1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিএনপি অফিসে তালা, ঢুকতে না পেরে ফিরে গেলেন মির্জা ফখরুল

৮ ডিসেম্বর ২০২২

ঢাকার বিএনপির সমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে প্রাণহানি ও ব্যাপক ধর-পাকড়ের পর দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

https://p.dw.com/p/4Kdtl
বিএনপি সদর দপ্তরের সামনে পুলিশি নিরাপত্তা
বিএনপি সদর দপ্তরের সামনে পুলিশি নিরাপত্তাছবি: Mortuza Rashed/DW

নাইটিঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড়ে বসানো রয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড। সকাল থেকে যানবাহন চলাও বন্ধ ছিল। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগের রাতের মতোই ঝুলছে তালা। সামনে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশ সদস্যরা। কাছাকাছি জায়গায় রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান ও প্রিজন ভ্যান। 

বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনের দৃশ্য
বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনের দৃশ্যছবি: Mortuza Rashed/DW

অফিস ও অন্যান্য প্রয়োজনে যারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় যাচ্ছেন, তাদের পরিচয়পত্র দেখে পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছে।

বিএনপি কার্যালয়ের বন্ধ কোলাপসিবল গেইটের ভেতরে থাকা দুজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, তারা তাদের ‘ডিউটি' পালন করছেন। অফিসের ভেতরে কেউ নেই। 

পুলিশের বাধার কারণে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েযেতে পারেননি মির্জা ফখরুল। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকেই ফিরে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাকেও যেতে দেওয়া হয়নি।

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি আছে। এই গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বিতর্ক ও আলোচনার মধ্যেই গতকাল বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামের একজন নিহত হন। আহত হন বিএনপির অর্ধশত নেতা-কর্মী। 

বুধবার বিএনপি কর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের দৃশ্য
বুধবার বিএনপি কর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ করেছবি: Jibon Ahmed/AFP/Getty Images

সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়াসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে ১৫টি ককটেল উদ্ধার করে তা নিষ্ক্রিয় করার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো পুলিশ ও সরকারের ষড়যন্ত্র। 

পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল বুধবারের অভিযানে বিএনপির কার্যালয় থেকে বিপুল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে আমরা কাউকে কার্যালয়ে ঢুকতে দিচ্ছি না। 

পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার
পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারছবি: Mortuza Rashed/DW

রাজধানীর প্রবেশমুখে তল্লাশি

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী এলাকায় আজ সকাল থেকেই পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশের তিনটি চেকপোস্ট দেখা গেছে। 

যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকেই আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি৷ তবে এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কাউকে আমরা পাইনি৷ আর অপ্রীতিকর কোনোকিছু ঘটেনি।'

টঙ্গী এলাকায় পুলিশের চেক পোস্ট দেখা গেলেও গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা যায়নি। তবে দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের সংখ্যাও কম দেখা গেছে।

রাজধানীর মিরপুর-গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী তানজিল পরিবহনের সুপারভাইজার ডেইলি স্টারকে বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ রাজধানীতে বাসের সংখ্যা কম। 

নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতা রবির বাসায় তল্লাশি, ছেলে আটক

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ছোট ছেলে রোবায়েত ইশফাক প্রিয়তমকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিএনপি কর্মীদের মিছিল করতে দেখা যায়
বৃহস্পতিবারও বিএনপি কর্মীরা মিছিল করেনছবি: Mortuza Rashed/DW

বুধবার রাত একটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় রবির বাড়িতে অভিযানে যায় গোয়েন্দা ও থানা পুলিশ। এ সময় তার ছেলে প্রিয়তমকে আটক করা হয় বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান জানান।

তার বাবা মনিরুল ইসলাম রবি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "শতাধিক পুলিশ সদস্যের দলটি আমার বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে সবকিছু তছনছ করে ফেলেছে৷ বাড়িতে আমি ছিলাম না; স্ত্রী ও ছোট ছেলে ছিল। আমাকে খুঁজে না পেয়ে ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে৷”

এই বিএনপি নেতা দাবি করেন, গত এক মাসে জেলার বিভিন্ন থানায় যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোতে তিনি আসামি নন। আগের মামলাগুলোতেও তিনি জামিনে রয়েছেন। তিনি বলেন, তার দুই ছেলের কেউ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না৷ তাদের নামে কোনো থানায় কোনো মামলাও নেই৷ 

এদিকে সকাল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ৷ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল ঢাকামুখী যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে; যাত্রীদেরও জেরা করা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। 

মিরসরাইয়ে ছাত্রদল নেতাকে ‘পিটিয়ে' পুলিশে দিল ছাত্রলীগ 

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আসিফ নুর খান নামের এক ছাত্রদল নেতাকে পিটিয়ে ছাত্রলীগ পুলিশে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদর বাস কাউন্টার এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আসিফ উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মকসুদ আহাম্মদের ছেলে। তিনি মঘাদিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। 

আসিফ নুর খানের মা রাহেনূর বেগম প্রথম আলোকে বলেন, আসিফ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে আসিফ ঢাকায় যাওয়ার জন্য উপজেলা সদরের বাস কাউন্টারে গেলে সেখানে ছাত্রলীগের ছেলেরা তাকে মারধর করেন। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছেলে ছাত্রদলের রাজনীতি করলেও কোনো নাশকতার সঙ্গে যুক্ত নন বলে মায়ের দাবি। 

একেএ/ (প্রথম আলো/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/দি ডেইলি স্টার)