1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাস রুট রেশনালাইজেশনে কত দিন লাগবে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ ডিসেম্বর ২০২১

ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বাস রুট রেশনালাইজেশন শুরু হয়েছে৷ এর লক্ষ্য হলো ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে যাত্রী হয়রানি কমানো৷ একইসঙ্গে বাসের মান ও সেবা উন্নত করা৷

https://p.dw.com/p/44sB8
Bangladesch | Neuer Bus-Service in Dhaka
ছবি: Mortuza Rashed/DW

প্রাথমিকভাবে রোববার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোারেশন দুইটি কোম্পানির ৫০টি বাস নিয়ে রাজধানীর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে এই সার্ভিস শুরু করেছে৷ আগামী দুই বছরের মধ্যে ঢাকা ও আশপাশের এলকার সব রুট রেশনালাইলেজশন করার পরিকল্পনা আছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ঢাকা পরিবহন সম্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার৷
রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য পরিবহন বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড. এস এম সালেহ উদ্দিন জানান, ‘‘রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বাসের রুট মোট ৪২টিতে নামিয়ে আনা হবে৷ বাসগুলো ওই ৪২টি রুটের সরকারনিয়ন্ত্রিত ২২টি কোম্পানির অধীনে থাকবে৷ অপ্রয়োজনীয় বাস রুট বন্ধ করে দেয়া হবে৷ এখন শত শত রুট রয়েছে যার কোনো প্রয়োজন নাই৷ যেমন গাজীপুর থেকে ঢাকায় ৪০-৫০টি রুট আছে৷ একেকটি কোম্পানি তাদের সুবিধা অনুযায়ী রুট তৈরি করে নিয়েছে৷ ফলে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ যাত্রীরা বেশি ভাড়া গুনতে বাধ্য হচ্ছেন৷''
এই রুট রেশনালাইজেশন হলে ২০১৯ এবং এর পরে ২০২১ সালের মডেলের বাস চালাতে হবে৷ ভাড়া নেয়া হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে৷ আর ঢাকাকে মোট ছয়টি অঞ্চলে( ক্লাস্টার) ভাগ করা হয়েছে৷ পরিবহন মালিকেরা রুটে বাস দিয়ে সরাসরি ভাড়া পাবেন না৷ তারা মাস শেষে ঢাকা পরিবহন সমম্বয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে ভাড়া নেবেন৷ চালক ও বাসের স্টাফেরা হবেন নিয়োগপ্রাপ্ত৷ ট্রিপ ভিত্তিক ও চুক্তিভিত্তিক কোনো বাস চলবে না৷ আর ঢাকা থেকে মিনিবাস উঠে যাবে৷
অবশ্য ২০০৪ সাল থেকে এই রেশনালাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ রোববার পরীক্ষামূলকভাবে একটি রুটে এই সার্ভিস চালু করা গেল৷ ১০০ বাস দিয়ে শুরু করার কথা থাকলেও ৫০টি বাস দিয়ে শুরু করা হয়েছে৷ তারমধ্যে ৩০টি বিআরটিসির বাস৷ আর নতুন বাস দিয়ে শুরু করার কথা থাকলেও পুরনো রঙ করা বাস দিয়েই শুরু করা হয়েছে৷ বাসের শতভাগ ফিটনেস থাকার কথা থাকলেও সেটা মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা এই পরীক্ষামূলক রুট দিয়ে ত্রুটি বিচ্যুতি বোঝার চেষ্টা করব৷ তারপর পুরো কাজ শুরু করব৷ এতদিনে আমরা আমাদের পুরো পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছি৷ এখন বাস্তবায়ন করার পালা৷ যাতে পরিবহন মালিকেরা নতুন বাস নামাতে পারেন সেজন্য আমরা শতকরা পাঁচ ভাগ সূদে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করেছি৷''
ঢাকা শহর এবং আশপাশ এলাকায় এখন মোট সাড়ে পাঁচ হাজারের মত বাস মিনিবাস চলাচল করে৷ আর বাস কোম্পানি আছে ২৭৫টির মত৷ তারা তাদের খেয়াল খুশি মত বাস চালান৷ কোনো নিয়মনীতি মানতে চান না৷ রেশনালাইজেশন হলে পরিবহন মালিক ও কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমত কিছু করতে পারবে না বলে জানান ঢাকা পরিবহণ সম্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার৷ ভাড়াও কমে যাবে কারণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে কিলোমিটার হিসাব করে ভাড়া রাখা হবে৷ আর বাস ছাড়ার সময় নির্ধারিত থাকবে৷ অতিরিক্ত যাত্রী তোলা যাবে না৷ টিকেট ছাড়া যাত্রী থাকবে না৷
এরজন্য ঢাকায় বাস টার্মিনাল, বাস স্টপেজ এগুলোও তৈরি হচ্ছে বলে জানান,অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিকল্পনা আছে অধিকাংশ বাস ঢাকা শহরের বাইরে রাখার ব্যবস্থা করার৷''
এদিকে এই বাস রুট রেশনালাইজেশনে বাস মালিকেরা বিরোধিতা করছেন বলে অভিযোগ আছে৷ তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্যাহ বলেন, ‘‘এই অভিযোগ সঠিক নয়৷ আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই৷ তবে এটা ভালো না খারাপ হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷ একটি রুট শুরু হয়েছে দেখি কী হয়৷''
তার কথা," নতুন বাস আমরা কোথায় পাব৷ আমাদের বাস নিলে পুরনো বাসই নিতে হবে৷ তারা তো একটি রুট পুরানো বাস দিয়েই শুরু করেছে আর সরকার ঋণ দিলে যার পোষাবে সে নতুন বাস কিনবে৷”
ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুট রেশনালাইজেন আরো আগে শুরু হওয়ার কথা ছিলো৷ কিন্তু তখন মালিকেরা যে বাস দিয়েছিলেন তার অধিকাংশেরই ফিটনেস ছিল না৷ চালকদের বৈধ লাইসেন্স ছিল না৷ তাই তখন চালু করা যায়নি৷ এবার ৫০টি বাস দিয়ে চালু হলেও তা বাড়িয়ে ১০০ করা হবে৷
ঢাকা শহরকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করে বাসগুলো যখন চালু হবে তখন বাসগুলোর ছয় ধরনের রঙের হবে৷ এখন যে বাসগুলো চালু হয়েছে তার রঙ সবুজ৷ এই রুটে অন্য বাস সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷

নীলিমা আখতার

অধ্যাপক ড. এস এম সালেহ উদ্দিন