কারণ তাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷ বির্গিট মনে করেন, ‘‘প্রথমেই দেখতে হবে, শিশুর কী প্রয়োজন, তার কাছে কী আছে? তাকে হয়তো ব্যস্ত রাখা প্রয়োজন৷ বলা যায়, দেখো আমরা ভেড়ার আস্তাবল পরিষ্কার করছি৷ পরে শিশু বা কিশোরটির খুব প্রশংসা করা হলো৷ সেটা তাদের শক্তি দেয়৷ দৈনন্দিন জীবন ও ভবিষ্যৎ সামাল দিতে শিশুদের শক্তির প্রয়োজন৷ অর্থাৎ তাদের অবশ্যই আত্মসচেতনতা ও শক্তির প্রয়োজন৷''

প্রতিদিন তারা পশুদের সঙ্গে মিলে সেই লক্ষ্যে কাজ করে৷ পাউল ও মিয়া নামের দুই ল্যাব্রাডর কুকুরও টিমের অংশ৷ ২০১৮ সাল থেকেই পশুরা থেরাপির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে৷ কারণ পশুরা কতটা উপকার বয়ে আনে, তারা সেটা দেখেছে৷ সেই দলে বড় আকারের খরগোশ যোগ করারও পরিকল্পনা রয়েছে৷ ফ্যামিলি থেরাপিস্ট হিসেবে সারা শুমান বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে বদ্ধমূল ধারণা থেকে মুক্তির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়৷ পশুরা হয়তো ভ্রুকুটি দেখায় না বা মাথায় বদ্ধমূল ধারণা নিয়ে ঘোরে না৷ পশুরা প্রত্যেক মানুষকে তার মতোই দেখে৷ সে কেমন, তার গন্ধ কী, দেখতে কী রকম, মনমেজাজই বা কীরকম, তাতে কিছু এসে যায় না৷ পশুদের মনে কোনো জটিলতা নেই৷''

শিশুরা আদৌ বা কবে নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবার অনুমতি পাবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ তখনো পর্যন্ত তারা যাতে এখানে যতটা সম্ভব নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা জরুরি৷ তাদের চারিপাশে প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা ও উষ্ণতা থাকতে হবে৷

সাবিনে হাউসহেয়ার/এসবি